অন্তঃসত্ত্বা নিশাত মনি হত্যার সুষ্ঠু বিচার চায় পরিবার
স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনে পেকুয়ার টইটং ইউনিয়নে স্বামীর বাড়িতে খুন হওয়া ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নিশাত মনির ঘাতক স্বামী সেলিমকে বাঁচাতে মামলার এজাহারে আত্মহত্যার প্ররোচনা বলে উড়িয়ে দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। নিহত নিশাত মনি (২২) কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ মধ্যম অমজাখালী গ্রামের আবদু শুক্কুরের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূর মা হাছান আরা দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, পাষণ্ড স্বামী সেলিম আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে নিয়মিত নির্যাতন করত। খুন হওয়ার আগেও আমার মেয়ে আমাকে একাধিক বার ফোন করে নির্যাতনের কথা বলেছে। কিন্তু আমি স্বামী স্ত্রীর সংসারের মনোমালিন্য বলে উড়িয়ে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত ওই পাষন্ড আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আর এখন ওই পাষন্ডকে বাঁচাতে স্থানীয় কতিপয় রাগববোয়াল ও পেকুয়া থানা পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা তৎপর হয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে মিশনে নেমেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘটনা শুনে আমরা পেকুয়া থানায় হাজির হলে থানার একজন এসআই আমার ছেলের মোবাইল কেড়ে নেয়। তড়িগড়ি করে থানায় একটি এজাহার লিখে তাতে আমার দস্তখত নেন একজন অফিসার।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই নিশাত মনিকে অমানুষিক নির্যাতন করে খুন করে পাষন্ড স্বামী সেলিম। ওইদিন সকালে নিশাত মণি (২২)’র মৃতদেহ উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নিহতের পরিবারের সদস্যরা। সাথে যান স্থানীয় বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনিরুল আলম ও ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নাছির উদ্দীন।
মনিরুল আলম ও নাছির উদ্দীন জানান, নিহত গৃহবধূ নিশাত মনির ডান হাতের কব্জি ভাঙ্গা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তে নিহত গৃহবধূর গর্ভে জমজ সন্তান পাওয়া গেছে। তারা বলেছেন, অমানুষিক নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে নিশাত মনির।
নিহতের পিতা আবদু শুক্কুর বলেন, ২ বছর ৬ মাস আগে সামাজিকভাবে কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড পুতিন্যার পাড়ার মৃত ফজল করিমের ছেলে সেলিমের (৩০) সাথে বিয়ে হয়েছিল নিশাত মণির। বিয়ের পরে স্বামী পেকুয়া উপজেলা টৈটং ইউনিয়নের ধনিয়া কাটা গ্রামে নতুন বাড়ি করলে নিশাত মনি সেখানে চলে যায়। মেয়ে প্রায় সময় নির্যাতনের কথা বললেও আমরা তেমন গুরুত্ব দিইনি। ওই পাষন্ড আমার মেয়েকে খুন করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এদিকে, ঘাতক সেলিমকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণসহ খুনের প্রকৃত রসহ্য উদঘাটনে তৎপর বলে জানিয়েছেন পেকুয়া থানা পুলিশ।
জামান / জামান