ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

ভর্তার সৃজনশীল প্রকাশ ফারজানা বাতেন এর বই শত ভর্তার ভুবনে


নিজস্ব সংবাদদাতা photo নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১৫-৫-২০২৪ দুপুর ৩:১৬

‘যাঁর রুচি ভালো, তাঁর সব কাজই সুন্দর হয়। রুচিকে প্রজ্ঞায় এবং পরিমিতি বোধে উন্নীত একজন সার্থক রন্ধনশিল্পী আবৃত্তিকার ফারজানা বাতেন এর রান্না বিষয়ক বইও অনিন্দ্যসুন্দও হবে বলার অপেক্ষা রাখে না। ফারজানার রান্না বিষয়ক পরামর্শ পাঠকের রুচি বদলে দেবে বিশ্বাস করি।’ লেখক, রন্ধনশিল্পী ও আবৃত্তিকার ফারজানা বাতেন সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন আবৃত্তিশিল্পী রবিশঙ্কর মৈত্রী। ভারতের কেনস্টার এর কর্পোরেট শেফ শর্মিষ্ঠা দে লিখেছেন- ‘আমার বাংলাদেশ ভ্রমণের মধ্যে প্রধান কারণ থাকে বাংলাদেশী খাবার চেখে দেখা, কিছু লেখাপড়ার কাজ করা, বিভিন্ন পত্র পত্রিকার জন্য উপযুক্ত রান্নার রেসিপি সংগ্রহ করা, বাংলাদেশের কিছু টিভি চ্যানেলের জন্য রান্না করা আর ঘোরা। সবটার সাথেই ফারজানা আমার সঙ্গী হন। তাঁর বইয়ের সমস্ত আইটেমের নাম পড়ে তো মুখে জল! কি অসাধারণ সমস্ত পদের সম্ভার নিয়ে এসেছে ফারজানা। যেমন- সজনা পাতার ভর্তা, ইলিশের ল্যাজা ভর্তা, মিষ্টি কুমড়োর ভর্তা, ক্যাপসিকাম শুঁটকি ভর্তা, তেলা কচু পাতার ভর্তা, মাটন কিমা ভর্তা, সিলেটি আন্নামুখি ভর্তা ইত্যাদি।’

সম্প্রতি  কলকাতার বিন্দু বিসর্গ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের লেখক, রন্ধনশিল্পী ও আবৃত্তি শিল্পী ফারজানা বাতেন এর বিশেষ রেসিপির বই- শত ভর্তার ভুবনে। এ বইয়ের সূচনায় এসব মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতের লেখক দ্বয়। 

বইটির ভূমিকায় ফারজানা বাতেন ভর্তার নানা রকম আধুনিক সংষ্করণের কথা যেমন লিখেছেন তেমনি উল্লেখ করেছেন ভর্তা সম্পর্কে চমকপ্রদ নানা তথ্য। যেমন- আধুনিক বাংলায় ভর্তা শব্দটি শুধুমাত্র খাবার বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সংস্কৃত ‘ভর্ত্তা’ থেকে আগত ভর্তা শব্দের অর্থ- স্বামী। বাংলায় কোন কিছু পিষে ফেলাকে ভর্তা বলা হয়। অন্য জায়গায় লিখেছেন এক সময় বাংলায় ভর্তা ছিল নিম্ন আয়ের মানুষের খাবার। ভর্তা ছিল ঠেকে কাজ চালানো। ঘরে কিছু না থাকলে হাতের কাছে যা কিছু আছে তা ডলে একটু ভর্তা বানিয়ে নেওয়া হতো। এখন ভর্তা পাচ্ছে ঐতিহাসিক মর্যাদা। হুমায়ূন আহমেদ ভর্তা সম্পর্কে লিখেছেন- বেশিরভাগ ছোট মাছের জন্মই হয়েছে ভর্তা হবার জন্য। এতদিন শুনে এসেছে ‘ভাতে মাছে বাঙালি’ এখন শুনছি- ‘ভর্তা ভাতে বাঙালি’। এরকম রসে ভরপুর ভর্তা সম্পর্কে বহু তথ্য, উপাত্য ও রসবচনে সমৃদ্ধ বইটি। বইটিতে ভর্তার একশত রেসিপি ছাড়াও আছে খাবার সংরক্ষণ ও পরিবেশন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ টিপস। যেমন- মচমচে মাছ ভাজা তৈরি, চায়ের কাপের দাগ দূর করা, রান্না ও রান্নাঘরের প্রায়োজনীয় টিপস। ভর্তার মধ্যেও সৃজনশীলতা প্রকাশ দেখিয়েছেন লেখক ফারজানা বাতেন। যেমন রসুন পাতার ভর্তা, রসুন পোড়া ভর্তা, মাছ-রসুনের ভর্তা, টমেটো রসুনের ভর্তা, রসুন-কালিজিরা ভর্তা, রসুন লালমরিচের ভর্তা, শাপলা ডাঁটার ভর্তা, পোড়া রসুনের কাচকি শুটকি ভর্তা, বেলে মাছের ভর্তা, ছোট চিংড়ি ভর্তা, সজনে পাতা- রুই মাছের ভর্তা, শাপলা নারকেল ভর্তা, সজনে পাতার ভর্তা, কাঁঠালের বিচি চিংড়ির ভর্তা, পুঁই ফুলের ভর্তা, ব্রকলি-রুই ভর্তা ইত্যাদি। 

বইটির প্রচ্ছদ করেছেন অভিষেক চ্যাটার্জী। কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে বইটি, মূল্য ২৫০ টাকা।

Sunny / Sunny