পাইকগাছার মিনাজ নদীর চর ভরাটি অংশ দ্রুত খননের দাবি

পাইকগাছা উপজেলার খড়িয়া মিনাজ বাজারসংলগ্ন গেটটি লস্কর ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডের ২০টি গ্রামের পানি, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইউনিয়ন চাঁদখালী ইউনিয়নের ৩২টি গ্রামের পানি, গড়ইখালী ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের পানি ও কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের বেশ কিছু অংশের পানি সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু এ গেটটির সম্মূখের ক্যানেলটি সরু হওয়ায় এবং কিছুটা সামনের দিকে অর্থ্যাৎ খড়িয়া মিনাজ চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে মিনাজ নদীতে প্রায় দেড়-দুইশো বিঘা জমি ভরাট হয়ে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।

উক্ত প্রতিবন্ধতা দূরীকরণের লক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইতিপূর্বে লস্কর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব কে এম আরিফুজ্জামান (তুহিন) ২০১১ সালে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে বিগত দিনের এমপি মহোদয়, বর্তমানে উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব, ডিসি মহোদয় ও ইউএনও মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি। এছাড়া ১৫ কিঃমিঃ দৈর্ঘের এ নদীতে ২.৫২ একর জমি ইজারা দেওয়া হয়। ফলে জলমহাল ইজারাদার কর্তৃক নেটপাটা দেওয়ার কারনে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে । গেল বর্ষার মৌসুমে অতি বৃষ্টির কারণে এলাকার পানি ঠিকমতো অপসারিত না হওয়ায় এলাকার ভুক্তভোগী জনগন লস্কর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বারবার ফোন করে তাদের দুরাবস্থার কথা জানিয়েছিল ।

বাস্তবতার নিরিখে দেখা গেছে, টানা ৩ দিন বৃষ্টি হলে ১৫ দিন লাগে মিনাজ নদীর পানি সরতে। এমনকি গত বর্ষার মৌসুমে গজালিয়া থেকে চাঁদখালী অভিমুখে পিচের উপর পানি উঠে গিয়েছিল এবং রাস্তার উপর মানুষ মাছ ও ধরেছে-এই হলো অবস্থা।মিনাজ নদীর পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী উক্ত ভরাট অংশ দ্রুত খনন করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করা গেলে সামনের বর্ষার মৌসুমে এ অঞ্চলের এক লক্ষ বিশ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এমনিতে বিগত বছরগুলোতে উক্ত ভরাটি অংশের কারনে বন্যার পানি ঠিকমত সরবরাহ না হওয়ায় এলাকার ধান চাষী এবং মাছ চাষীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন এবং এলাকার প্রচুর কাঁচা বাড়ীঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নদীর পাশের রাস্তা সংস্কার করা হলেও বন্যার পানি তোড়ে বারবার ভেঙে যাচ্ছে। সময় মতো বন্যার পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এ অঞ্চলের স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত অবকাঠামোর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

একেতো মিনাজ নদীর মুখের দিকের একটি বিশাল অংশ ভরাট হয়ে পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে বাইনতলা গেটটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় সমস্ত পানির চাপ এখন মিনাজ গেটের উপর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘গ্রাম হবে শহর’ এ অঞ্চলে বাস্তবায়নের জন্য এবং এ অঞ্চলে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প গুলো টেকসই করার জন্য মিনাজ নদী সহ সকল পানি সরবরাহের ক্যানেল গুলো অবমুক্ত করা এবং টেকসই ভেড়ি বাঁধ তৈরী করা প্রয়োজন। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মিনাজ নদীর চর ভরাটি অংশ খনন করা এখন সময়ের দাবি।

মিনাজ নদীর চর ভরাটি অংশসহ এলাকার পানি সরবরাহের ক্যানেল গুলো খনন করা না হলে এ অঞ্চলে ব্যপকভাবে ধান চাষ করা আদৌ সম্ভব নয়। ফলে চাষীরা এখন লোনা পানির মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বিষয়টি বিবেচনা করে মিনাজ নদীর চর ভরাটি অংশের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পানি সম্পদ মন্ত্রী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের প্রতি বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান (তুহিন) ও এলাকার সচেতন মহল।