ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

আজিজুল কাণ্ডে লণ্ডভণ্ড প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর


শহিদুল ইসলাম photo শহিদুল ইসলাম
প্রকাশিত: ৩-৭-২০২৪ রাত ১০:৫৮

রাজধানীর খামারবাড়ি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি দুর্নীতির দায় অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি ব্যবস্থা নিলে সাবেক মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১২ অক্টোবর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো.এমদাদুল হক তালুকদারকে তার রুমে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে মো. আজিজুল ইসলাম। ঘটনার দিনই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাহিদ রশীদকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। পরে ডা. মো. আজিজুল ইসলামকে ২ বছরের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর মন্ত্রী পরিবর্তন হলে পাল্টে যায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিত্র। পরিবর্তন  আসে মহাপরিচালক ও বিভিন্ন পরিচালক পদে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী আসার পর, অধিদপ্তরের পরিচালক (বাজেট) ও পরিচালক (প্রশাসনে) পদায়িত হন ডা. বরুণ কুমার দত্ত এবং মলয় কুমার শুর। ডা. বরুণ কুমারের বাড়ী মন্ত্রীর এলাকায় হওয়া অধিদপ্তরে আলাদা প্রভাব বিস্তার করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডা. মো. আজিজুল ইসলামের বরখাস্ত তুলে নিতে পরিচালক ডা. বরুণ কুমার দত্তের মাধ্যমে মন্ত্রীর কাছে তদবীর শুরু করলে গত ১৬ মে তাকে মুল বেতন অবনমতিকরণ সূচক লঘুদণ্ড প্রদান করে রিজার্ভ পদে রাখা হয়। 
পরে তাকে গত ১৩ জুন মন্ত্রণালয়ে থেকে চীফ সায়েন্টিফিক অফিসার (চলতি দায়িত্ব) এন্ডোপ্যারাসাইটোলজি অনুবিভাগে বদলি করা হয়। এ বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশাসনকে কিছুই জানানো হয়নি। ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ডা. মো. আজিজুল ইসলামের বিষয় মন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে মর্মে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশাসন থেকে তাকে অবহিত করা হয়। যার ফলে মন্ত্রী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শুরকে তার বাসায় ডেকে পাঠান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন এ খবর ডা. মো.আজিজুল ইসলাম জানার পর তিনি মন্ত্রীর বাসায় ওৎ পেতে বসে থাকেন। রাত ৮টার সময় যখন মলয় কুমার শুর মন্ত্রীর পরীবাগস্থ দিগন্ত টাওয়ারের বাসা থেকে বের হয়ে লিফটে নীচ তলায় নেমে আসেন ঠিক তখনি ডা. মো. আজিজুল ইসলাম লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে রক্তাক্ত করে। পরে শাহবাগ থানায় হত্যার চেষ্টায় একটি মামলা দাখিল করা হয়। মামলা নম্বর-৩৩/২৫০। তারিখ ১৪/০৬/২০২৪। বিষয়টি মন্ত্রী জানার পর গত ১৯ জুন আবারও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে দুপুর ১টা ৩০মিনিটের সময় পরিচালক (বাজেট) ডা. বরুণ কুমার দত্তের অফিস চলাকালীন সময় তার উপর হামলার ঘটনা ঘটে। অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এটা মলয় কুমার শুরকে মারার জন্য বরুণ দত্তের উপর এই হামলা করা হয়েছে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, গত ২৭ জুন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের সময় কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাবিব মোল্লার নেতৃত্বে একদল বহিরাগত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্তের কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে দরজা লক করে দেন। এরপর কক্ষের ভেতরে প্রচন্ড চিল্লাচিল্লি ও হট্টগোলের আওয়াজ শোনা যায়। এ সময় মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। তবে পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শুর ও অন্যান্য কর্মকর্তারা পাশের কক্ষে অবস্থান করলেও পরিচালক বাজেটকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি। আবার অনেকে বলছেন, ঘটনার নেপথ্যে মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি নিয়ে মলয় কুমার শুর ও বরুণ দত্তের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে। তবে সূত্র বলছে ডা. বরুন কুমার দত্তের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।তিনি ২০১৭ সালে চাঁদপুরে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা থাকাকালিন সময় দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন।
এ বিষয় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাননীয় মন্ত্রীর বাসার ঘটনাটি আমি জানি এবং আজিজুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজিজুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করা হয়েছে। আর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্তের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি আমি সাংবাদিকদের কাজ থেকে শুনেছি। আমাকে অফিসিয়ালি জানালে ব্যবস্থা নেবো। ঘটনা সম্পর্কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মুহাম্মদ রেয়াজুল হকের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি, যা বলার তাড়াতাড়ি বলেন। তখন পরিচালক (বাজেট)-এর উপর সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যার উপর হামলা হয়েছে তিনি বিচার না চাইলে কীভাবে বিচার করা যায়? এ কথা বলেই তিনি সংযোগ কেটে দেন।
বরুণ দত্তের উপর হামলার ব্যাপারে  কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তার রুমে গিয়ে ছিলাম ঠিক কিন্তু হামলা করার জন্য নয় গিয়েছিলাম তার কিছু দুর্নীতির কাগজ দিতে তা দিয়েও এসেছি। তিনি প্রতিবেদকে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনিই বলেন,‘আমি কৃষক লীর্গে সভাপতি আমার কী নিজের হামলা করতে হয়। বরুণ কুমার দত্ত একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা অচিরেই তার দুর্নীতি প্রকাশ করা হবে।
ডা. বরুন কুমার দত্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ বিষয় আমার কোন বক্তব্য নেই। সংবাদ মাধ্যমে অনেক খবর প্রকাশিত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এর থেকে বেশি কিছু আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না।

এমএসএম / এমএসএম

১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে না ‘এনইআইআর’, নতুন ডেডলাইন ১ জানুয়ারি

আনিস আলমগীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার

সুষ্ঠু নির্বাচনের সংকল্পে ইসি: ৩০০ আসনে অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি গঠন

পুষ্পস্তবক অর্পণকালে স্মৃতিসৌধের ফুলের বাগানের ক্ষতি করা যাবে না

এখনো ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিক আনিস আলমগীর

বিজয় উৎসবে প্যারাজাম্পের কারণে ৪০ মিনিট বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল চলাচল

সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে এভারকেয়ার ছাড়লেন ওসমান হাদি

হাদির ঘটনা বিচ্ছিন্ন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়নি : সিইসি

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব

রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ

হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সন্দেহভাজন মাসুদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির উপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক আটক