ঢাকা মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পদায়ন নিয়ে চউক এ কর্মবিরতি, বিপাকে সেবাপ্রার্থীরা


চট্টগ্রাম অফিস photo চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ২৬-৮-২০২৪ দুপুর ৪:২৫

তিন প্রকৌশলীর পদায়ন নিয়ে অসন্তোষের জেরে কর্মবিরতি পালন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক/সিডিএ) কর্মচারীরা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছে সেবা প্রার্থীরা। ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চউকের একাধিক বিশ্বস্ত সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এমতাবস্থায় অফিস করছেন না সংস্থাটির রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। ফলে সহসাই সংকট সমাধানের পথ দেখছেনা সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, বিষয়টি এখন আমার হাতে নেই এটি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে, জনস্বার্থে সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। আশা করছি সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাগবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। 
  জানা যায় গত ১৫ আগস্ট এক অফিস আদেশে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদসহ তিনজন প্রকৌশলীকে পদায়নের প্রেক্ষিতে সংস্থার উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদসহ সাতজন কর্মকর্তা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে পত্র পাঠিয়েছেন।

পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সিডিএর আইন না মেনে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে স্থাপত্য পরিকল্পনা শাখা অর্থাৎ ভূমি ব্যবহার অনুমোদন শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে সেবাগ্রহীতারা সেবা থেকে বঞ্চিতসহ জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ১৫ আগস্ট সিডিএর সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকৌশল ও পরিকল্পনা বিভাগের কাজের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, গতিশীলতা আনয়ন, জনসেবা নিশ্চিতকরণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সিডিএর ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে রেখে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মঞ্জুর হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একইসাথে তিনি নির্মাণ বিভাগ ২, ৩ এবং ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানিং বিভাগের কাজের তদারকিও করবেন বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলামকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রকল্প বিভাগ ও এরিয়া প্ল্যানিং বিভাগের কাজের তদারকি করারও দায়িত্ব দেয়া হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী এজিএম সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ (চলতি দায়িত্ব) প্রদান করা হয়।

এই তিনজন প্রকৌশলীকে দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিত রাখা হয়েছিল বলে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, তারা নানা বঞ্চনার শিকার। তাই তাদেরকে অফিস আদেশের মাধ্যমে পদায়ন করা হয়েছে।

এদিকে সিডিএর পরিকল্পনা বিভাগের সাতজন জন কর্মকর্তা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে সম্প্রতি একটি পত্র প্রেরণ করেছেন। পত্রটিতে উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আবু ঈসা আনছারী, নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ জহির আহমেদ, সাইয়েদ ফুয়াদুল খলিল আল ফাহমী, সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ কামাল হোসেন, আশরাফুজ্জামান, জয়নুল আবেদীন, জান্নাতুল ফেরদৌস স্বাক্ষর করেন।

পত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) যোগ্যতাসম্পন্ন পরিকল্পনাবিদকে বাদ দিয়ে ‘প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ’ পদে বিধি বহির্ভূতভাবে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে পদায়ন করা হয়েছে। প্রকৌশলীরা এই পদায়ন বাতিল করারও আবেদন জানিয়েছেন।

পত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী এ জি এম সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৩য় গ্রেড স্কেলের পদ। যে পদে পদোন্নতির শর্ত হচ্ছে নগর পরিকল্পনায় স্নাতক ডিগ্রি এবং উপপ্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে নুন্যতম ১০ (দশ) বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু উক্ত পদে পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী এ জি এম সেলিমের ইতোপূর্বে পরিকল্পনাবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। পরিকল্পনা বিষয়ে কোনো স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও নেই। তিনি ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সদস্যও নন। ইতোপূর্বে মন্ত্রণালয় থেকে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্কে দৈনন্দিন কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল।

পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, সিডিএতে বর্তমানে সাত জন নগর পরিকল্পনাবিদ কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন বুয়েট ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হতে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত এবং পরবর্তীতে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন এবং সকলেই ইন্সস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের পূর্ণাঙ্গ সদস্য।

সিডিএ ২০২২ সালের ৮ জুন প্রচারিত গ্রেডেশন লিস্ট অনুযায়ী পরিকল্পনা এবং প্রকৌশল বিভাগকে দুইটি সম্পূর্ণ আলাদা বিভাগে ভাগ করে। দু'টি বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা হওয়া সত্ত্বেও এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে কীভাবে পদোন্নতি দেয়া হয় তা নিয়েও প্রকৌশলীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

পত্রে বলা হয় যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অগাস্ট থেকে সিডিএ চেয়ারম্যান অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। উক্ত পাঁচ প্রকৌশলী সব ধরনের যোগ্যতা থাকা স্বত্তেও সিডিএর উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবু ঈসা আনছারীকে বাদ দিয়ে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে পদায়ন করা হয়েছে। উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনছারী ২০০৮ সালে নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে সিডিএতে যোগদান করেন। পদোন্নতির শর্তানুযায়ী মোহাম্মদ আবু ঈসা আনছারী উপপ্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে পদন্নোতির উপযুক্ত হন ২০ নভেম্বর ২০১৫ সালে। বুয়েট থেকে পাশ করা এবং পরবর্তীতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা উপপ্রধান নগর পরিকল্পনাবিদকে বাদ দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে পদায়নের অফিস আদেশ বাতিলের জন্যও আবেদন করা হয়েছে ওই পত্রে। 

সুত্রে জানা গেছে,ইতোমধ্যে গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.নবীরুল ইসলাম বরাবরে এ অন্যায় ও বিধিবহির্ভুত পদায়ন বাতিলের জন্য (স্মারক নং-বিআইপি/প্রশা/সিডিএ/প্রেরিত পত্র/জি-১০(৫)/২০২৪-৪৪৮) অভিযোগ দাখিল করেছেন। 

পত্রে তারা দাবী করেন,প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি চউকে'র ৩য় গ্রেড স্কেলের পদ,যে পদে পদোন্নতির শর্ত হচ্ছে, নগর পরিকল্পনায় স্নাতক ডিগ্রী এবং উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাবে নূন্যতম ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০-এর সংজ্ঞানুযায়ী পরিকল্পনাবিদ অর্থ" যিনি পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীপ্রাপ্ত ও বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সদস্য হ'তে হবে। 

তারা আরো দাবি করেন যে,  একজন নগর পরিকল্পনার পক্ষে যেমন পুরকৌশলী কিংবা স্থপতি হিসাবে কাজ করার জন্য যৌক্তিকভাবেই কোন সুযোগ নেই। অনুরুপভাবে, একজন পুরপ্রকৌশলী ও স্থপতির ক্ষেত্রেও নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাবে দায়িত্ব পালন করবার সুযোগ প্রদান করাটা সম্পূর্নভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং পেশাগত সীমারেখার লংঘন বলে প্রতিয়মান। 

এদিকে চউকের একটি সুত্রে জানা গেছে, গত ২০০৮ সালে তৎকালীন চেয়ারম্যান শাহ্ মুহাম্মদ আকতার উদ্দীন চট্টগ্রাম মহানগরকে অপরিকল্পিত নগরায়নের সৃষ্ট উপদ্রব থেকে উদ্ধারের জন্য এই শাখায় নতুনভাবে লোকবল নিয়োগ করেন। সেসময় আবু ঈশা আনসারী ওই বছরের ২০ নভেম্বর সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাবে যোগদান করেন। এ শাখায় ওই সময় যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন তাদেরকে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত তারা "চউকের জনবল অবকাঠামোতে"বা তাদের নাম মূল "অর্গানোগ্রামে" নেই। ফলে তারা এখনো অস্থায়ী। বর্তমানে চউক কর্তৃপক্ষ যে অর্গানোগ্রামটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছে তা এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি,তা আদৌ দেখবে কিনা তা বলাবাহুল্য। এছাড়াও ভুমি ব্যবহার ছাড়পত্র অনুমোদনে যথেষ্ঠ কালক্ষেপনসহ ঘুষ দুর্ণীতির আতুরঘর হিসাবে এশাখাটি সৃষ্ট হওয়ার পর থেকে আলোচিত ও সমালোচিত।

এমএসএম / এমএসএম

স্বাধীনতার পরে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বিএনপির জন্ম: ডা. মাজহার

বকশীগঞ্জে কৃষকের ৬১ শতক জমি ধান নষ্ট করে দিলো প্রভাবশালীরা

রায়গঞ্জে লাখো মানুষের ভরসা দড়িটানা নৌকা : জনপ্রতিনিধিদের কেউ কথা রাখেনি

দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে মেঘ ধরেছে: মো.শাহজাহান

ধামইরহাটে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বিজয়নগরে আসামী গ্রেফতার করায় অতর্কিত হামলায় এএসআই শেখ সাদী আহত

টেকনাফে মাদক সাম্রাজ্য: কাদের নিয়ন্ত্রণে ভয়ংকর চোরাচালান চক্র

হিট প্রজেক্ট প্রাপ্ত যবিপ্রবির জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের দুই শিক্ষককে সংবর্ধনা প্রদান

রাণীনগরের সেই শিক্ষক আনোয়ারকে সাময়িক বরখাস্ত

মাদারীপুরে ১৮০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১৬ জন

টাঙ্গাইলে ৩৩১২ প্রার্থী থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকায় ৫০ জনের পুলিশে চাকরি

উত্তরবঙ্গ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিস উদ্বোধন

নতুন শপথের মাধ্যমে বরগুনায় বিএনপি'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত