ঢাকা সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিএনপি জামাত নাশকতায় জড়িত না থাকলেও গ্রেফতার করা হচ্ছেঃ কাউন্সিলর কাজী আতাউর


আমজাদ হোসেন photo আমজাদ হোসেন
প্রকাশিত: ৩১-৭-২০২৪ দুপুর ৪:১৯

কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সারা দেশে ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর পেক্ষিতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।
তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধ্বংসাত্নক কার্যকলাপের অভিযোগে নাশকতাকারীদের গ্রেফতার করছে কাশিমপুর থানা পুলিশ।  কিন্তু পুলিশের গ্রেফতার কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও  কাউন্সিলর কাজী আতাউর রহমান। 
তার ওয়ার্ডে বিএনপি জামাতকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে তার জবাব চাওয়া হচ্ছে পুলিশের কাছে। 
গত সোমবার ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করা হলে প্রশ্নের সম্মুখীন হন পুলিশ। তাকে ছাড়ার জন্য তদবিরও করা হয়।  এর দুই দিন আগে ৪নং ওয়ার্ডের জামাতের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হলে তার জন্যও তদবির করেন ওই কাউন্সিলর। তাদের গ্রেফতারে সহায়তা করার জন্য রহিম নামে পুলিশের এক সোর্সকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে কাউন্সিলরের অফিসে বেধরক পিটানো হয়।  তার ড্রাইভার রাসেল, অবৈধ গ্যাস ব্যবসায়ী আহমদ ভূইয়াসহ আরো ১০/১৫ জন মিলে কাউন্সিলর অফিসে ৩ ঘন্টা আটকে রেখে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে ট্রিপল নাইনে ফোন করলে কাশিমপুর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যপারে কাজী আতাউরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন , আমার ওয়ার্ডের বিএনপি জামাতের কেউই নাশকতার সাথে জড়িত নয়।  বিনা কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেওয়ার উল্টো  অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। কাশিমপুরে বিএনপি জামাত সবাইকে সাথে নিয়েই পথ চলতে চান বলে জানান আওয়ামী লীগের ওই নেতা।
বিচারের নামে রহিমকে শারীরিক নির্যাতন কেন করা হয়েছে  জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আমি একজন ম্যজিস্ট্রেটের ক্ষমতা রাখি। তার বিচার আমি করতেই পারি। দুই চারটা চড়- থাপ্পড় দিতেই পারি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রহিম বলেন, কাউন্সিলর আমাকে ফোন করে তার অফিসে যেতে বললে আমি যাই। পরে কাউন্সিলরের লোকজন রাসেল, আহম্মদসহ আরো ১০/১৫ জন আমাকে ধরে এলোপাতাড়ি  মারতে থাকে। পরে ৩ ঘন্টা আটকে থাকার পর ট্রিপল নাইনে ফোন করে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। পরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি।

১৮ সালের সিটি নির্বাচনের পর থেকে তার দাপট, লোকবল, অনৈতিক বানিজ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বাহু শক্তি  বহুগুনে বৃদ্ধি পায়। এরপর আবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত  হওয়ার পর তার দাপটে স্থানীরা  অসহায় হয়ে পড়ে।

 সাধারণ সম্পাদকের পর  কাউন্সিলর  হয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী। সে বাহিনী দিয়ে তিনি অবৈধ  গ্যাসের ব্যবসা, নতুন বাড়ি তৈরি করতে নেন  চাঁদা, দুপক্ষের বিবাদে বিশেষ ভূমিকা নেয়াসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। তার নিজস্ব বাহিনীর মধ্যে  ড্রাইভার রাসেল, গ্যাস আহমদ, আশাদুল, সোহেল  অন্যতম। এ বাহিনীর কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন জিল্লুর রহমান।  মাদক সেবন ও বিক্রিসহ এমন কোন হীন কর্ম নেই যে তার বাহিনীর লোকজন করে না। এলাকায় নতুন কোন স্থাপনা তৈরী হলে রাতের আধারে সোহেলসহ তার লোকজন ভেঙে ফেলে। পরে আতাউর কাজী এসে তার সমাধান করে দেয়। সে স্থাপনা তৈরীর দায়িত্ব দেয়া হয় তার লোকজনদের।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে কোটিপতি বনে গেছেন এই পাতি নেতা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর হয়ে সরা কে ধরা জ্ঞান করছে সে। এই পদ পেয়েই সিনিয়র নেতাদের অবমূল্যায়ন, অপমানসহ এলাকায় ঝুটের ব্যবসা দখল, কিশোর গ্যাং তৈরী, জমি দখল, বাসা বাড়ী থেকে ময়লা উঠানোর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের থেকে মাসে  চাঁদা নেন এই পাতি নেতা। এমারত, জামাল ভূইয়াদের জমি দখল, জিএমএস নামে এক পোষাক কারখানার ট্রাকভর্তি মালামাল আটকিয়ে তার বাহিনী  দিয়ে চাঁদা দাবীর ঘটনাও ঘটিয়েছে সে।

এ এলাকার বিভিন্ন পোষাক কারখানায় উৎপাদনের জন্য  আনা ব্যবহৃত গ্যাসের পাইপ থেকে এলাকার বাসাবাড়িতে রাইজার প্রতি ৩০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে  কয়েক হাজার সংযোগের মাধ্যমে  তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। এরপর মালিক হয়েছেন আরব ফ্যাশন নামে এক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর। 
 তার ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজে শ্রমিকদের ব্যবহার করেন। তার ফ্যক্টরীর এক নারী শ্রমিককে ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী  এমারত হোসেন ও আকতার মাওলানাকে চাপের মুখে পুলিশকে দিয়ে আটক করিয়েছে আতাউর। সকল শ্রমিকদের থানার সামনে এনে মিছিল করিয়েছে, থানা ঘেরাও এর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে । মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় ওই দিন সন্ধ্যায়  সাবেক কাউন্সিলর মোঃ রফিকের জিম্মাদারে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের। ব্যক্তি শত্রুতার জেরে নিরীহ দুই সম্মানিত ব্যক্তিকে ফাঁসানোর ঘটনায় সেসময় সমালোচনার মুখে পড়েন কাজী আতাউর। 

সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ  (৫মে২০২৩ ইং) নির্বাচনী কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে  তিনি ও তার বাহীনি কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এড.  আখতার হোসেনকে অপমান অপদস্ত করতেও ছাড়েনি। আতাউর তার নিজের বাহিনী দিয়ে পকেট কমিটি ঘোষণার তৎপরতা চালালে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ২০০৮ সালে সারদাগঞ্জ এলাকায় জায়গা দখল করতে গিয়ে খুন করেন এক মুক্তিযুদ্ধাকে। যা নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। সরকারি গ্যাস চুরির বিরুদ্ধেও তার নামে রয়েছে একাধিক মামলা। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এলে তিতাস কর্তৃপক্ষকে মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে সে। এ বিষয়েও রয়েছে আদালতে মামলা।

অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজির সময় কাশিমপুর স্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার হন তার কয়েক সহযোগী। আটকের পর পরই  তাদের মুক্ত করার জন্য থানায় ছুটে যান আরেক কাউন্সিলরসহ তিনি। তাদের মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন এই নেতা। এরপর থেকেই পুলিশের বিষয়ে নাখোশ তিনি।
দলীয় স্বার্থে সিনিয়র নেতারা তার বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি না হলেও কাজীর আচরণে সকলেই বিরক্ত। 
 জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে টাকা উঠিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট কাঙ্গালি ভোজের এক আয়োজনে গরু জবাই করার কথা থাকলেও রাতের আধারে  তিনি মহিষ জবাই করে গরু বলে চালিয়ে দেন। এ নিয়ে তিনি দলীয় সমালোচনায় পড়েন। বিষয়টি গড়িয়েছে মন্ত্রী পর্যায়ে।  তার পদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন অনেকেই। রাজনৈতিক ভাবে তার বাহিনীকে ব্যবহারের জন্য দলীয় পদে নাম লেখান তার সহযোগীদের৷ এ তালিকায় রয়েছে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী।  এরপরই তার বাহিনীর লোকজন এ এলাকায় দাপুটে রাজনীতিবিদে পরিনত হয়েছে। সকল ক্ষমতার কেন্দ্রে আসতে বিপুল পরিমান টাকা খরচ করে হয়েছেন কাউন্সিলর। এ পদে জয় লাভ করে এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট বলে  ক্ষমতা দেখান সাংবাদিকদের সামনে।
২০১৮ সালের সিটির দ্বিতীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে তিনি  পরাজিত হন, সেবার ভোট কেন্দ্র দখল করে সিল মারতে গিয়ে ভোটারদের হাতে গণপিটুনি খেয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দ্রুত কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
 
সিটির তৃতীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে জয় লাভ করার ১৫ দিনের মাথায় (১০ জুন'২৩)  তারই আপন ভাই আলমগীর জুয়া খেলার অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। আলমগীরের বিরুদ্ধে নেশা গ্রহন ও মাদক ব্যবসার অভিযোগও রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। আলমগীরকে ছাড়াতে ব্যর্থ হলে আবারও জড়ায় পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায়।

এমএসএম / এমএসএম

ভারত থেকে আসা মরিচের ট্রাকে অস্ত্র-গুলি, ২ ভারতীয় আটক

‎পাবনায় দু'পক্ষের সংঘর্ষে টেটা বিদ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু

জুড়ীতে টিকটকে প্রেম, দেখা করতে গেলে মেয়ের স্বজনেরা দিলেন বাল্য বিয়ে: থানায় মামলা

বেনাপোলে এয়ার পিস্তল ও গুলি সহ আটক ২

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকরি করে জাহিদুল পেয়েছে আলাদিনের চেরাগ

সুবর্ণচরে স্বেচ্ছাসেবকদল চরক্লার্ক ইউনিয়ন কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শ্রীনগরে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রচনা-ক্বেরাত প্রতিযোগিতা

ত্রিশালে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধের ঘুষ বানিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

নাঙ্গলকোটে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

দুমকীতে ধারের টাকা তুলে দিতে না পারায় স্ত্রীর আত্মহত্যা

‎সাঘাটায় এনসিপি নাম ভাঙিয়ে বাপ–ছেলের চাঁদাবাজির অভিযোগ

বালিয়াকান্দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ নিহত ১ আহত

জয়পুরহাট জেলার ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর ভূমিকা, করণীয় ও সরকারের সহযোগিতা শীর্ষক সেমিনার