শিক্ষা খরচ বাড়িয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান : ইউনেসকো
বাংলাদেশে বেসরকারি বিদ্যালয় ও পাঠদান প্রতিষ্ঠানের বৃদ্ধি পরিবারপিছু শিক্ষা খরচের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো। মঙ্গলবার প্যারিস ও ঢাকা থেকে একযোগে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে পরিবারে প্রাইভেট পড়ানোতে খরচ ২০০০ সালে ছিল ২৮ শতাংশ। ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪ শতাংশ। শহরাঞ্চলে এই খরচ ৪৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৭ শতাংশ হয়েছে। যেখানে দেশের প্রাক প্রাথমিকেই ২০ শতাংশ শিশুর প্রাইভেট টিউটর রয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শিক্ষা খাতে খরচ বাড়ার এই প্রবণতা উঠে এসেছে ইউনেসকোর এই প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশ সরকার বার্ষিক দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আড়াই শতাংশের কম খরচ করেছে শিক্ষা খাতে। যা জাতিসংঘের সুপারিশ করা ৪ শতাংশ সীমার অনেক নিচে। আর এ কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে মোট খরচের ৭১ শতাংশের জোগান আসে পরিবারগুলো থেকে। যা শিক্ষা খাতে পরিবারপিছু খরচের বিবেচনায় বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ হার বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষা খাতে পরিবারপিছু বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খরচ করা অঞ্চল হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া। যেখানে শিক্ষা খাতের খরচের ৩৮ শতাংশের জোগান দেয় পরিবারগুলো। এরমধ্যে নেপালে এই খরচের হার ৫০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৫৭ শতাংশ। ইউনেসকো বলছে, বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বেসরকারি উদ্যোগ বেড়ে চলেছে। যারা প্রায় ক্ষেত্রেই বেশি খরচে শিক্ষার ব্যবস্থা করছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় দেশের অর্ধেক শিশু বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়, যার মধ্যে আছে নিবন্ধিত বেসরকারি স্কুল, প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেন, এনজিও পরিচালিত স্কুল ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় স্কুল।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর অতিরিক্ত চাপ এবং সরকারি বিদ্যালয়ের পাঠদানে অসন্তোষ রয়েছে। এ কারণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি বাড়ছে বলে ইউনেসকোর পর্যবেক্ষণ। প্রাইভেট পড়ানো ও শিক্ষা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিকাশও এই বেসরকারি শিক্ষার প্রসারে ভূমিকা রাখছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের শিক্ষার সবচেয়ে বেশি প্রসার হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে। যেখানে বেসরকারি মালিকানায় বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৯ হাজার, যেগুলো কিন্ডারগার্টেন হিসেবে পরিচিত। যা মোট বিদ্যালয়ের ২২ শতাংশ। এছাড়া মাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের হার ৯৪ শতাংশ, যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কারিগরি শিক্ষায়ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শক্ত অবস্থান রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই খাতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩ হাজার থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। অথচ এই শিক্ষা খাতে সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৯০০টি। ইউনেসকোর প্রতিবেদন বলছে, সংখ্যায় বাড়লেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মানের দিক থেকে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। সরকারি পাঠদান ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের ৯৪ শতাংশ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জন করে থাকে। এর তুলনায় বেসরকারি পাঠদানের মধ্যে থাকা শিক্ষার্থীদের মাত্র ৩৬ শতাংশ একই উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশে শিক্ষকরাও মূলত বেসরকারি ব্যবস্থাপনাতেই প্রশিক্ষিত বলে এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোর ৬০ শতাংশই বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৪০ শতাংশের বেশি তাদের বিএড ডিগ্রি নিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ থেকে। শ্রম বাজারে যোগ্যতার চাহিদা বাড়ায় এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা প্রাপ্তির ঘাটতির কারণে বেসরকারি খাতে পাঠদান ও শিক্ষা প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এমএসএম / জামান
ইবি'র তিন বিভাগে ৩০ আসন বৃদ্ধি
জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে আগুন
জবিস্থ চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ নির্বাচন: সাধারণ সম্পাদক পদে তরিকুল ইসলামের ইশতেহার ঘোষণা
মাংসের খাটিয়ায় কুকুর, ছবি তুলতেই সাংবাদিককে হুমকি
ইবি'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
ঢাবির একাডেমিক কার্যক্রম ২ সপ্তাহ বন্ধ, হল ত্যাগের নির্দেশ
ভিকারুননিসায় রোববারের প্রথম-নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত
ইবি'র ৪৭তম জন্মিদনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ
জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী অবন্তির ভাবনা
জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদপ্রার্থী ইমনের ভাবনা
ছাত্রদলের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল শিশুদের সাপ্তাহিক স্কুল উদ্বোধন