স্বৈরাচারের পতনে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর আনন্দভোজ, প্রশংসায় ভাসছেন আয়োজকরা

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। তিনি পালিয়ে ভারতে গিয়ে অবস্থান করছেন। এই শেখ হাসিনা স্বৈরাচারের পতন ও নতুন বিজয়ের আনন্দ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) আনন্দভোজের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নিচে আয়োজন করার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হলের ডাইনিংয়ে। আনন্দভোজে খাবারের আইটেম হিসেবে ছিল গরুর মাংস, মেজবানি ডাল এবং কোল্ড ড্রিংক্স। এছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ভাইদের জন্য ছিল খাসির মাংস।
বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও প্রায় ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে গোছানো আয়োজন করে প্রশংসায় ভাসছেন আয়োজনের সাথে সম্পৃক্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গ্রুপগুলোতে প্রশংসার ঝড় তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
আয়োজনের প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গ্রুপে পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ত্বকি হাসনাত শুভ লেখেন, ‘যারা সত্যিকারার্থেই পরিশ্রম করেছে এবং যারা এত চমৎকার একটি আনন্দভোজের আয়োজন করেছে, তাদের জন্য মন থেকে দোয়া এবং প্রতি বছর এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ‘
সময়মতো খাবার পেয়ে ১০/১০ রেটিংস দিয়ে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘খাবারের প্যাকেজিং, পরিমাণ, কোয়ালিটি সবকিছুই ছিল ১০/১০। বৃষ্টি সত্ত্বেও অনেক সুন্দরভাবে আর সময়মতো খাবার হাতে পেয়েছে, যা খুবই প্রশংসনীয় ছিল। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সবাইকে।’
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাওয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ডাইনিং বা হোটেলের খাবার এমন করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘খুবই সুন্দর একটি আয়োজন ছিল। আয়োজকদের অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য। খাবারের কোয়ালিটি আর পরিমাণ দুটোই খুব ভালো ছিল। রান্না, ডিস্ট্রিবিউশন সবকিছু ১০০/১০০ ছিল। ক্যাম্পাসের হোটেল, ক্যাফে, ডাইনিংয়ের খাবারের কোয়ালিটি যদি এরকম হতো, তাহলে কি যে ভালো হতো।’
আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব রিয়াদ বলেন, ‘আনন্দভোজের আয়োজন করতে গিয়ে বন্ধু, সিনিয়র, বিশেষ করে জুনিয়রদের অসম্ভব ভালো সাড়া পেয়েছি। প্রথম দিকে ৪০০ জনের অংশগ্রহণ নিয়ে ভাবলেও শেষ দিনে এসে সেটি দাঁড়ায় প্রায় ৬০০ জনে। এতবড় আয়োজন করার অভিজ্ঞতা অবশ্য আগেও ছিল, গণইফতার আয়োজন। তবুও এই আয়োজনটা ঘিরে ভালোই চিন্তিত ছিলাম আমরা। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক সংকট ও প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও একটি সন্তোষজনক আয়োজন করতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি।’
তবে আয়োজনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে করতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করে রিয়াদ আরো বলেন, ‘অবশ্য আমাদের পরিকল্পনা ছিল কেন্দ্রীয় মাঠে বসে ৬০০ জনের একসঙ্গে খাওয়া। কিন্তু গতকাল বিকাল থেকে ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে এ আয়োজন সম্ভব হয়নি। একটি উম্মুক্ত স্থানে গরু জবাইয়ের প্ল্যান রাখলেও তা করতে হয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে। এরপর পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী ওই স্থানেই বসার ব্যবস্থা করার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি থাকলেও আবারো অঝোর বৃষ্টিধারা বাধা হয়ে দাঁড়াল। তাই বাধ্য হয়ে বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিংয়েই বিতরণ ও কিছুসংখ্যক স্টুডেন্টের বসার ব্যবস্থা করা হলো। সন্তোষজনক কথা এই যে, আমাদের ক্রমাগত সূচি ও স্থান পরিবর্তন নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ ছিল না।’
সহযোগিতার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দভোজ আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের চেষ্টায় কোনো ধরনের ঘাটতি ছিল না। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছুটা মিস-ম্যানেজমেন্ট হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের যত ব্যর্থতা তা আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। গত তিন বছরে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ঘটনাই প্রথমবারের মতো ঘটেছে। তবে আমরা ভিন্ন কিছু প্রথম শুরু করলাম। আপনাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।’
অমানবিক পরিশ্রম করার জন্য প্রোগ্রামের স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আয়োজক কমিটির রাজু শেখ (আইন ও বিচার বিভাগ) বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বিজয় উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দভোজ। আলহামদুলিল্লাহ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আয়োজনটি সুন্দরভাবে শেষ করতে পেরেছি। আবহাওয়া বৈরী না থাকলে আয়োজনটি আরো প্রাণোবন্ত হতো হয়তো। ভলান্টিয়ারদের অমানবিক পরিশ্রমের ফলেই সম্ভব হয়েছে এই দুঃসাধ্য কাজ ( ছয়শ’র বেশি মানুষের আয়োজন সব মিলিয়ে), সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আয়োজনটিকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন।’
দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে অলিখিতভাবে গরুর মাংস কার্যত নিষিদ্ধই ছিলো, সেই অদৃশ্য অশুভ শক্তির অবসান হলো আনুষ্ঠানিকভাবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর (সোমবার) থেকে বুধবার (২ রা অক্টোবর) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কদমতলা এলাকা ও আবাসিক হলগুলোতে টোকেন বিক্রি করা হয়। এছাড়াও অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছিল আনন্দভোজের এই টোকেন। প্রতিটি টোকেনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৩০ টাকা।
এমএসএম / জামান

কম্বাইন্ড ডিগ্রি দাবিতে অচলাবস্থা, উদ্বেগে বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষকরা

ইবিতে আ'লীগপন্থী শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চবি মেডিকেলে প্যাথলজি বিভাগ উদ্বোধন, করানো যাবে ২১ ধরনের পরীক্ষা

ইবিতে (ইকসু)গঠনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

জাকসুতে শিবির ও বাগছাসের প্যানেল ঘোষণা, বিলম্ব ছাত্রদল ও বাম সংগঠনের

জকসু নীতিমালা জমা আজ আগামী বুধবার বিশেষ সিন্ডিকেট সভা

চাঁদাবাজির ঘটনায় আলোচিত সেই আফ্রিদির বিরুদ্ধে মানহানীর অভিযোগ

জবি রোভার স্কাউটের বৃক্ষরোপণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি

গকসু নির্বাচন: গঠনতন্ত্র ভেঙে ‘একক প্রার্থী বানানোর খেলা’, পণ্ড বৈঠক

১২৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিটিসিএলের আড়াই কোটি টাকার বিল বকেয়া

ইবিতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা: ভিপি আবিদুল, জিএস হামিম, এজিএস মায়েদ
