কালীগঞ্জে যুবলীগ নেতার জবর দখলে প্রায় কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি নিরব ভুমিকায় প্রশাসন
গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি ও ফুটপাথ জবরদখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে পৌর যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় সরকারী সম্পত্তি ও ফুটপাথ জবরদখল হওয়ায় প্রায় সময়ই রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি ও দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। ওই কমিশনার বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার্স কোয়ার্টার ও কৃষি পরামর্শ কেন্দ্রের জমি দখলে নেওয়ার পায়তারা করছে। সরকারী সম্পত্তি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কালীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সভাপতি ও ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাদল হোসেন কালীগঞ্জ পৌরসভার বাজার বাসষ্ট্যান্ডে প্রথমে ব্যক্তি মালিকানাধীন দুইটি দোকান ভাড়া নেয়। পরে তার ছোট ভাই আলমের মালিকানায় রাজধানী হোটেল ও তার নিজের মালিকানায় হাজী কাচ্চি বিরিয়ানী এন্ড কাবাব ঘর নামে হোটেল ব্যবসা শুরু করে। বাদল হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী হোটেলের সামনের ফুটপাথসহ বাসষ্ট্যান্ডের প্রায় ত্রিশ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি ও হাজী কাচ্চি বিরিয়ানী এন্ড কাবাব ঘরের সামনে বাসষ্ট্যান্ডের প্রায় বিশ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি দখলে নিয়ে হোটেলের স্থাপনা নির্মাণ করে। হোটেলের জন্য সরকারী সম্পত্তি দখল ছাড়াও বাদল বাসষ্ট্যান্ডে একটি অফিস ঘর নির্মাণ করেছে, যা এলাকায় টর্চার সেল হিসেবে খ্যাত। এছাড়াও বাদল অগ্রিম জামানত নিয়ে ও সাপ্তাহিক এবং মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে প্রায় ১৫/২০ জন ব্যক্তিকে বাসষ্ট্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে আরো প্রায় অর্ধকোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছে। দখলের বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে বাদল তার আপন ছোট ভাই এমপি পুত্র ফয়সাল হত্যা মামলা ও অস্ত্র মামলার আসামী এবং ইয়াবা ডিলার এনামুল হক মনুর সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যবহার করে তার টর্চার সেলে নিয়ে তাদেরকে ভয়ভীতি, হুমকি প্রদানসহ মারধর করে। সম্প্রতি সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় বাদল হোসেনকে পৌর যুবলীগের সভাপতি পদ হতে বহিষ্কার করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় বাসষ্ট্যান্ডের সরকারী সম্পত্তি ও ফুটপাথ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ হলেও প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিরব রয়েছে। বর্তমানে বাদলের চোখ পড়েছে কালীগঞ্জ বাজার বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার্স কোয়ার্টার ও কৃষি পরামর্শ কেন্দ্রের জমির উপর। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জমি জবরদখল করে বাদল সেখানে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার পায়তারা করছে।
ফুটপাথ ও বাসষ্ট্যান্ডের সরকারী সম্পত্তি জবরদখলের বিষয়ে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাদল ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফুটপাথ এবং বাসষ্ট্যান্ডের সম্পত্তি জবরদখল করে হোটেলের স্থাপনা নির্মাণ করে রেখেছে এবং টাকার বিনিময়ে অন্যদেরকে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় সময়ই দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে ও মারাত্বক দূর্ঘটনা ঘটে। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে বাদল তার ছোট ভাই সন্ত্রাসী মনু ও তার বাহিনী দিয়ে তাদেরকে ভয়ভীতি ও মারধর করে। বাদলের জবরদখলে থাকা সরকারী সম্পত্তি ও ফুটপাথ উদ্ধার এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর বাদল হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, আমি কোন সরকারী জমি ও ফুটপাথ দখল করিনি। কালীগঞ্জে কোন ফুটপাথ নেই। আপনি এসব নিয়ে লেখালেখি করবেন না।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলু প্রতিবেদককে বলেন, ফুটপাথ ও বাসস্ট্যান্ডের সরকারী সম্পত্তি জবরদখলের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। দ্রুতই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ফুটপাথ ও বাসস্ট্যান্ডের সরকারী সম্পত্তি দখল মুক্ত করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম