শরণখোলায় অসময়ের তরমুজ চাষে সফল বিপুল মাঝি
সবজির পাশাপাশি তরমুজ চাষ করে সফলতা অর্জন করলেন বাগেরহাটের শরণখোলার বিপুল চন্দ্র মাঝি। উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের বিমল মাঝির ছেলে বিপুলের ক্ষেতের মাচায় ঝুলছে বিভিন্ন রঙের শত শত রসালো তরমুজ। বর্তমানে তরমুজ চাষের মৌসুম না হলেও চাষ পদ্ধতি রপ্ত করে উপজেলার প্রথম চাষি হিসাবে সফল হয়েছেন তিনি।
চাষি বিপুল চন্দ্র মাঝি ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে গেছে, ৭-৮ বছর আগে বাড়ির পাশের এক একর জমি বর্গা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন বিপুল চন্দ্র মাঝি এর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের লাউ, শসা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করে আসছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় অসময়ে তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে চাষিদের। তারই ধারাবাহিকতায় কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে চাষ শুরু সবজি চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষের ব্যাপারে আগ্রহের সৃষ্টি হয় বিপুলের।
উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করার পরে সরকারীভাবে সুগার কিং জাতের তরমুজের বীজ, সার এবং কীটনাশক সহ সবধরনের উপকরণ দিয়ে সহায়তা করে কৃষি বিভাগ। ২৮ জুন চারা রোপণ করার পর ৬৫ দিনের মাথায়ই ফলন আসে তার ক্ষেতে। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে তরমুজের মাচায় তিন শতাধিক তরমুজ ঝুলছে যেগুলো আগামী ৮/১০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যাবে। তবে ধারনা করা হচ্ছে, ৭০/৮০ টাকা কেজি দরে বাকি তরমুজগুলো বিক্রি করা যাবে।
তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিবুল ইসলাম মনি বলেন, বিপুল মাঝির আগ্রহ দেখে তরমুজ চাষাবাদে সার্বক্ষণিক প্রদর্শনী চাষিকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রথম চাষেই সফল হয়েছেন চাষি বিপুল মাঝি। তরমুজের ফলন দেখে এলাকার অন্য চাষিদের মাঝেও ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার জানান, অসময়ের তরমুজ চাষে আগ্রহী চাষি বিপুল চন্দ্র মাঝিকে বীজ, সার, কীটনাশক সহ সকল উপকরণ সরবারহ ও সবধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে আরো চাষি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে, ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় কৃষক বিপুল মাঝির অফ সিজনে সুগার কিং জাতের তরমুজ চাষের সফলতা প্রচারে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব ধলুর সভাপতিত্বে উত্তর রাজাপুর আমতলী গ্রামে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. কৃষিবিদ মো. ফজলুল হক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক খামারবাড়ী বাগেরহাট মো. আজিজুর রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার দেবব্রত সরকার, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার মোস্তফা মশিউল আলম, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিবুল ইসলাম মনি, মো. আবুল হাসান, সাংবাদিক মাসুদ মীরসহ প্রায় ২০০ কৃষক-কৃষাণি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এমএসএম / জামান