ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

বেনাপোলে জুয়েলারী পণ্য শুল্কায়নে বৈষম্য ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা


সুমন হোসাইন, শার্শা photo সুমন হোসাইন, শার্শা
প্রকাশিত: ১৭-৮-২০২৪ দুপুর ৩:৪

বেনাপোল কাস্টমসে ইমিটেশন জুয়েলারি শুল্কায়নে বৈষম্য তৈরী হওয়ায় ভারত হতে আমদানিকৃত প্রায় ৯ কোটি টাকার জুয়েলারি পণ্য শুল্কায়নের অবহেলায় পড়ে রয়েছে বন্দরে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হেয়ালিপনায় দীর্ঘ ২ মাস ধরে পণ্য ছাড় করাতে পারননি আমদানি কারকগণ। ফলে কোটি কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ  ব্যবসায়ীরা। বন্দর সূত্র হতে জানা যায়,গত জুন মাসে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারত থেকে ৩টি চালানের মাধ্যমে আমদানিকৃত ৯ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৯৩ হাজার কেজি ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্য আমদানি হয়।

আমদানি পণ্য ৩টি কাস্টম  (IRM) গ্রুপ দিয়ে পরীক্ষণ কালে সোনালি রংয়ের কিছু জুয়েলারী পণ্য পাওয়া যায়। সাধারণত জুয়েলারী পণ্য ছাড় করনে দুই ধরণের শুল্ক আরোপ করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সোনালী রংয়ের ক্ষেত্রে ২০% গোল্ড প্লেটেড এবং ৮০% অডিনারী হিসাবে রিপোর্ট দিয়ে শুল্কায়ন করার কারনে বেনাপোলে আমদানিকারকগণ বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে করে বিগত ২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কোন আমদানিকারক বড় ধরনের ইমিটেশন পণ্য আমদানি করেননি। কিন্তু ২৩-২৪ অর্থবছরে সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে একটানা কয়েক শত কনসারমেন্ট পণ্য আমদানি হয়েছে। উক্ত পণ্য গুলির চালান শুল্কায়নে সোনামসজিদ কাস্টম কমিশনার ও কর্মকর্তাদের নিবীড় তত্তাবধায়নে পণ্যের চালান শতভাগ পরীক্ষণ সহ ল্যাব টেষ্টের মাধ্যমে গোল্ড প্লেটেড নির্ণয় করে সঠিক রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে অদ্যাবদি শুল্কায়ন করে আসছে। ASYCUDA World সার্ভার থেকে কাস্টম ডাটা শিট পর্যালচনা করে দেখা যায় শত শত কনসারমেন্ট সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে ৫ ডলারে অ্যাসেসমেন্ট হয়েছে। অথচ বেনাপোল বন্দরে একই পণ্যে শুল্কায়নে ৮ ডলার করা হচ্ছে কেন ?। কাস্টম রুলস মোতাবেক পূর্বে ৩ মাসের মধ্যে যদি কোন পণ্য একই উৎপাদনকারী দেশ হতে আমদানি করা হয় তাহলে ASYCUDA World সার্ভার ডাটা শিট পর্যালচনা করে যে ভ্যালুতে শুল্কায়ন হয়েছে সেই ভ্যালুতে যে কোন বন্দর ও কাস্টমসে অ্যাসেসমেন্ট করতে পারবে।

অথচ বেনাপোল কাস্টমস (IRM) ডিসির তত্তাবধানে আমদানি কারকগণের পণ্যের পরীক্ষণ রিপোর্টে ল্যাব টেষ্ট না করেই মনগড়া রিপোর্ট প্রদান করে সকল পণ্য গোল্ড প্লেটেড হিসাবে ৮ ডলারে ঘোষনা দিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে আমদানিকরকগণের প্রতিটি পণ্যের চালানে অবৈধভাবে অতিরিক্ত শুল্ক বেড়ে গেছে। যার কারনে আমদানিকারকগণ কাস্টমসের মনগড়া রিপোর্টে পণ্য ছাড় করেননি। ইমিটেশন পণ্যের ল্যাব টেষ্ট না করলে সঠিকভাবে শুল্ক নির্ধারন করার কোন উপায় নেই। আমদানিকারকগণ দাবি করেন পণ্যের চালান শতভাগ পরীক্ষণ ও ল্যাব টেষ্টের মাধ্যমে গোল্ড প্লেটেড বাছায় পূর্বক সঠিকভাবে শুল্কায়ন মেনে পণ্য ছাড় করাতে রাজি আছি। এদিকে আমদানিকারকরা পণ্য ছাড়াতে না পারায় যেমন পণ্যের গুণগতমান নষ্ট হচ্ছে তেমনি বন্দর ভাড়া সহ ব্যাংক লোনের অতিরিক্ত সুদ গুনতে হচ্ছে।

আমদানিকারকের তথ্য মতে বেনাপোল বন্দরে,ঢাকার মা ট্রেডার্স, রিপ্লেস লিমিটেড ও সালমান এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত জুন মাসে ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে তিনটি চালানে ৯২ হাজার ৭৪৩ কেজি ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্য আমদানি করে। এসব পণ্যের আমদানি মূল্য প্রায় ৯ কোটি টাকা। আমদানিকারদের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ একাধিকবার কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও কর্মকর্তারা কোন প্রকার সুদৃষ্টি না দিয়ে পণ্য ছাড় করনে অবহেলায় ফেলে রেখেছেন যা থেকে সরকার ৫ কোটি টাকার উর্দ্ধে রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব বাধ্যবাধকতায় জুয়েলারি পণ্য আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যার ফলে এই বন্দর আগামীতে রাজস্ব আদায়ে বড় ধস পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা মতামত প্রদান করেছেন। দেশের চলমান অন্য বন্দর হতে বেনাপোল বন্দরে ইমিটেশন জুয়েলারি শুল্কায়নে বৈষম্য তৈরী হওয়ায় কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে মা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জাবেদ হোসেন মোস্তফা জানান,অদ্য বছরে সোনামসজিদ হতে একাধিক ইমিটেশন পণ্য আমদানি করে ৫ডলারে ছাড় করেছি। ভারতে জিএসটি জটিলতা দেখা দেওয়ার করনে সোনামসজিদ বন্দরে আমদানি না করে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সাড়ে ৩২ টন পণ্য আমদানি করি। পণ্যর চালানটি দ্রুততার সহিত সোনামসজিদের ন্যায় বেনাপোলে পণ্য ছাড় করনে জন্য কমিশনার মহোদয় বরাবর গত (২৫ জুন)ল্যাব টেষ্টের আবেদন করি। কিন্তু উক্ত ল্যাব টেষ্টের আবেদনটি ডিসি অথেলো চৌধুরী কোন রকম বিবেচনা না করে নিজের মনগড়া অনুযায়ী রিপোর্ট প্রদান করে পণ্য খালাস নিতে বলেন। কিন্তু রিপোর্ট প্রদানের সময়ও তিনি আমদানিকরদের কোন প্রকার মতামত নেননি। যা সম্পূর্ন রুপে কাস্টমস শুল্কায়ন নিতী বহির্ভূত।অতপর আমি সহ আমার সাথে আরও দুজন আমদানিকারক কমিশনার মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে আমদানি পণ্যর রিপোর্ট বিষয়ে আলোচনা করি। এসময় হাউসের জেসি-১,জেসি-২ সহ (IRM) ডিসি অথেলোকে রিপোর্টের বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রধান করেন। পরবর্তীতে পণ্যের রিপোর্টটি ল্যাব টেষ্ট না করেই সোনালি রংয়ের ইমিটেশন জুয়েলারি গোল্ড প্লেটেড হিসাবে (IRM) ডিসি অথেলো চৌধুরী আমাদের মতামতের বাহিরে রিপোর্ট প্রদান করেছেন। যার ফলে পণ্য অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ার কারনে আমরা আমদানিকারকগণ এখন পর্যন্ত উক্ত পণ্যর চালানটি খালাস নিতে পারি নাই। এহেন পরিস্থিতিতে আমরা পূনরায় পণ্য খালাসের জন্য কাস্টম কমিশনারকে অবগত করলে তিনি আমাদেরকে কাস্টমসের বিরুদ্ধে NBR এ অভিযোগ সহ আদালতে মামলা করার পরামর্শ প্রদান করেন। জুয়েলারি আমদানিকারক রিপ্লেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমার আমদানি পণ্যের নমুনা ল্যাব টেস্টে পাঠানোর জন্য আমরা এক মাস আগে বেনাপোল কাস্টমের কমিশনার বারাবর লিখিত আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কাস্টম কর্তৃপক্ষ ল্যাব টেস্ট না করেই আমাদের পণ্য খালাস নিতে বলেন। জুয়েলারি পণ্য শুলায়নে সোনামসজিদে ৫ ডলার আর বেনাপোলে ৮ ডলার বৈষম্যর কারনে আমরা পণ্য খালাস নিতে অপারগতা জানায়। কাস্টম ও বন্দরের বিভিন্ন গোপন তথ্য থেকে জানা যায়,সোনামসজিদে ইমিটেশন জুয়েলারি আমদানিতে হাজার হাজার ট্রাক পণ্যের চালান কোন হয়রানি ছাড়ায় শুল্কায়ন করতে পেরেছে ব্যবসায়ীরা। এজন্য ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্য বেশিরভাগ সেখান দিয়ে প্রবেশ করেছে। অথচ দীর্ঘ ১০ মাস পর বেনাপোল বন্দরে বড় ধরনের ৩টি চালান প্রবেশ করিয়ে বিপদে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারকরা নিয়ম মেনে সঠিকভাবে পরীক্ষণ করে পণ্য খালাস নিতে পারছেন’না। তাহলে ‘সোনামসজিদে হয় অথচ বেনাপোলে হয়না বৈষম্য কেন ?। গুঞ্জন রয়েছে একটি মহল বেনাপোলে ইমিটেশন আমদানিতে কমিশনারারের আশ্বাসে একটি সিন্ডিকেট দাঁড় হয় এবং মোটা টাকায় তুষ্টের বিনিময়ে রফাদফা ফাইনাল হয়। কিন্তু বর্তমান কমিশনারের মেয়াদ ২বছর পার হওয়াতে যে কোন সময় বদলির আদেশ আসতে পারে, সে কারনে টাকার অংক অর্ধেকে নামার করনে মন তুষ্ট করতে পারেনি। এছাড়াও হঠাৎ করে সরকার পতনের কারনে সে পথ পন্ড হওয়াতে বর্তমান আমদানিকারকরা শুল্কায়নে বৈষম্যর রোষানলে পতিত হয়েছেন। দেশের বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে ব্যবসায়ীরা সমাধান চেয়ে NBR এর চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউসের যুগ্ন কমিশনার হাফিজুল ইসলাম বলেন,ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্য অ্যাসেসমেন্টে বৈষম্যর বিষয়টি আমার জানা নেই। আসলে এই পণ্যের ফাইল আমার কাছে আসে নাই ফাইল দেখেছেন যুগ্ন-কমিশনার-২ শাফায়েত হোসেন। আমি বিষয়টি শুনলাম এটা নিয়ে আলোচনা করবো। বিস্তারিত জানতে যুগ্ন-কমিশনার-২ শাফায়েত হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ মেলেনি। এছাড়াও কমিশনার আবদুল হাকিমের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাক্ষাৎ মেলেনি।

এমএসএম / এমএসএম

রায়গঞ্জে আসামী না হয়েও নুরু মিয়াকে হাতকড়া পড়িয়ে হেনস্তা করলেন এএসআই

আদমদীঘিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু

ফুলকুমার নদীতে ডুবে দুই ভাই বোনের মৃত্যু

নবীনগরে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে এসে শ্যালকের দা'য়ের কোপে আহত বোন জামাই

চট্টগ্রামে মহাসড়কের পানি নিস্ক্রানের নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

চলনবিলের কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে

গজারিয়া ইউনিয়নে বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলনী ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বকশীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতারকে কেন্দ্র করে হামলা

মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহে যুবকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩

তানোরে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় কার্পেটিং কাজ চলছে" কর্তৃপক্ষ নিরব

কমলগঞ্জে বিদ্যুতের ছিঁড়া তারে পিষ্ট হয়ে মহিলার মৃত্যু

উলিপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা চরাঞ্চলে বাদাম তুলছেন

ঘাঘর বাজারে উচ্ছেদ অভিযান, দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা অপসারণ