যশোরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র
যুবককে পিটিয়ে হত্যায় তিন জনের দায় স্বীকার
যশোরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ১৪ জনের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদৎ হোসেন ওই তিন আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। একই সাথে শুনানি শেষে অপর ১১ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দেয়া সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেছে আদালত। এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে এ মামলার ১৪ আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
কোর্ট পরিদর্শক পরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলার তিন আসামি চৌগাছার বিশ্বাসপাড়াার মশিয়ার রহমানের ছেলে রিয়াদ, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ভাবানীপুর গ্রামের সাবদার রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান, যশোর শহরের নীলগঞ্জ সাহাপাড়া এলাকার আবদুর রশিদ মিয়াজীর ছেলে রেজাউল করিম রানা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া অপর ১১ আসামির রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
বাকি ১১ আসামি হলেন- যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম করিম ও বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আশরাফুল কবির, একই গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে আরিফুজ্জামান, যশোর শহরের কাজীপাড়া মসজিদ এলাকার কামরুজ্জামানের ছেলে ওহেদুজ্জামান, যশোর সদর উপজেলার আরবপুর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ওহিদুল ইসলাম, যশোর শহরের বকচর হুশতলা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল শাহরিয়ার রোকন, যশোরের বেনাপোলের শাখারিপোতা এলাকার মুকুল হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন, যশোরের অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামের আসার আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকার এসএমজি মুক্তাদিরের ছেলে এএসএম সাগর আজিজ, যশোর সদরের শেখহাটি হাইকোর্টপাড়ার ফজর আলীর ছেলে নুর ইসলাম ও সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বামখালী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে অহেদুজ্জান সাগর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক রকিবুজ্জামান জানান, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার মনিরুজ্জামানের ছেলে মাহফুজুর রহমান মাদকাসক্ত ছিলেন। তাকে গত ২৬ এপ্রিল যশোরে 'মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র' নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে তার পরিবার। গত শনিবার দুপুরে মাহফুজুরের মৃতদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেখে আসে নিরাময় কেন্দ্রের লোকজন। একই সাথে পরিবারকে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় মাহফুজুরের পরিবার থানায় অভিযোগ দেয়। এরপর তদন্তে নির্যাতনে হত্যার বিষয়টি সামনে আসে। এ সংক্রান্ত সিসিটিভি ফুটেজও পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, বেশকিছু লোক মিলে এক যুবককে পেটাচ্ছে। এরপর মাহফুজুরের বাবা ১৪ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ওই ১৪ জনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর মধ্যে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন এবং অন্য ১১ জনকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়।
এমএসএম / সাদিক পলাশ