রাত পোহালেই ভোটগ্রহণ, ব্যাপক প্রস্তুতি কমিশনের

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ আগামীকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন। এরই মধ্যে ১৪৫টি কেন্দ্রে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।

১২ অক্টোবর উপনির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।

এ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে মাহামুদ হাসান রিপন নৌকা প্রতীক, জাতীয় পার্টি থেকে এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু লাঙ্গল প্রতীক, বিকল্পধারার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ আপেল প্রতীক ও মাহবুবুর রহমান ট্রাক প্রতীকসহ মোট পাঁচজন প্রার্থী। উপনির্বাচনে এ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

সোমবার মধ্যরাত থেকে শেষ হয়েছে প্রচার-প্রচারণা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে ভোটগ্রহণের সরঞ্জমাদি প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে কেন্দ্র কেন্দ্রে বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। সাঘাটা উপজেলার ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০ জন এবং ফুলছড়ি উপজেলার ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৩ জনসহ এ আসনটিতে মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন।

উপনির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ মোট ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটগ্রহণে দুই উপজেলায় ১৪৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৯৫২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১ হাজার ৯০৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। আসনটিতে এবারই প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভোটকেন্দ্র এবং ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ, র‌্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি এবং আনসার ও ভিডিপি নিয়োজিত থাকবে। সাঘাটা উপজেলায় তিনজন ও ফুলছড়ি উপজেলায় দুজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।

নিরাপত্তার জন্য নির্বাচনী এলাকায় মোট ১ হাজার ২৪২টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে। ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে দুটি করে ২৯০ এবং ৯৫২টি ভোটকক্ষের সবকটির ভেতরে (গোপন বুথ ছাড়া) বসানো হয়েছে সিসিটিভি। 

এরমধ্যে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন এবং ফুলছড়ি উপজেলা গজারিয়া, ফুলছড়ি, এরেন্ডাবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়ন দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় ওই এলাকায় জিএসএম রাউটার ব্যবহার করে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ভোটগ্রহণের দিন ও আগের দিনের দৃশ্য সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবে ঢাকার নির্বাচন অফিস।

উপনির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য সর্বাত্মক নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রগুলোতে ইতোমধ্যেই ভোটগ্রহণের সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার তৈহিদুল ইসলাম  বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বর্পূ স্থানসমূহে আজ থেকেই পর্যাপ্ত পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ২৩ জুলাই সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়।