বিএনপি নেতার ওপর হামলার চেষ্টা,ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক'কে অবরুদ্ধ করে সমন্বয়ক'রা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা কম্পাউন্ডের মধ্যে বিএনপি নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এক বিএনপির নেতাকে মারতে তেরে আসেন ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ধারী মিজানুর রহমান খোকা ও মুজিবুর রহমান মজিবের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন যুবক।

এসময় এক সাংবাদিক সমন্বয়কদের গালাগালির ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করার কারণে থানার মধ্যেই ওই সাংবাদিক'কে প্রায় ৩০ মিনিট পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে সমন্বয়ক নামধারী ওই যুবকরা।তাদের গালাগালির ভিডিও ডিলেট করার জন্য ওই সাংবাদিক'কে বিভিন্ন অশালীন ভাষায় কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন এবং হুমকি প্রদান করে।পরে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরিফ এসে ওই সাংবাদিক'কে তাদের কাছ থেকে অবমুক্ত করে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কর্ণফুলী থানা প্রাঙ্গণে ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুলধা ইউনিয়নের ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় বিএনপি নেতার সাথে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ কেন্দীয় কমিটির সদস্য মো: সেলিম রেজার বিরোধ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে হুমকির অভিযোগ তুলে সাবেক ছাত্রলীগের এই নেতা বিএনপি নেতা সালা উদ্দিন ও অলি আহমদ কে অভিযুক্ত করে কর্ণফুলী থানায় একটি জিডি করেন। যার জিডি নং ১০২৬।

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা দুই পক্ষকে আলোচনা করতে ডেকে আনেন তদন্ত কেন্দ্রে।সেই বৈঠকে ওই ছাত্রলীগ নেতা সেলিম রেজার পক্ষে উপস্থিত হন ছাত্র সমন্বয়ক নামধারী মিজানুর রহমান খোকা ও তার সহযোগীরা এবং বিএনপি নেতা সালা উদ্দিনও সেখানে উপস্থিত হলে কথা বলার একপর্যায়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি মারধর ও হাতাহাতি শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সন্ধ্যায় দুই পক্ষ অভিযোগ দিতে থানায় আসলে সেখানে বাঁধে বিপত্তি,থানার মধ্যে ওই বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন দেখে ক্ষিপ্ত হয় সমন্বয়ক নামধারী মিজানুর রহমান খোকা ও মুজিবুর রহমান মুজিব সহ ২০/২৫ জন যুবক। থানা কম্পাউন্ড এর মধ্যে বিএনপির নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দফায় দফায় ওই বিএনপি নেতাকে মারতে তেরে আসেন সমন্বয়ক'রা,এসময় সমন্বয়কদের গালাগালির ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করার কারণে এক সাংবাদিক'কে বিভিন্ন অশালীন ভাষায় কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন এবং হুমকি প্রদান করে।এ সময় থানার সামনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং শত শত লোকজন জড়ো হন।

পরে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ শরিফ ও শিকলবাহা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. মিজানুর রহমান দ্রুত থানায় এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, থানার বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য এ সময় নিষ্ক্রিয় ছিলেন এবং সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতো বলে জানান তারা।

স্থানীয়ভাবে সেলিম রেজা পরিচিত ‘কথিত সমন্বয়ক’ হিসেবে। অতীতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে আছে বহু স্থিরচিত্র। তিনি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ কেন্দ্রী কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা এবং আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু স্মৃতি সংসদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি নিজেকে ‘ছাত্র সমন্বয়ক’ পরিচয়ে পরিচিত করতে বেশি আগ্রহী।

অন্যদিকেবিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, সেলিম রেজা আওয়ামী ঘরানার প্রভাবশালী একটি মহলের আশ্রয়ে থেকে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন। আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মীর পক্ষে দালালি করতে এসে ছাত্র সমন্বয়করা আজকে থানার ভিতরে বিএনপি নামে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
 ঘটনার পর রাতেই বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন এবং সেলিম রেজার গ্রেপ্তার দাবি করেন।

কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরিফ বলেন, তেমন কিছু না। তুচ্ছ ঘটনায় এমনটি হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।