ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

শিক্ষার্থীদের দমনে দুই টন পাথর আনেন বাঙলা কলেজ অধ্যক্ষ!


শাওন হুসাইন  photo শাওন হুসাইন
প্রকাশিত: ১০-৮-২০২৪ রাত ১১:৯

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমনে দুই টন পাথর আনার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম আমিরুল ইসলামের (পলাশ) বিরুদ্ধ। পাথর এনে তা কলেজের মেইনরোডস্থ ১০ তলা বিশিষ্ট ৭ ও ৮ নম্বর ভবনের ছাদে রাখেন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এসব পাথর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপরে নিক্ষেপ করারও পরামর্শ দেন তিনি। কলেজের একাধিক শিক্ষক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই দুইটি ভবনের ছাদে পাথর রাখা আছে। 

কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, পাথর আনানোর সময় অন্যান্য শিক্ষকরা এটির বিরোধিতা করেন। কিন্তু তিনি কারও কথার তোয়াক্কা করেননি। উপাধ্যক্ষ রাজি না হলে তাকে তিনি বলেছেন, ‘আমার কলেজের এইদিক দিয়ে আসলে ৫–৭টা লাশ পড়তে হবে। আমি ছাত্রলীগের ক্যাডার। আমি যা বলব তাই হবে।’

তারা জানান, ছোট পিকআপে করে দুই পিকআপ পাথর আনেন অধ্যক্ষ। এরপর সেগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে কলেজের ৭ ও ৮ নম্বর ভবনের ছাদে ওঠানো হয়। পরিকল্পনা ছিল, এদিক দিয়ে কোনও মিছিল গেলে ছাদের ওপর থেকে পাথর নিক্ষেপ করা হবে। তবে সেখান দিয়ে কোনও মিছিল না যাওয়া হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি।সরেজমিনে ৭ ও ৮ নম্বর ভবনের ছাদের ওপরে গিয়েও এসব পাথর দেখা যায়। তবে, শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বস্তা নিচে নামিয়েছেন। এখনও এই দুই ভবনের ছাদের ওপরে এসব পাথর রাখা রয়েছে বলে কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন। 

কলেজের একটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধ্যক্ষ নিজেকে মিরপুরের মাস্তান হিসেবে পরিচয় দেন। উনি শিক্ষক পরিষদের উন্মুক্ত মিটিংয়ে বলেছেন, ‘মিরপুরে দুইজন ক্যাডার। একজন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১৪ আসনের সাবেক এমপি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। আর অন্যজন আমি আমিরুল ইসলাম পলাশ।’ 

আরেক শিক্ষক বলেন, গত ৩ আগস্ট বিকেলে মাঈনুল হোসেন খান নিখিল একটি মতবিনিময় সভা ডেকেছিলেন। সেখানে অধ্যক্ষ কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষকদের নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষকরা এতে রাজি ছিলেন না। শিক্ষকরা কেন রাজনৈতিক সভায় যাবেন? তার ওপর দেশের এমন পরিস্থিতিতে! কিন্তু উনি দুপুর আড়াইটায় কলেজে সভা ডেকেছিলেন। পরে সেখান থেকে গাড়িতে করে সব শিক্ষকদের নিয়ে যাবেন। উপাধ্যক্ষ এর বিরোধিতা করায় তাকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন। অবশ্য এর পরদিন সকালে সেই সভাটি বাতিল হয়।

কলেজের একজন প্রভাবশালী শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষ কোনও শিক্ষককে সম্মান করতেন না। সব সময় সব শিক্ষকদের ছাত্রলীগের ক্ষমতা দেখাতেন। তিনি নাকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিল। কেউ কিছু বললেই তাকে হুমকি দেন। তাকে নাকি সরাসরি মন্ত্রী অধ্যক্ষ বানিয়েছেন। 

আরও একজন শিক্ষক বলেন, গণ্ডগোলের মধ্যে একদিন আমরা সবাই কলেজে ছিলাম। অধ্যক্ষ গণ্ডগোলের আভাস পেয়ে আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যান। আমরা পরে তাড়াহুড়ো করে কোনরকম বের হই। তিনি কলেজ থেকে বের হয়ে অসুস্থতার কথা বলে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন।

এ ছাড়াও, গত ১৩ জুলাই অধ্যক্ষ কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ত্যাগ করে ঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। নোটিসে লিখেন, ‘বিষয়টি অতীব জরুরি।’ 

এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন একাধিক শিক্ষক। তারা বলেন, এই অধ্যক্ষ কোনও শিক্ষকের পরামর্শ শোনেন না। তিনি আর্থিক ব্যয়ের হিসাব কারও কাছে দিতে ইচ্ছুক নন। এমনকি, উপাধ্যক্ষের সঙ্গেও কোনও পরামর্শ করেন না।জানা যায়, কলেজের কোনও খাতের টাকা বৃদ্ধি করতে হলে, সেটি স্টাফ কাউন্সিলের মিটিংয়ে অনুমোদন হতে হয়। প্রতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ব্যাগ, ব্যাচ, বইসহ কিছু উপহার দেয় কলেজ প্রশাসন। এর জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬০০ টাকা নেওয়া হত। এবছর বই হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি দিয়ে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তবে, টাকা বাড়ানোর বিষয়টি স্টাফ কাউন্সিলের মিটিংয়ে পাশ হয়নি। এমনকি, এ বিষয়ে কোনও শিক্ষক জানেন না। 

সূত্র জানায়, অধ্যক্ষের কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবির টাঙানো ছিলো। এ ছাড়াও, আমিরুল ইসলাম পলাশ দায়িত্ব নেওয়ার পরে তার চেয়ারের পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাথরের একটি আবক্ষ-মূর্তি রেখেছিলেন। তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে ওইদিনই রাতের আঁধারেই স্টাফ দিয়ে ছবি ও ভাস্কর্য সরিয়ে স্টোর রুমে ফেলে দেন। এখন তার রুমে ভাস্কর্য বা কোনও ছবিই নাই। 

তবে, অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম (পলাশ) এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের ওপর পাথর নিক্ষেপের পরামর্শ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়ে নোটিস দেওয়া হলেও তাদের কখনও আন্দোলনে যেতে নিষেধ করা হয়নি। 

শিক্ষকদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিতে জোরাজুরির বিষয়ে তিনি বলেন, কাউকে কোনও ধরনের হুমকি বা জোরাজুরি করা হয়নি। কিছু মানুষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। আমি গত ২৫ দিন ধরে অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। উপহারের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এত টাকা নেওয়া হয়নি। অংক ৫৫০ টাকার বেশি হবে না।

এমএসএম / এমএসএম

মাংসের খাটিয়ায় কুকুর, ছবি তুলতেই সাংবাদিককে হুমকি

ইবি'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

ঢাবির একাডেমিক কার্যক্রম ২ সপ্তাহ বন্ধ, হল ত্যাগের নির্দেশ

ভিকারুননিসায় রোববারের প্রথম-নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত

ইবি'র ৪৭তম জন্মিদনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ

জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী অবন্তির ভাবনা

জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদপ্রার্থী ইমনের ভাবনা

ছাত্রদলের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল শিশুদের সাপ্তাহিক স্কুল উদ্বোধন

শেকৃবিতে নিয়োগে আওয়ামী পুনর্বাসন, এলাকাপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ

উত্তরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

জকসুতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করবে সাংবাদিক সম্পদ

দীর্ঘ তিন যুগ পর জাবিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিল

জকসু নির্বাচন: ছাত্রশিবিরের ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা