ফেসবুকে কমেন্টের জেরে ইবি ছাত্রকে ল্যামপোস্টে বেঁধে মারধর
ফেসবুকে কমেন্টের জেরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান আরিফকে ল্যামপোস্টে বেঁধে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ফেসবুকে একটি পোস্টের কমেন্টে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে 'অবমাননা করেছে' অভিযোগ এনে তাকে মারধর করে তারা। পরে প্রক্টরিয়াল বডির নির্দেশনায় তাকে ইবি থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সোমবার (৭ মার্চ) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ দিবস উপলক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো হচ্ছিল। এ নিয়ে সকাল ১০টার দিকে মিম ইসলাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে লেখেন, ‘ম্যাক্সিমাম ডিপার্টমেন্টে এখন পরীক্ষা চলে, এভাবে এত লাউডলি মাইক বাজালে পড়াশোনা কিভাবে করবো!’
ওই স্ট্যাটাসে আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে এক কমেন্টে লেখা ছিল, ‘জাতির আব্বার ভাষণ, তুমি তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। দুটি হাসির ইমোজি।’ সেখানে মিম উত্তরে লেখেন, ‘একটু সাউন্ড কমিয়ে বাজালেও তো হয়।’
সেখানে আরিফ আবার লেখেন, ‘তুমিতো জানো জাতীর আব্বু এই শক্তিশালী ভাষণেই আজ জাতি স্বাধীন এবং সিঙ্গাপুর-এর চেয়ে উন্নত। তাই জোরে বাজিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা জানানো হচ্ছে। না পড়লেও চলবে। এমনি সিঙ্গাপুর এটা।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি লেখেন, আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছে। একই সাথে তিনি আরিফের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানান।
অভিযোগের পরও কার্যত ব্যবস্থা না নেয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাকিব এবং ইবি ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আরিফ অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক এলাকায় ল্যাম্পপোস্টে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন।
পরে রাত ১০টার দিকে সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম জুয়েল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আরিফকে (কটূক্তিকারী) ইবি থানায় সোপর্দ করা হয়। পরবর্তীতে প্রক্টরের নির্দেশে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মঙ্গলবার অভিযুক্তকে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি আলোচনায় বসবে বলে জানা গেছে।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি অভিযুক্তের ফোনে পাওয়া যায়নি। আমরা ফোনটি রেখে দিয়েছি। প্রযুক্তির সাহায্যে আরো যাচাই-বাছাই করব।
এমএসএম / জামান