হাইমচরে লক্ষ্যমাত্রা চেয়েও বেশি আমন উৎপাদন
চাঁদপুর জেলার হাইমচরে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ধান কাটা শেষ হবে বলে ধারণা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস। তবে সময়মতো রোদ-বৃষ্টি থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলসহ আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা, কৃষ্ণপুর, আলগী উত্তর ইউনিয়নের লামচরী, নয়ানী ও ভিঙ্গুলিয়ায় অনেক অনাবাদি জমিতে আবাদ হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দে রয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার হাইমচরে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২৪৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২২৫০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।উপজেলার পূর্বচর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক সাইজুদ্দিন বেপারী বলেন, এবার ৮ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলে ধানের ভর্তুকি দিতে হবে না।
একই এলাকার কৃষক জামাল উদ্দিন ও আবদুস সোবহান জানান, কিছুটা ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। যদি ইঁদুরের উপদ্রব না থাকতো তাহলে আমন ধানের ফলন আরও ভালো হতো। ১১-১২ বিঘা জমি চাষ করে ৪১-৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদেও চাষাবাদে লাভ হবে আমরা আশাবাদী।
স্থানীয় কৃষকরা জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেকেই ফলন নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও কেটে গেছে। এ বছর ফসলের ক্ষেতে রোগ কিংবা পোকার কোনো আক্রমণও ছিল না। তাই একদিকে যেমন উৎপাদন ভালো হয়েছে, অন্যদিকে বাজার দাম নিয়েও আগাম খুশি এখানকার কৃষকরা। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে আগামীতে ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে।
ধান চাষি আহমাদুল্লাহ ছৈয়াল বলেন, ধান পেকে গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাটবো। এবার ফলন অনেক ভালোর দিকে। তাই একর প্রতি ২০-২৫ মণ ধান উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছি। চরভৈরবী ইউনিয়নের জালিয়ার চর এলাকার ধান চাষি মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় ধানের ফলন অনেক ভালো। আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো। তবে কিছুটা ধানে পোকা আক্রমণ করলেও তাতে তেমন ক্ষতি হবে না। কারণ এবার ধানের ফলন হয়েছে ভালো হয়েছে, বাজারে দামও অনেক ভালো। আশা করি, লাভবান হতে পারবো।
হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি সাকিল খন্দকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ-ও নেত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বাংলার কৃষক কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকেন। এরমধ্যে প্রণধনা কর্মসূচি হচ্ছে একটি এই প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে ধানের আবাদ বৃদ্ধি এবং ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। আমাদের এবছর হাইমচর উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২৪৫ হেক্টর আমরা আবাদ করেছি ২২৫০ হেক্টর জমিতে।আমরা বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমরা এইবছর ৫ হেক্টর জমিতে বেশি আমন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি । ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের আমন আবাদে আরও আগ্রহ বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমাদের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের পাশে থাকেন এবং তাদের কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এমএসএম / এমএসএম