ঢাকা শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

উদ্বোধনের ১ বছর তবুও সচল হয়নি কুবি'র শিক্ষক ডরমেটরি


কুবি প্রতিনিধি photo কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩-১-২০২৪ বিকাল ৫:৫৩

নানা সংকট-শঙ্কায় উদ্বোধনের ১ বছর পরও চালু হয়নি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক ডরমিটরি। পুরাতন ডরমিটরিতেই কর্মকর্তাদের সাথে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। 

২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডরমিটরি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। পরবর্তীতে একই বছরের আগস্ট মাসে নতুন এই ডরমিটরিতে শিক্ষকদের সীট বরাদ্দ বাবদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে এখনও পর্যন্ত সীটের জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র ১০ টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তর হতে জানা যায়, নতুন এই ডরমিটরির সীট সংখ্যা ৩৯ টি, যা শিক্ষকদের আবেদন প্রেক্ষিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। 

খোজ নিয়ে আরও জানা যায়, পুরাতন ডরমিটরিতে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক অবস্থান করছেন যাদের সাথে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও। শিক্ষকদের জন্য নতুন ডরমিটরি তৈরী ও উদ্বোধনের ১ বছর পরও কেন তারা কর্মকর্তাদের সাথে একই ডরমিটরিতে অবস্থান করছেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে নানা কারণ। শিক্ষকদের কেউ কেউ বলেছেন ব্যক্তিগতভাবে রান্নার সুযোগ না থাকা, ভাড়া বেশি হওয়া, সাপের উপদ্রব বেশি হওয়ার শঙ্কা, দূরত্ব বেশিসহ নানা সমস্যা থাকায় নতুন ডরমিটরিতে উঠতে তারা অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। 
অন্যদিকে কেউ কেউ জানিয়েছেন নিজেদের কর্মব্যস্ততার কারণে নতুন ডরমিটরিতে উঠতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডরমিটরিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক পার্থ চক্রবর্তী বলেন, " আমার খুব ইমার্জেন্সিতে ডরমিটরিতে উঠার প্রয়োজন ছিল এবং সে কারণেই দ্রুত আবাসনের জন্য আবেদন করে বরাদ্দও পেয়েছি তবে অন্যান্য শিক্ষক যারা বরাদ্দ পেয়েছেন তাদের সাথে কথা বলার পর তারা জানিয়েছেন আপাতত উঠবেন না। আমি একা এত বড় জায়গায় থাকা নিরাপদ বলে মনে করছি না এছাড়াও শুনেছি সাপের চলাচল থাকতে পারে যার জন্য এখনও পর্যন্ত উঠি নি আমি।" 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরাদ্দ প্রাপ্ত গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। জানা যায়, ২০১৭ সালের মে মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া ডরমিটরিটি ২০১৮ সালের নভেম্বরে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজের সময়সীমা কয়েকদফা বাড়িয়ে ৫ পাঁচ বছর পর তা সম্পন্ন হয়। যা চলতি বছরের  জানুয়ারি মাসে উদ্বোধন করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোন শিক্ষক সেখানে উঠেননি। এসব বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নে উঠে আসে নতুন ডরমিটরির নানা সংকটের কথা।  শিক্ষকদের কারও কারও ভাষ্য অনুযায়ী, নানা প্রতিকূলতা ও অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তারা সেখানে উঠছেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে শিক্ষকদের জন্য নতুন একটি ডরমিটরি নির্মাণ করা হয়। তবে উদ্বোধনের ১ বছর হলেও কোন শিক্ষকই উঠেননি ডরমিটরিতে। শিক্ষকদের ভাষ্য, বেশকিছু সমস্যা ও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে সেখানে উঠতে তারা অপারগতা প্রকাশ করছেন। এদিকে নানা অপ্রতুলতা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ২টি ডরমিটরিতে কর্মকর্তাদের সাথে ভাগাভাগি করে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

আরও জানা যায়, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ২৬৫ জন। যার মধ্যে মাত্র ২৮ জন শিক্ষক পাচ্ছেন আবাসন সুবিধা। যা মোট শিক্ষকদের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট কর্মকর্তাদের মধ্যে ডরমিটরিতে থাকছেন ১০ জন। পাঁচ তলা বিশিষ্ট দুটি ডরমেটরিতে নানা অপ্রতুলতা নিয়ে বসবাস করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। পুরাতন ডরমিটরিগুলো ঘুরে দেখা যায়, ভবন দুটির বহিরাংশের রং বিবর্ণরূপ ধারণ করেছে  অনেক আগে থেকেই। অনেক স্থানে রং খসে পড়ে গেছে। ভবনের ভিতর এবং বাইরের অংশ অপরিচ্ছন্ন। এছাড়াও অধিকাংশ কক্ষের বৈদ্যুতিক পয়েন্টগুলো ত্রুটিপূর্ণ। অন্যদিকে ডরমিটরিগুলো পাহাড়ের উপর হওয়ায় সাপের উপদ্রবসহ নানা কীটপতঙ্গের উৎপাতে ভীত থাকেন শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। 

২০২৩ সালের ০২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবনির্মিত ডরমিটরি শিক্ষক, পুরাতন ডরমিটরি ভবন-২ কর্মকর্তা এবং পুরাতন ডরমিটরি ভবন-১ কর্মচারীদের আবাসন বরাদ্দের জন্য বন্টন করা হয়েছে। পাশাপাশি পূর্বে বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদেরকেও পুনরায় আবেদন করতে বলা হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, 'পুরাতন ডরমিটরিতে অবস্থানরত অধিকাংশ শিক্ষকই বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে জড়িত। নতুন ডরমিটরিটি আউটসাইডে হওয়ার কারণে শিক্ষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। এছাড়াও অনেক শিক্ষককে রান্না করে খেতে হয়। কিন্তু নতুন ডর্মে ব্যক্তিগতভাবে  রান্না করার সুযোগ না থাকার কারণে শিক্ষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে। একইরকম পাহাড়ি পদতলে নির্মিত হওয়ায় কারনে সেখানেও সাপের উপদ্রব রয়েছে। তাই সমস্যা বিবেচনায় আমরা সেখানে যেতে চাই না। যেখানে আছি সেখানেই থাকতে চাই। এরপরেও যদি সেখানে থাকতে বলা হয় তাহলে বাইরে থাকবো।'

এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এস্টেট শাখার পরিচালক ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে বড় একটি অংশই যে নতুন ডরমিটরিতে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিষয়টি এমন নয়। কয়েকজন শিক্ষকই বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে জানিয়েছেন, এছাড়াও ইতোমধ্যে কিছু শিক্ষক জানুয়ারি মাসে ডরমিটরিতে উঠবেন বলে জানিয়েছেন। তবুও যেসকল সংকটের বিষয়ে শিক্ষকরা জানিয়েছেন আমরা মাননীয় উপাচার্যকে সেসকল বিষয়ে অবগত করেছি তিনি আস্বস্ত করেছেন শিক্ষকদের যদি ডরমিটরিতে থাকতে কোনরকম সমস্যা উদগ্রীব হয় তা সমাধান করবেন। এরপরও কিছু সংকট হয়তো থেকেই যাবে যেহেতু আমাদের সীমিত রিসোর্স নিয়ে কাজ করতে হয়। সর্বোপরি, আমাদের সকলেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিষয়ে পজিটিভ থাকা উচিত, কিছুটা কম্প্রোমাইজ পজিটিভ চিন্তা থাকলে এরকম ছোট সমস্যা গুলোও সমাধান করা সম্ভব। "

এ বিষয়ে  উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, " শিক্ষক ডরমিটরি গুলো মূলত ব্যাচেলর শিক্ষকদের থাকার সুবিধার্থে তৈরী করা হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষক ডরমিটরিও সে অনুযায়ী তৈরী করা হয়েছে। শিক্ষকরা যেসকল সংকট উল্লেখ করে সেখানে যেতে অনিচ্ছা পোষণ করছেন তারা সেখানে শীফট করে যদি কোনপ্রকার সমস্যা বা প্রয়োজন অনুধাবন করেন তাহলে সে অনুযায়ী আবেদন করলে সেগুলোর সমাধান প্রশাসন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।"

এমএসএম / এমএসএম

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় বাকৃবির ১২ গবেষক

বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকদের তালিকায় ইবির দুই অধ্যাপক