প্রথম দিন স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষায় ৪০ লাখ শিশু

করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে আছে দেশের সকল শিক্ষা কার্যক্রম। এজন্য দেশে প্রায় ৪০ লাখ শিশু সশরীরে তাদের শিক্ষাগ্রহণ শুরু করতে পারছে না। বিশ্বে এই শিশুর সংখ্যা ১৪ কোটি। মঙ্গলবার ইউনিসেফ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউনিসেফ প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১৪ কোটি শিশুর ক্ষেত্রে স্কুলের প্রথম দিন, যা কিনা বিশ্বব্যাপী সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও তাদের বাবা-মায়েদের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত, কোভিড-১৯-এর কারণে বিলম্বিত হচ্ছে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৮০ লাখ এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে মহামারির পুরো সময়ে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে সশরীরে শিক্ষা গ্রহণের প্রথম দিনটির জন্য তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে এবং এই অপেক্ষা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ৪০ লাখ প্রথম-বারের শিক্ষার্থীও রয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে, যা কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম।
ইউনিসেফের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রথম শ্রেণিতে পড়া, লেখা ও গণিতের সঙ্গে শিশুদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এটি ভবিষ্যতের সব ধরনের শিক্ষার ভিত্তি গড়ে দেয়। একইসঙ্গে এটি এমন একটি সময় যখন সশরীরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণ শিশুদের স্বাধীন সত্তার বিকাশ, নতুন নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। সশরীরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষাগ্রহণ একইসঙ্গে কোনো শিশুর শিক্ষার ক্ষেত্রে ঘাটতি, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং নির্যাতনের বিষয়গুলো শনাক্ত ও সমাধান করতে শিক্ষকদের সহায়তা করে। স্কুলে যেতে না পারায় শিশুদের সামগ্রিক কল্যাণ নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী স্কুলগুলো গড়ে ৭৯ শিক্ষাদিবস পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তবে ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য স্কুলগুলো একটানা পুরো বছরই বন্ধ থাকে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিশুর শিক্ষা জীবনের বড় ক্ষতি হচ্ছে। তারা মানসিক চাপে পড়ছে। এ ছাড়া ঝরে পড়া, শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের ঝুঁকিও বাড়ছে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী দেশগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে ২৯ শতাংশের কাছে এই পদ্ধতি পৌঁছানো যাচ্ছে না। এ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানের জন্য সম্পদ বা উপকরণের ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশে মহামারির পুরোটা সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চতর শিক্ষার স্তর পর্যন্ত ৪ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেন, স্কুল এবং সশরীরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষাগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ থাকা শিশুদের কেবল পড়াশোনার ক্ষেত্রে নয়, একইসঙ্গে তাদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার ওপর অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব ফেলে। প্রান্তিক শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাদেরকে অধিকতর দারিদ্র্য এবং অসমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নিরাপদে স্কুল পুনরায় খুলে দেয়া এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনিয়োগ করাকে অগ্রাধিকার দেয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্কুলের ইতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলো শিশুদের ভবিষ্যতের সামাজিক, আবেগীয় ও শিক্ষাগত দিক গঠন করে। যেসব শিশু শুরুর বছরগুলোতে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে তারা প্রায় ক্ষেত্রেই স্কুলে কাটানো অবশিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়ে থাকে এবং বছরের পর বছর এই ব্যবধান বাড়তে থাকে। আবার শিশুর প্রাপ্ত শিক্ষা বছরের সংখ্যা তার ভবিষ্যতের আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, সমাধানমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা না হলে এই পুরো প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আয়ের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তা প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। তাই বিশ্বের দেশগুলোর কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। বিশ্বব্যাংক ও ইউনেস্কোর সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ স্কুলগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথা উল্লেখ করেছে। এরমধ্যে প্রথমেই আছে, শিশু এবং তরুণদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি প্রণয়ন করা। দ্বিতীয়ত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে কার্যকর প্রতিকারমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা। এবং সবশেষে আছে, শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য শিক্ষকদের সহায়তা দেয়া।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নিরাপদে স্কুল খোলার লক্ষ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে। এতে শিশু ও শিক্ষকদের মাস্ক ও হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ইউনিসেফ শিশু, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গেও যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে নিরাপদে স্কুল খুলে দেয়ার বিষয়ে সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।
জামান / জামান

বিশ্ব ডিম দিবসে বাকৃবিতে ১০ হাজার ডিম বিতরণ

আলোর মেলা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে: দীপাবলির রাতে প্রদীপের গল্প

২৫ সেপ্টেম্বর থেকে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা-মাহির

জবি ছাত্রদল নেতা খুনে ক্ষোভ, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস স্থগিত ও দুই দিনের শোক ঘোষণা

অগ্নি দুর্ঘটনা: শিক্ষক-কর্মচারীদের সতর্ক থাকতে বলল মাউশি

বর্ষা মাহিরের প্রেমের বলি জবি ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ

জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ছাত্রী আটক

'ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড' শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপহার সামগ্রী দিল জবি শিবির

মতামতবিহীন মতবিনিময় সভায় পবিপ্রবিতে ইউজিসি চেয়ারম্যান: সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাধা

‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’ স্লোগানে শিক্ষকদের পতাকা মিছিল

শাবিপ্রবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গোবিপ্রবি উপাচার্যের প্রবন্ধ উপস্থাপন

২০ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: অর্জন, সংকট ও নতুন স্বপ্নে একুশে পদার্পণ
