ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের দুর্নীতির সহযোগী সন্ত্রাসী হাফিজ


শামীম আহমদ photo শামীম আহমদ
প্রকাশিত: ২৭-১২-২০২৩ রাত ১২:১৪

শিশুদের অমানুষিক নির্যাতন শ্রেণীকক্ষে বিচার বৈষম্য কোচিং বাণিজ্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অপ্রয়োজনীয় ফি উত্তলন স্কুল থেকে বিভিন্ন উপায়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে ঢাকার ধানমন্ডির মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের নামে।

স্কুলটির সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা আজ দৈনিক সকালের সময়ের ঢাকা কার্যালয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। লিখিত অভিযোগটির সমর্থনে স্কুলটির বিভিন্ন শ্রেনীর ৩০জন ছাত্র-ছাত্রীর স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগ প্রদানকালে সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তানজিলা দৈনিক সকালের সময়ের কাছে মৌখিক স্বাক্ষ দিয়ে বলে- আমাকে ম্যাডাম তার কোচিংয়ে পড়তে বলছে। অথবা তার বলে দেয়া শিক্ষকের কোচিংয়ে পড়তে হবে, না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করায়ে দিবে। এছাড়াও আমার এবং সহপাঠীদের নিকট থেকে প্রায় সময়ে অপ্রয়োজনীয় ফি উত্তোলন করছে। এ-সব বিষয়ে আমি ৫মাস আগে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করি, সেই অভিযোগে করার কারনে আমার ওপরে আরো ক্ষেপেছে প্রধান শিক্ষক ম্যাডাম। এর পরে আমাকেসহ প্রায় ৩০জন ছাত্র ছাত্রীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে র‍্যগিং করছে। কক্ষের ভেতর থেকে দরজার গেটে তালা লাগিয়ে দু'জন সহকারী শিক্ষক সাথে নিয়ে আমাদের ওপরে নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের নিকট থেকে সাদা কাগজে লিখিত স্বীকারোক্তি নিতে "চেয়েছে ম্যাডামের কোন দোষ নেই, তারা কোচিং করতে চাপ দেয় না" ইত্যাদি। বিশেষ করে আমাকে বলছে তার স্কুল থেকে টিসি দিয়ে লেখা পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি আমাকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। গুম করে দেবে। কেউ কিছু করতে পারবে না। সেখানে উপস্থিত সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবিবা তখন বন্দী ছাত্র ছাত্রীদের হুমকি দিয়ে বলে তার স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জে এবং তার স্বামীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর সাথে বন্ধুত্ব আছে। তোমাদের ৩০জন ছাত্র ছাত্রী সকলকেই টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিলেও কেউ কিছু করতে পারবে না।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে দৈনিক সকালের সময় মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সকালের সময়েকে বলেন- "এমন কোন অভিযোগ থাকলে আমাদের অধিদপ্তরের কর্মকর্তার দেখবেন তারা বিচার সালিশি করবে, আমি সরকারি চাকুরী করি এ বিষয়ে আমি আপনার সাথে কিছুই বলবো না। আমার সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে আসেন। আমার স্কুলের শিক্ষার্থী আমি যেমন খুশি তেমন করে চালাবো তাতে সাংবাদিকদের কি? প্রধান শিক্ষককে ফোন করার কিছুক্ষণের মধ্যেই হাফিজ নামের এক লোক +8801847289501 ফোন করে এই প্রতিবেদককে হত্যার হুমকি দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা জায় এই হাফিজ হেড শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের জামাই। স্কুলের আশেপাশের লোকেরা বলছে তিনি একজন সন্ত্রাসী। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে একটি অভিযোগ জমা পরেছিলো। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে কর্পোরেশন কতৃপক্ষ একটা তদন্ত করেছিলো। কর্পোরেশনের অঞ্চল ৩ এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফাতেমা তুজ জোহরা স্বাক্ষরিত ২৯ অক্টোবরের একটা চিঠি পর্যালোচনা করে দেখা যায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওই সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন তদন্ত প্রতিবেদন মেয়ের মহোদয়ের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যম মন্তব্য করার সুযোগ একেবারেই নেই। তিনি প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবিরের মোবাইল নম্বর সরবরাহ করে তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। 

প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি নিয়ে স্কুলটির পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি সৈয়দ আমিনুল হোসেন খোকন দৈনিক সকালের সমকে বলছেন- প্রধান শিক্ষক! এ একটা চরিত্রহীন মহিলা, ওরে পিটাইয়া ওর পিঠের চামড়া তুলে দেব। বহু অভিযোগ ওর নামে আছে। এখন তাপস ভাইয়ের নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত আছি তাই এই মহিলার বিচার করার সময় পাচ্ছি না। অভিযোগ আমি জানি, কোচিং করায় আর টাকা উঠায় এই মহিলা। ওই চরিত্রহীন মহিলাকে বিচার করবো তার আগেই সে আমার কাছে আইসা পা ধরে মাফ চায় আর বলে আমাকে রক্ষা করেন। আমি স্কুলটি ভালোভাবে পরিচালনার জন্য নানাবিধ চেষ্টা করি। দিন রাত খাটুনি দিয়ে স্কুলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চাই, আর ওই মহিলা (প্রধান শিক্ষক) শুধু বদনাম আর দুর্নীতি করে। এই নির্বাচনটা যাক (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) তার পরে মহিলাকে স্কুল থেকে বের করে দেব। স্কুলের সাধারণ অভিযোগ বিচার এসব তো আমারই দেখার দ্বায়িত্ব। মাননীয় মেয়র মহোদয় (ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়ের) আমাকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন স্কুলটি ভালোভাবে পরিচালনার জন্য। আমিই এসব কিছু নিষ্পত্তি করবো ইনশাআল্লাহ।

স্কুলটির সহকারী শিক্ষক রফিকের মোবাইলে ফোন দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোন সারা পাওয়া যায়নি। সরজমিনে গিয়ে স্কুলটির সহকারী শিক্ষক লায়লা আফরোজের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়েছিল এই অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন কিনা। তিনি সকলের সময়কে বলেন- গত ৩ অক্টোবর বহু শিশু শিক্ষার্থী র‍্যাগিংয়ের স্বীকার হয়েছে প্রধান শিক্ষক স্কুলের একটি কক্ষ বন্দী করে র‍্যাগিং করে। আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলায় হেড ম্যাডাম আমাকে সবসময় নোংরা ভাষায় গালাগাল করে। বহু বার হুমকি দিয়েছে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করবে পুলিশ নিয়ে। আমি টিও স্যারকে লিখত অভিযোগ দিয়েছি, টিও স্যার কিছু করতে সচেষ্ট হয়নি।  টিও স্যার একদিন আমাদের স্কুলে এসেছিলেন তবে কোন ফল হয়নি। টিও স্যার আমাকে কিছু কথা বলছেন তা আমি সংবাদমাধ্যমে বলতে পারি না। যেহেতু আমি সরকারি চাকুরী করি। একদিন সভাপতির উপস্থিতিতে আমাকে বলছে আমার কাপড় খুলে রাস্তায় নামাবে। হেড শিক্ষক ম্যাডামের এমন নোংরা কথা কথা ছাত্র ছাত্রীরাও শুনেছে। আমার সহকর্মী সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবিবা চেয়ার আমার গায়ে ছুড়ে মেরেছে। উম্মে হাবিবার চাচাশ্বশুর প্রধানমন্ত্রীর এপিএস গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবিবার ভয়ে ওখানে কারো মুখ খোলার সাহস নাই।

প্রধানমন্ত্রীর অফিসে সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবিবার স্বামীর কে আছে এবং প্রধানমন্ত্রীর এপিএসের সাথে কি সম্পর্ক তা জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে এই শিক্ষকের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দৈনিক সকালের সময়ের পরিচয় দিয়ে হটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানোর পরে তার স্বামী গাজী ইখতিয়ার হোসেন দৈনিক সকালের সময়ের মোবাইলে ফোন করে। তিনি বলেন:- আমার ওয়াইফ অসুস্থ। লায়লা ম্যাডাম আমার ওয়াইফকে অপমান করছে। ১৭ বছর আমাদের বিয়ের বয়স। ১৩ সালে আমার ২মাস বয়সী একটি ছেলে মারা যায়। গত ২বছর আগে আরো একটি মেয়ে শিশু ১মাস বয়সে মারা যায়। কিছুদিন আগে আমার ওয়াইফ সন্তান সম্ভাবা হয়েছিলো কিন্তু লায়লা ম্যাডাম আমার ওয়াইফের গায়ে চেয়ার ছুড়ে মারাতে দুই মাসের গর্ভধারণকৃত সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। সেই অপমানে আমার ওয়াইফ নিজের মাথার চুল নিজেই কেটে ফেলছে। আমরা এখন আছি খুব যন্ত্রনার মধ্যে। আগে যুবলীগের সাথে জড়িত ছিলাম। যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করছি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হব। ডলারের ব্যবসা করতাম, এখন ডলারের ব্যবসা ভালো না তাই ছেড়ে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর এপিএস গাজী লিকু আমার চাচা। লিকুর কাছে জিগাইবেন গাজী ইখতিয়ার হোসেন কে? লিকু আমার ওয়াইফ স্বরনীকাকে (উম্মে হাবিবা) মা বলে ডাকে। আমার চাচা দাদা নানা সকলে চেয়ারম্যান ছিলো। আমি রাজনৈতিক পরিবারের লোক। আপনারা সাংবাদিকরা সত্য কথা লিখবেন। দুই পক্ষের কথা শুনে বিচার করবেন। আমি লায়লা ম্যাডামকে জিগ্যেস করবো আমার ওয়াইফকে অপমান কেন করলো? লায়লা ম্যাডাম হেড শিক্ষককে ফোন দিয়ে বলছে ৬মাস পরে আমরা ক্ষমতায় আসলে তখন যা করতে হয় করবো। ওই ম্যাডাম তো বিএনপির লোক। আপনাদের বরগুনায় বাড়ি। ৬মাস পরে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেও না আশা করি। ঘটনার সুত্র হয়ে কোথা থেকে তা আপনি জানেন না, লায়লা ম্যাডাম কোচিং করানোর জন্য স্কুলের দুইতলার দুটি রুম চেয়েছিলো হেড ম্যাডামের কাছে। হেড ম্যাডাম দেয়নি। সভাপতির কাছেও চেয়েছিলো, সভাপতি বলছে কোচিং করানোর অনুমতি নাই সরকারি ভাবে তাই দেয়া যাবে না। এর পরে ওই লায়লা ম্যাডাম সিটি করপোরেশনের কিছু লোক সেট করে একটা কি তদন্ত কটাইছে ওই তদন্তে গাবলা আছে। লায়লা ম্যাডাম কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেয়াইছে। সিটি কর্পোরেশন তদন্ত করার কে? স্কুলের বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন তদন্ত করাবে কেন? স্কুলের ঘটনা দেখার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আছে। সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবিবার স্বামী গাজী ইখতিয়ার হোসেনের সাথে পৌনে ১ঘন্টার কথোপকথন দৈনিক সকালের সময় রেকর্ড করে সংরক্ষণ করছে।

এমএসএম / এমএসএম

অখণ্ড বিজয়নগর রক্ষার দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাংবাদিককে হুমকি

ভূরুঙ্গামারীতে বসতভিটা দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রায়গঞ্জে ৬ লাখ টাকাসহ বিকাশ কর্মী নিখোঁজ: বাগান থেকে মটর সাইকেল উদ্ধার

সাংবাদিক জগতের নক্ষত্র ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমনঃ সিআরএ

কাপ্তাইয়ে ১৪ হাজার ৭শত ৪২ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে

কসবায় বিদেশি মদসহ নারী আটক

লালমাইতে বিয়ে করতে এসে ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিলো বর

কুতুবদিয়ায় এনসিপি নেতা হেলালিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

লায়ন নুর ইসলামের নির্বাচনী এলাকা নড়াইল ২ এ ভি,পি নূরকে ফুলের শুভেচ্ছা

বোদায় যৌথবাহিনীর অভিযানে জরিমানা ও হাসপাতাল সিলগালা

শালিখায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মূল্যায়ন ও সমাপনী অনুষ্ঠান

গোপালগঞ্জে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠিত