ঢাকা সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

লাকসামে ভূমিদস্যুদের কবলে জমিদারের শতবর্ষী 'ধোঁয়া পুকুর'


দেবব্রত পাল বাপ্পী, লাকসাম  photo দেবব্রত পাল বাপ্পী, লাকসাম
প্রকাশিত: ১৮-৬-২০২৫ দুপুর ৪:৪

ব্রিটিশ আমল থেকে পুকুরে নাম ধোঁয়া পুকুর। চারদিকে বসতবাড়ি, মাঝখানে সড়কের পাশে বিশাল একটি ঐতিহাসিক পুকুর। শতবর্ষের  প্রাচীন ধোঁয়া পুকুরটি আয়তন প্রায় ৮৬ শতক। তৎকালীন জমিদার অতুল কৃষ্ণ চৌধুরী এলাকাবাসীর পানির চাহিদা মেটানোর জন্য তিনি জমি খনন পুকুর করেন নাম দেয়া হয় ধোঁয়া পুকুর তাই জমিদারীর অস্তিত্ব রয়েছে এই পুকুরের। 
লাকসাম পৌরশহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংলগ্ন সেই ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী 'ধোঁয়া পুকুরে  নজরে পড়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের। ভূমিদস্যুরা এ পুকুরটি বেচা কেনার মাধ্যমে ভরাট করে গড়ে তুলতে চায় দালানকোঠা ইমারত। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী কোনোভাবেই পুকরটি হারাতে চায়না। শত বছরের পুরোনো পুকুরটিকে ঘিরে এ এলাকার চারপাড়ের মানুষের হাজার স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
শতবর্ষী পুকুর ভরাটের চেষ্টা একটি উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের কাজের ফলে পরিবেশের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রাও ব্যাহত হতে পারে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পুকুরটি ভরাট করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পরিবেশবাদীরা যথারীতি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছেন। 
প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং দ্রুত সংস্কার ও খনন করে ধোঁয়া পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে এর সৌন্দর্যবর্ধনের (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ ত্রকল্প জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে লাকসাম পৌরসভার প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লাকসাম জেলা বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক শিব্বীর আহমেদ। 
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, লাকসাস পৌরসভার সামনে কুমিল্লা-নোয়াখালী রেললাইনের পূর্ব পাশে লাকসাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত শতবর্ষী প্রাচীন ধোঁয়া পুকুর। ওই পুকুরের আয়তন প্রায় ৮৬ শতক। মধ্য লাকসাম এলাকাটি তৎকালীন লাকসাম জমিদার অতুল কৃষ্ণ চৌধুরীর (মৈশান বাড়ী) অধীনে ছিল এ জায়গাটি। প্রায় ১৯১৫ সালের দিকে এলাকাবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে এটি খনন করা হয়। বছর বছর ধরে পুকুরটি সংরক্ষণে আর কারও নজর নেই। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই পুকরটি চারপাড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা পুরন করে আসছে।কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের নজর এ পুকুরটি প্রতি। ভূমিদস্যুরা এ পুকুরটি বেচা কেনার মাধ্যমে ভরাট করে গড়ে তুলতে চায় দালানকোঠা ইমারত। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী কোনোভাবেই পুকরটি হারাতে চায়না।শত বছরের পুরোনো পুকুরটিকে ঘিরে এ এলাকার চারপাড়ের মানুষের হাজার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এ পুকুরে গোসল, ধোয়ামোছা, শিশুদের দাপাদাপি, সাঁতার শিখা ও মাছের চাষ।বছর বছর ধরে পুকুরটি সংরক্ষণ না করায় ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে চারপাশে পরিবেশ দূষিতে পরিণত হয়েছে। পুকুরে মধ্যে পলিথিন জাতীয় বর্জের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে এমনকি পৌর ড্রেনের ময়লার পানি পুকুরে পড়ে দূর্গন্ধ আর দূষিত করছে পুকুরে পানি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটি উত্তর পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ তার পাশে রয়েছে লাকসাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।পুকুরের চারদিকে বসতবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পৌরসভার ড্রেনেজ লাইনের ময়লার পানি পুকুরে যাচ্ছে এছাড়াও পলিথিন জাতীয় বর্জ্য পেলে দূর্গন্ধ আর দূষিত হয়ে আছে পুকুরটিতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘ময়লা আবর্জনা ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে পৌর শহরের ধোঁয়া পুকুরটি। শুধু ধোঁয়া পুকুর নয়, একই অবস্থা শহরের অধিকাংশ পুকুরের। দখল আর দূষণের কবলে পড়ে একের পর এক পুকুরগুলো ভরাট হচ্ছে। ফলে পুকুর শূন্য হচ্ছে লাকসাম পৌর এলাকা। অব্যাহতভাবে পুকুর ভরাটের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনীয় পানি সংকটের আশঙ্কা সৃষ্টি করছেন স্থানীয়রা। ফলে ধোঁয়া পুকুরটিকে রক্ষায় প্রয়াস গ্রহণ করেছেন প্রশাসনসহ স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক মাস ধরে রাজনীতি ব্যক্তিরা পুকুরটি ভরাটের করার জন্য পায়তারা করছে, এমনকি প্রশাসনকে মেনেজ করে তারা দলের উপর মহলের সঙ্গে যোগাযোগ  চালাচ্ছেন। পুকরটি চারপাড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা পুরন করে আসছে। আমরা এ পুকুরটি হারাতে চাইনা।
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুর রহমান, আমেনা বেগম ও জয়নাল ওরফে (চেয়ারম্যান) দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, এ এলাকায় কোনো সুস্থ মানুষের বসবাসের মতো অবস্থা নেই। আমরা এ পুকুরে গোসল করতে পারি না, রান্না কাজে পানিও ব্যবহার করতে পারছিনা। বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। ড্রেনের ময়লা পানিতে বংশবিস্তার করছে মশা-মাছি। ময়লা পানির কারণে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি।
এ পুকুরটি সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দ্রুত এটি খনন ও সংস্কার করার জোর দাবি জানান তারা। 
লাকসাম পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাউছার হামিদ দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, শতবর্ষ ধোয়া পুকুরটি ভরাট করার জন্য কিছু ব্যক্তি পায়তারা করার জন্য চেষ্টা করছে বলে  অভিযোগ উঠেছে। আমি এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পুকুরটি দেখে এসেছি। আমি যতদিন লাকসামে থাকবো আমার চোখের সামনে কোন পুকুর ভরাট করতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও ওই পুকুরের পাশে সড়ক ও ড্রেন সংষ্কারে কাজ করা হবে। এর পাশাপাশি পুকরটি  সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।’

এমএসএম / এমএসএম

চট্টগ্রামে রাস্তায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কসবায় টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

কুষ্টিয়ায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গণে ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার, দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়রা

ধামরাই প্রেস ক্লাবের নির্বাচন : সভাপতি তুষার, সম্পাদক আহাদ

সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, রফিকুল আলমের চাকরিচ্যুতি দাবিতে মানববন্ধন

তাড়াশে বিয়ে বাড়িতে চুরির ঘটনা

টুঙ্গিপাড়ায় শুরু হয়েছে টাইফয়েড ভ্যাকসিন টিকাদান কর্মসূচি

তেঁতুলিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পর্যটন কেন্দ্র এখন মোহনগঞ্জের গলার কাঁটা

অভয়নগরে শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ

রাঙামাটিতে টাইফয়েড টিকাদান শুরু

শিবচরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন