কক্সবাজারে নকল আকিজ বিড়িসহ আবুল খায়ের টোব্যাকোর এসআর আটক

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়িসহ আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পনির টেরিটরি এসআরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসাইন। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা।

স্থানীয়রা জানান, সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরে নকল বিড়ি উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে আসছে। চক্রটি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা জেলায় উৎপাদিত নকল আকিজ বিড়ি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এনে কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বালুখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজিসহ আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পনির টেরিটরি এসআর দেলোয়ার হোসাইনকে আটক করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এ সময় সিএনজি থেকে দুই লাখ শলাকা নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়ি উদ্ধার করা হয়।

ভবিষ্যেতে আর কখনো নকল বিড়ি বিক্রি ও মজুদ করবে না শর্তে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করলে মামলার হুঁশিয়ার দেওয়া হয়। লিখিত অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়, আমি দেলোয়ার হোছাইন, পিতা মো. হোছাইন, মাতা মনোয়ার বেগম, সাং দ. লম্বরী, ইউনিয়ন টেকনাফ সদর, উপজেলা টেকনাফ, জেলা কক্সবাজার। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ নকল আকিজ বিড়ি বিক্রয়ের সাথে জড়িত। বর্তমানে আমি আবুল খায়ের ট্যোবাকো কোম্পানিতে টেকনাফ টেরিটরিতে এসআর পদে কর্মরত। আমি ১৩/০৯/২০২৪ এবং ১৬/০৯/২০২৪ইং তারিখে কিছু বিড়ি এনে টেকনাফের বিভিন্ন দোকানে দিয়েছি। ২৭/০৯/২০২৪ তারিখে দুই লাখ নকল আকিজ বিড়ি নিয়ে আসি। টেকনাফের আবুল খায়ের কোম্পানির (মেরিজ কোম্পানির) টিএসও মো. এখলাছুর রহমানসহ আরো তিন এসআর সাইফুল রবিউল, আবছার ও ইউনুছ জড়িত এর সঙ্গে জড়িত। নকল বিড়িগুলো আমি মেহেরপুর জেলার মো. সাগরের (মোবাইল ০১৭৬৭-৬১০২৫৫) কাছ থেকে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে কক্সবাজার নিয়ে আসি এবং কক্সবাজার এসএ পরিবহন থেকে সিএনজির মাধ্যমে টেকনাফের বড় হোলসেল দোকানে সরবরাহ করে থাকি। ২৭/০৯/২০২৪ ইং তারিখে দুই লাখ নকল আকিজ বিড়ি নিয়ে টেকনাফ যাওয়ার সময় বালুখালী রোহিঙ্গা বাজারে স্থানীয় ছাত্র-জনতার কাছে ধরা পড়ি। নকল আকিজ বিড়িগুলো আমি নিজ হাতে জনসম্মুখে পুড়িয়ে ফেলি।

আমি অঙ্গীকার করছি যে, টেকনাফ এরিয়া হতে সকল নকল আকিজ বিড়ি তুলে টেকনাফ লোকাল এরিয়ায় জমা দেব। ভবিষ্যতে নকল বিড়ি বিক্রি করব না এবং টেকনাফ এরিয়ায় নকল আকিজ বিড়ি বিক্রেতাদের ধরিয়ে দেব। যদি ভবিষ্যতে নকল বিড়ি বিক্রি করি, তাহলে আইন অনুযায়ী যে শাস্তি দেবে তা মেনে নিতে বাধ্য থাকব।

আমি এই অঙ্গীকার করছি যে, টেকনাফের যেসব দোকানে নকল আকিজ বিড়ি সরবরাহ করেছি, সেসব দোকান থেকে আগামী তিন দিনের ভিতরে সমস্ত নকল আকিজ বিড়ি তুলে নিয়ে নিজ হাতে জনসম্মুখে পুড়িয়ে দেব। যদি তিন দিনের ভেতরে নকল আকিজ বিড়ি তুলতে ব্যর্থ হই, তাহলে অভিযুক্ত সবাইকে মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্বুক্ত করা হবে।

আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) মো. জসিম উদ্দিন জানান, আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের সুনাম নষ্ট করতে কিছু অসাধু চক্র নকল আকিজ বিড়ি তৈরি করছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা বিড়িতে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে কম দামে বিক্রি করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। নকল বিড়ি বন্ধ করতে পুলিশ, র‌্যাব, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।