ঢাকা সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

ফ্যাসিস্ট ও দোসররা এখনও বহাল বাংলাদেশ বেতারে


নিশাত শাহরিয়ার photo নিশাত শাহরিয়ার
প্রকাশিত: ৩০-৫-২০২৫ বিকাল ৭:১৯

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে গঠনমূলক সমালোচনা কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতা বারবার বিঘ্নিত হয়েছিল সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেই। সেই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর ছিল বাংলাদেশ বেতার- এমনই অভিযোগ করেন বাংলাদেশ বেতারের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে। 

দীর্ঘ ষোল বছর অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত অ্যানাউন্সার, সংবাদ পাঠক, সংগীতশিল্পীসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়,জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পূর্বে দীর্ঘ ষোল বছর বিশেষ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গঠনমূলক সমালোচনা কিংবা বিরোধী মত দমনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল সরকারি প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ বেতার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মতামত প্রদান কিংবা গঠনমূলক সমালোচনা করার কারণে অনেক শিল্পীকেই লিখিত/অলিখিতভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছিল সরকারি এই প্রচার মাধ্যমটি। এক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা জানান,  ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী অতি উৎসাহী বেশ কয়েকজন অফিসারের ভূমিকা ছিল বেশ লক্ষণীয়। সরকার বিরোধী আখ্যা দিয়ে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর অনুষ্ঠান করা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল অনেককে। আর এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিল বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত বেশ কয়েকজন অতি উৎসাহী অফিসার। তাদের কারণে অনেক শিল্পীরই শিল্প সত্তার অপমৃত্যু ঘটেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে । সরকারি প্রচার মাধ্যম হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ বেতার, ঢাকায় দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এবং সমর্থক হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের গোটা পরিবারকে নিয়ে যারা একচেটিয়া অনুষ্ঠান করেছে তারা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ অন্যান্য কাজের সাথে। অথচ বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে যারাই গঠনমূলক সমালোচনা করেছে কিংবা মত প্রকাশ করেছে তাদের সকলকেই কালো তালিকাভুক্ত করেছিল বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা। আর ওই সময়গুলোতে যারা ব্যাপক সুবিধায় সুবিধাভোগী হয়েছিল বর্তমান বাস্তবতায় এখনো তাদের অনেকেই দ্বিগুণ সুবিধা ভোগ করে আসছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জুলাই শহীদদের রক্তে রঞ্জিত বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তব প্রেক্ষাপটে ওইসব ফ্যাসিস্ট এবং দোসরদের বিরুদ্ধে কোন গঠনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে না বাংলাদেশ বেতার কর্তৃপক্ষ। বরং নিয়মিত অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান তারাই করছে। অন্যদিকে যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনা করেছিল, দীর্ঘ সময় বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান থেকে যাদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল তাদের অনেকেই এখনও বঞ্চিতই রয়েছে বলে জানা যায়।

বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত বেশ কয়েকজন উপস্থাপক- উপস্থাপিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, 'বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা'- শিরোনামে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলাদেশ বেতার, ঢাকায় যিনি গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা করতেন সেই তিনিই এখন পূর্বের তুলনায় আরো দুর্বার গতিতে বেতারের বিভিন্ন দপ্তরে অনুষ্ঠান করছেন নেপথ্যে থাকা কয়েকজনের সহযোগিতায়। ঐ একই ব্যক্তি তার গ্রন্থনা উপস্থাপনায় 'বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ' শিরোনামে দীর্ঘ সময় একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করেছেন বাংলাদেশ বেতার, ঢাকার হোম সার্ভিসে। 

বাংলাদেশ বেতার, ঢাকায় নির্দিষ্ট কয়েকজন আওয়ামী সুবিধাভোগী অফিসারের সাথে সুসম্পর্কের কারণে সরকারের প্রচারণামূলক কার্যক্রমে অংশ নেয়া অ্যানাউন্সস্যারদের তালিকার প্রথম সারিতে ছিলেন সেই একই ব্যক্তি। 'তরুণদের চোখে বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা' এই শিরোনামে একটি প্রামাণ্য অনুষ্ঠান করতেন আওয়ামী সুবিধাভোগী সেই উপস্থাপক। বহিরাঙ্গন হিসেবে পরিচিত বেতারের মাধ্যমে সরকারের প্রচারণামূলক কাজের অংশ হিসেবে 'তরুণদের চোখে বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা' এই অনুষ্ঠানটি করা হতো দেশের জেলা, উপজেলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায়। সেই প্রোগ্রামটিও এককভাবে দীর্ঘ সময় ধরে করেছেন আওয়ামী সুবিধাভোগী সেই একই উপস্থাপক। এছাড়া, বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ বিশেষ দিবস থেকে শুরু করে যেকোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি ছিল বেশ লক্ষণীয়। 

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারের সাথেও ছিল ওই উপস্থাপকের দহরম মহরম সম্পর্ক। অনেকেই বলেন, পারিবারিক সম্পর্ক ছিল তাদের মাঝে। উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রভাব বিস্তার করতেন সুবিধাভোগী সেই আওয়ামী ঘরানার অনুষ্ঠান উপস্থাপক।  

মোটকথা, আওয়ামী সরকারের মিথ্যে প্রচার-প্রচারণা দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক  ভূমিকা রেখেছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি বর্তমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এখনো সমানতালে অনুষ্ঠান উপস্থাপনসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন বিনা দ্বিধায়, বিনা বাধায়। অনেকেই আক্ষেপ করে দৈনিক সকালের সময়কে জানান, যারা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগী ছিল তারাই এখন জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ব্যাপক সুবিধাগ গ্রহণ করছে। এটা অনেকটা জুলাই শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন করেন কেউ কেউ। 

বাংলাদেশ বেতারে সংরক্ষিত রেকর্ড রুম, লগ খাতা, কিউ সিট, ডিউটি চার্ট, প্রোগ্রাম সিডিউলসহ সংরক্ষিত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করলে সহজেই জানা যাবে কোন কোন উপস্থাপক-উপস্থাপিকা আওয়ামী সুবিধাভোগী ছিল এবং এখনও বহাল তবিয়তে বাংলাদেশ বেতার, ঢাকায় অনুষ্ঠান করে চলেছে। তবে বাংলাদেশ বেতার কর্তৃপক্ষ বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিশ্বাসী শিল্পী- কলাকুশলীরা।

এমএসএম / এমএসএম

ছাত্রদলের সমাবেশে পরিপূর্ণ শাহবাগ

৩৭তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের নতুন কমিটি গঠিত

মাদক ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ে র‍্যাবের সেমিনার অনুষ্ঠিত

পিআইবি’র গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

উত্তরার বিদ্যাপিট নওয়াব হাবিবুল্লাহ এর এসএসসি উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

শুধু নির্বাচনের জন্য জুলাই অভ্যুত্থান- ছাত্রনেতা মাইদুল হাসান সিয়াম

সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে আগুন

স্টেডিয়াম এলাকায় সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান

তুরাগে রাজউকের খালি প্লট দখলের অভিযোগ সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে

ই-কমার্স খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বাফেসাপ আইকনিক অ্যাওয়ার্ড পেল ই-ক্রয় ডটকম

পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় নারীর অংশগ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা

জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের আলোচনা সভা