কয়রায় বাহারুলের নির্যাতনের শিকার সাধারন মানুষ

খুলনার কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দখলবাজি,অনিয়ম, নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ মাদক ব্যবসার শেল্টার দেয়ার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামীলীগের দলীয় পদে গড়েছেন কোটি কোটি টাকা।
বিভিন্ন সময়ে আমোদ ফুর্তি করতে তিনি তার দলবল নিয়ে খুলনা এবং ঢাকা পাড়ি দিতেন। উপজেলা পর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন তিনি। তার অত্যাচারে সাধারন মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকে। সরকার পতনের পরও তার অনুসারী সন্ত্রাসী বাহিনীরা মাদক ব্যবসা এবং চাঁদাবাজি করছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। খোঁজ নিয়ে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সে বেপরোয়া হয়ে উঠে। চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে দখরবাজি। সবখানেই ছিল তাঁর বেপরোয়া আচরণ ও আধিপত্য। দলীয় প্রভাবে এলাকায় দখল ও চাঁদাবাজিতে তার প্রতিদন্দ্বী কেউ নেই। তার আবদার এবং কথা না শুনলে নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে তিনি করতেন নির্যাতন।
প্রশাসনের কাছে কেউ অভিযোগ দিলে বাড়ি ঘরে করতেন হামলা। তাঁর হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ অনেক মানুষ। গত ১৫ বছরে বিপুল সম্পদ ও অর্থের মালিক হয়েছেন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর পরিবারসহ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বাহারুল। এরপর থেকে তিনি আর এলাকায় ফেরেননি। তবে তিনি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। ভুক্তভোগী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মী ছিলেন বাহারুল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কয়রা সদরে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি।
তখন বাহারুলের নেতৃত্বে ২-৩ মাসের মধ্যে প্রায় ৬০টি চিংড়িঘের দখল করা হয়। সংবাদপত্রে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বাহারুলের নেতৃত্বে কয়রায় প্রেস ক্লাবে হামলা করা হয়। এতে দুই সাংবাদিক গুরুতর আহত হন। তার কয়েক মাস পরেই বাহারুলকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়। এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর চলতে থাকে দখল ও চাঁদাবাজি। ২০১০ সালে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউপির চেয়ারম্যান মনজুর আলমকে (নান্নু) মারধর করে বাহারুলের বাহিনী। একই বছর চাঁদার টাকা না দেওয়ায় কোহিনুর ইসলাম নামের এক চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ীর ওপর হামলা করে তার লোকজন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদকের পদ পান বাহারুল।
এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এলাকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালায় বাহারুলের বাহিনী। তখন এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। তখন বাহারুলের বিরুদ্ধে কথা বলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও সাংবাদিক মতিয়ার রহমানকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন বাহারুল। একই সময়ে আরেক মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক মওলা বকসকেও মারধর করা হয়। তবে দল থেকে বাহারুলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদকের পদ পান বাহারুল। এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। অন্য একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভিপি তালিকাভুক্ত ৪০ বিঘা জমি দখল করেন এবং এর শ্রেণি পরিবর্তন করে প্লট আকারে বিক্রি করেন। বাহারুল কয়রা সদরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ কাঠা জমি দখলে নিয়ে নেয়। এ ছাড়া কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সামনে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৬ শতক জমির ওপর ৫ তলা ভবন নির্মাণ করে হাসপাতাল বানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার আগে বাহারুলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। বসবাস করতেন টিনের ঘরে। তাঁর বাবা ফজর আলী সানা জমি পরিমাপকারী (আমিন) হওয়ায় বিভিন্ন বৈধ-অবৈধ জমির খবর রাখতেন। এভাবে বাবার সহযোগিতায় বাহারুল অবৈধভাবে জমি দখল করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ২০২২ সালে কয়রায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোনাপানির ঘের বন্ধের নির্দেশনা আসে। এ সময় বাহারুল তাঁর বাহিনী দিয়ে প্রথমে লোনাপানি উত্তোলনের পাইপ ভেঙে দেওয়া শুরু করেন। পরে ঘেরপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে লোনাপানি তুলে ঘের করার ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। স্বাস্থ্যসেবার নামে দুটি অবৈধ লাইসেন্সবিহীন বহুতল হাসপাতালের মালিক ও পরিচালক তিনি। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের পাশে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের জমি দখল করে সেখানে শেখ রাসেল প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষক নিয়োগের নামে সেখান থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা।
২০২২ সালে উপজেলার উত্তর চক মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুল আলমকে তুলে এনে বাহারুলের অফিসকক্ষে বেঁধে মারধর করা হয়। এতে ওই অধ্যক্ষের একটি চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। মাসুদুল আলম বলেন, ‘বাহারুলকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সভাপতি না করায় সে আমার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা নেয়। প্রাণের ভয়ে টাকা দিলেও সে আমাকে তুলে নিয়ে মারধর করে। এ বিষয়ে বাহারুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে বাহারুলের অত্যাচারের শিকার হওয়া ভুক্তভোগিরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করছেন।
T.A.S / T.A.S

বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক রাজেন রায় গ্রেফতার

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে জাতিসংঘ মহাসচিব

সিদ্ধিরগঞ্জে সাংবাদিকতার আড়ালে দেহব্যবসা ব্ল্যাকমেইলিং কথিত ৩ সাংবাদিককে গণপিটুনী

ধামইরহাটে বিএনপির ইফতার মাহফিল উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

বাকেরগঞ্জে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকারের জরিমানা

ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে সাতকানিয়ার তরুণের ট্রেনে ঝাপ দিয়ে মৃত্যু

কোনাবাড়ীতে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি,যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিলো জনতা

তামাক ক্ষেত থেকে মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে নাগরপুর থানা পুলিশ

শেখ হাসিনা সেনানিবাসের নাম 'পটুয়াখালী সেনানিবাস‘ করার দাবীতে মানববন্ধন

ভাটা মালিকরা সরকারী কাজে ইট বিক্রি করবেন না

কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ

হরিপুরে ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা ও ৭ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ
