ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

খুলনায় ঘটেছে ব্যাপক সহিংস ঘটনা


আরিফুর রহমান photo আরিফুর রহমান
প্রকাশিত: ১৯-৮-২০২৪ দুপুর ১১:৫৩

একদফা আন্দোলনে খুলনায় পুলিশ ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন দেড়শ’র বেশী। হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে অগণিত। সরকারী, বেসরকারী, আধাসরকারী স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক কার্যালয়, বাসাবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। যার পরিসংখ্যান পুলিশের কাছে নেই। এছাড়া সহিংস ঘটনার পাশাপাশি ব্যাপক চাঁদাবাজীর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পাশাপাশি ডাকাত আতংকে রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন নগরবাসী। তবে সরকার পতনের সময়কালে কয়েকদিনে যে ঘটনা ঘটেছে এমন সহিংস ঘটনা আগে কোনদিন দেখেনি খুলনাবাসী ।
পুলিশ কনস্টেবল নিহত ঃ ২ আগষ্ট সন্ধ্যায় নগরীর গল্লামারী এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ কনষ্টেবল সুমন কুমার ঘরামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। 
কয়রায় নিহত ৩ ঃ গত ৫ আগষ্ট কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জিএম মহসিন রেজার বাড়ীতে দুই দফা হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।  পিটুনিতে উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম মহসিন রেজা, তার গাড়িচালক আলমগীর ও দেহরক্ষী ইয়াকুব নিহত হন। 
নগরীতে অগ্নিসংযোগ ঃ ৪ ও ৫ আগষ্ট খুলনায় মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, সাবেক এমপি শেখ হেলালউদ্দিন, খালিশপুরের বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের বাড়ি, নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তির নিরালা বাড়ী, খুলনা জেলা পরিষদ, খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা বেতার ভবন, অধিকাংশ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়, কাউন্সিলরদের অফিস ও বাসা বাড়ী, খালিশপুর থানা ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এদিন এবং পরের দিন ৫ আগষ্ট কমপক্ষে ২০-২৫টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। লবণচরা বোখারি পাড়ায় ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা পরিষদে রাখা সাংবাদিক প্রবীর বিশ^সের মোটর সাইকেলসহ ৫টি মোটর সাইকেল ও দুটি গাড়ী আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 
ভাংচুর ও লুটপাট ঃ এছাড়া আব্দুস সালাম মূর্শেদীর বাড়ি, খুলনা ক্লাব, মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক কামরুজ্জামান জামালের অফিস, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বাসভবন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেলের দখলকৃত পেট্রোল পাম্প, সাবেক এমপি এস এম কামাল হোসেনের নগরীর খালিশপুরের বাসভবন, দৈনিক দেশ সংযোগ পত্রিকা কার্যালয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের বাড়িসহ অসংখ্য ঘরবাড়ী, অফিস ভাংচুর করা হয়। 
পাইকগাছা উপজেলা ঃ এ উপজেলায় দেড় শতাধিক বাড়ী ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুর বাড়ী ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সোলাদানা ইউনিয়নের ব্যবসায়ী শিবপদ মন্ডলের বাড়ী ভাংচুর ও মাইক্রোবাস জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়। কাউন্সিলর গফ্ফারের বাড়ী ও রঞ্জন ভদ্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। নতুন বাজার কালিপুজা মন্দির, রাড়ুলি বাজারের সুজিত দত্তের বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুবৃত্তরা। এছাড়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইকবাল মন্টু, সরল বাজারে ছাত্রলীগ নেতা পার্থ চক্রবর্তী, ব্যবসায়ী সুরঞ্জন চক্রবর্তী, গদাইপুরের সমিরণ সাধু (বরফ কল), সপ্তদী সাহিত্য পাঠ ও একটি অনলাইন পত্রিকা অফিস, জয়দেব বৈদ্য, কপিলমুনী বাজারের চাউলের আড়তদার বিধান চন্দ্র ও সাধ চন্দ্র, রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী বিপুল সাধুর ‘নির্মল বিপণী’, গদাইপুরের প্রাইমারী স্কুল শিক্ষক সুপ্রিয় ঘোষ, একই এলাকার আনোয়ারুলের মাছের ঘের ভাংচুর, লুটপাট ও দখল করা হয়। সাবেক এমপি রশিদুজ্জামানের বাড়ী, কপিলমুনির সার ডিলার রাম প্রসাদ পাল, ধ্রুব রায় ও মতু রায় (দুই ভাই) এবং সন্তোষ সরকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদুল ইসলাম জিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মোলঙ্গী, আ’লীগ কর্মী আনোয়ার হোসেনসহ অসংখ্য বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। 
কয়রা উপজেলা ঃ এ উপজেলায় ৩২টি স্থাপনা হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদ বিজয় কুমারের মহেশ^রীপুর তেতুলতলা গ্রামের বাড়ীতে এবং সদর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়েছে। এই উপজেলায় কমপক্ষে ৩২টি সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। 
রূপসা উপজেলা ঃ এ উপজেলায় নেহালপুরের পিন্টু গোপাল দে’র বাড়ী ও ধর্মীয় উপাসানালয়, একই গ্রামের উজ্জল রুদ্র, দেবীপুর গ্রামে সংরক্ষিত ইউপি সদস্য লিপিকা দাস, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রাজ্জাক শেখ, নৈহাটী বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল আহসান শান্ত ও সজল দে, নেহালপুরের সাবেক ইউপি সদস্য শরীফুল ইসলাম বাবু, নৈহাটীর যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম টুলু, আব্দুর রাজ্জাক, পিন্টু গোপাল দেও বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাচুর ও লুটপাট হয়েছে। আইচগাতীর শাহপাড়ার সন্তোষ কুমার সাহার গোউন থেকে চাল লুট হয়েছে। পলাশ সাহা জগোর দোকান লুট এবং টিএসবি ইউনিয়নের উত্তম দাসসহ অসংখ্য বাড়ীঘরে হামলা, লুটপাট ও হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।  
ডুমুরিয়া উপজেলা ঃ সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দেও উলা ও সদরের দুটি বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। চুকনগর বাজাওে পাশাপাশি দুটি মোটর সাইকেলের শো’রুমে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চুকনগরের পুলিশবক্সসহ সদরও বিভিন্ন ইউনিয়নে আ’লীগ কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিক সুমন ব্রক্ষ্ম ও সাংবাদিক সুব্রত ফৌজদারের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দুটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক আক্তারুজ্জামানের বাড়ী ভাংচুরসহ তার মাকে বেধরক মারপিট করা হয়। তিনি খুবই অসুস্থ। এছাড়াও তেরখাদা উপজেলায় পানতিতা গ্রামে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মারুফ হাসানের বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, দাকোপ উপজেলায় হিন্দুদের কয়েকটি বাড়ী ভাংচুরসহ খুলনার ৯ উপজেলায় ব্যপক সহিংস ঘটনা ঘটেছে। কেসিসি মেয়রের বাড়িতে একটি আসবাপত্রও নেই ঃ খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের বাড়িতে একটি আসবাবপত্রও নেই। দু’দফা ভাংচুরের পর সব মালামাল লুট হয়ে গেছে। নীচ তলা থেকে তিনতলা পর্যান্ত ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। এতে কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ৬টি ফ্ল্যাটে ভাংচুর ও লুটপাট ঘটনার পর ওইসব পরিবার অন্যত্র চলে গেছেন। নগরীর মুন্সীপাড়া এলাকার বিলাশবহুল এ ভনটি এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের বিলাসবহুল ৬তলা ভবনে গিয়ে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের একজন দাড়োয়ান দাড়িয়ে আছেন। বাসভবনের চিত্রটি ভয়াবহ। ওই ভবনের নীচতলায় গাড়ি পাকিং, দ্বিতীয়তলায় মেয়রের ব্যক্তিগত অফিস এবং তৃতীয়তলায় তিনি এবং তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার বসবাস করতেন। দোতালা এবং তিনতলায় দুটি ফ্ল্যাল্ট একসাথে করে করা। এক একটা বড় বড় রুম। ফ্ল্যাটের প্রতিটি রুম ঘুরে দেখাযায় সেখানে ধ্বংসস্তুুপ। ফ্লোরে পড়ে রয়েছে অসংখ্য কাঁচের টুকরা এবং ভাংচুর করা আসবাবপত্র ও ফাইল, কাগজপত্র। আলমিরা ভেঙ্গে অর্থ, সোনাদানা লুট করে নিয়েগেছে দুর্বৃত্তরা। টিভি, ফ্রিজ, এসি, খাট, ওয়াস মেশিন, ফ্যান, বিছানাপত্র কিছুই নেই। জানালা ও গ্রীল কেটে নিয়ে গেছে লুন্ঠনকারীরা। ওই ভবনের চার, পাঁচ ও ছয়তলার মোট ৬টি ফøাটে ৬জন ভারাটিয়ার বাড়িতেও ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। মঙ্গলবার এসব নিঃশ্ব পরিবার অন্যত্র চলে গেছেন। জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের কর্তব্যরত দারোয়ান শওকত আলী বলেন, রবি ও সোমবার বিকালে দুইদফায় মেয়রের বাসভনে হামলা হয়। প্রথমদিনে ব্যাপক ভাংচুর হলেও লুটতরাজ কম হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে বিকালে হামলা হয়। বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লুটতরাজ চলে। সব নিয়ে গেছে কিছুই নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, লুন্ঠনকারীদের একটি বড় অংশ মালামাল বের করে কাষ্টমঘাটে বেধেঁ রাখা ট্রলারে করে রূপসা নদীর ওপারে নিয়ে গেছে। এছাড়া কিছু টোকাই বিভিন্ন মালামাল মাথায় ও রিক্সা, ভ্যানযোগে নিয়ে যায়। ওই ভবনে হামলার আগে ৫ আগষ্ট দুপুরে মেয়র ও তার স্ত্রী আত্মগোপনে চলে যান। তাদেরকে আর দেখা যায়নি।

এমএসএম / এমএসএম

দুর্গাপুরে সাংবাদিকদের সাথে ওসি‘র মতবিনিময়

শ্রীপুরে নির্বাচন অফিসের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

নারী নিপীড়ন ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে পিরোজপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ঘোড়াঘাটে অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে ২ শ্রমিকের তিন দিনের কারাদণ্ড

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হলেন কুমিল্লার আমিন উর রশীদ ইয়াছিন

কাউনিয়ায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আ.লীগ নেতাকর্মী সাথে কোন আঁতাত সহ্য করা হবে না: এস এম মামুন মিয়া

পিরোজপুরে ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে শিশুদের দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

জাতীয় ভিটামিন এ-প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন

কাপ্তাই বিদ্যুৎ বিতরণ অফিস থেকে ৩টি ট্রান্সমিটার চুরি, থানায় অভিযোগ

র‌্যাবের অভিযানে চোরাই গরু উদ্ধার "চার চোর আটক

বেসিকোর ব্যবস্থাপক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

রায়গঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সংবাদ সম্মেলন