বেনাপোলে অন থার্ড সিস্টেমে ঘুস নিতো কর্মকর্তারা

বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর অভিযানে দুই লাখ ছিয়াত্তর হাজার ঘুসের টাকাসহ ৬নং শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা আক্তার ও তার টাকা উত্তোলনকারী হাসিব গ্রেফতারের পর একে একে বেরীয়ে আসছে দুর্নীতিগ্রস্থ একাধিক কর্মকর্তার ঘুস বানিজ্যের ফিরিস্তি। জানা যায় দুদকের অভিযানের দিন ৬নং গ্রুপের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের সবুজ সংকেতেই সিনিয়র অফিসার শামীমা আক্তারের ঘুসের টাকা গ্রহণ করেন এনজিওকর্মী হাসিব। শুল্কায়নে ফাইল প্রতি শুল্কফাঁকির টাকা অন থার্ড সিস্টেমে ঘুস নিতো কর্মকর্তারা।
দুদকের জালে রাজস্ব কর্মকর্তা ও তার সহযোগী ধরা খেলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে জসিম। অবৈধ ঘুস আদায়ে আমদানিকারক প্রতিনিধিদের হয়রানি করা এবং চাহিদা মত রাজস্ব ফাঁকির ঘুসের টাকা পেলে সিদ্ধহস্ত ফাইলে স্বাক্ষর করত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।
স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়,শামীমা আকতারের সঙ্গে যৌথ ঘুস বানিজ্যে জড়িয়ে ফাইলে উভয় কর্মকর্তার সাক্ষরের মাধ্যমে পণ্য শুল্ক ফাঁকি দিয়েই অসাধু আমদানীকারকরা বন্দর হতে পণ্য খালাস নিতেন। এক বছরের অধিক সময় ধরে একই স্টেশনে অবস্থান করে অবৈধ ঘুসের টাকায় জ্ঞাত আয় বর্হিভূত নামে বেনামে অঢেল অর্থ সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক বনেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আমদানিকারক জানান, আমদানিকারকদের ফাইল আটকিয়ে শামীমা আক্তার যে চাহিদা ছিল তার থেকেও বেশি পরিমান টাকার ঘুস বানিজ্যে করতো সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম। তার দাবী শামীমা আক্তারের কাছ হতে সুবিধা পাওয়া আমদানিকারকদের ফাইল গুলো কমিশনার একটু পর্যালোচনা করলেই বেরিয়ে আসবে শামীমা-জসীমের সীমাহীন দূর্নীতির খতিয়ান। এমনকি দুদকের সুষ্ঠ জিজ্ঞাসাবাদে ঘুসকান্ডে জসীমের সম্পৃক্ততা উদঘাটন হবে।
এদিকে ঘুসের টাকাসহ রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আটকের পর স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা ঘুসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। শামীমা আক্তারের প্রধান ঘুস বাণিজ্যের হোতা এআরও জসিমের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন। তারা আরও জানান, শুল্কায়ন গ্রুপ-৬ এ প্রথমে এআরও জসিম ফাইল আটকিয়ে দরদাম শুরু করে পরে শুল্কফাঁকির অর্থ হিসাব করে অন থার্ড সিস্টেমে ঘুস নিতো। অথাৎ ১০ লাখ টাকা সুবিধা দিলে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে হত এই কর্মকর্তাদের।
ঘুস কান্ডের তদন্ত বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের যশোর-দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ সালাউদ্দিন জানান,দুদকের অভিযানে ঘুসের টাকাসহ আটককৃত উভয়ের সেলফোন জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় যাহারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘুসের টাকা লেনদেনকৃত আমদানিকারক ও সিএন্ডএফের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে পরে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, বেনাপোল কাস্টমসের শুল্কায়ন গ্রুপ-৬ ভারত থেকে আমদানিকৃত মোটরপার্টস ও যানবাহনের যন্ত্রাংশের কাজ হয়ে থাকে। সেখানে ঘুষের বিনিময়ে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
শুল্ক ফাঁকির অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসের কয়েকজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার যোগসাজসে গড়ে উঠা শুল্ক ফাঁকির সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদকে অভিযুক্ত বিদায়ী সাবেক কমিশনার মোঃ কামরুজ্জামানসহ কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে সখ্যতা গড়ে ভাড়া সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেদারসে শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। সাবেক সহকারি কমিশনারের আনুগত রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দীনকে দিয়ে শুল্কায়ন গ্রুপ-৬ শাখায় দায়িত্বে সিঅ্যান্ডএফের সাথে পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যে করেছে। দুদকের অভিযানে আটক হওয়া ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এমনই একটি ফাইলের ঘুসের টাকা।
৬নং গ্রুপে মটরপার্টস ও যানবাহনের যন্ত্রাংশের দেখানো ‘আইওয়াশ’ ও সর্বচ্চ “টি-আর (ট্যাক্স রেগুলেশনস) নামে অন থার্ড সিস্টেমে কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ে নিয়োজিত শুল্কায়ান গ্রুপ-৬ এ নিয়োজিত এনজিও কর্মী হাসিবকে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে বলে নিশ্চিত করে সূত্রটি।
উল্লেখ্য ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর হতেই একটি অসাধু চক্র সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিতে তৎপর রয়েছে। সাম্প্রতি বর্ডারগার্ড বিজিবি ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর দেওয়া গোপন তথ্যে বেশ কয়েটি পণ্য চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বেপরোয়া হয়ে ওঠছে শুল্কফাঁকি চক্রের হোতারা।
এবিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের শুল্কায়ন গ্রুপ-৬ এর রাজস্ব সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দীনের ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বক্তব্যের বিষয় হোয়াটসঅ্যাপে লিখে দেওয়া হলে তিনি সিন করেন। তবে কোনো জবাব দেননি।
এদিকে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দুদকের মামলায় রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী হাসিব উদ্দীনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত ৯ অক্টোবর তাদের আদালতে হাজির করে জামিন আবেদন করলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. সালেহুজ্জামান আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
এমএসএম / এমএসএম

কুষ্টিয়ায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গণে ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার, দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়রা

ধামরাই প্রেস ক্লাবের নির্বাচন : সভাপতি তুষার, সম্পাদক আহাদ

সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, রফিকুল আলমের চাকরিচ্যুতি দাবিতে মানববন্ধন

তাড়াশে বিয়ে বাড়িতে চুরির ঘটনা

টুঙ্গিপাড়ায় শুরু হয়েছে টাইফয়েড ভ্যাকসিন টিকাদান কর্মসূচি

তেঁতুলিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পর্যটন কেন্দ্র এখন মোহনগঞ্জের গলার কাঁটা

অভয়নগরে শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ

রাঙামাটিতে টাইফয়েড টিকাদান শুরু

শিবচরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন

শান্তিগঞ্জে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন এর শুভ উদ্বোধন
