ঢাকা মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কিরগিস্তানে নির্যাতন ও প্রতারণা : নি:স্ব হয়ে ফিরেছেন চট্টগ্রামের ৩ যুবক


চট্টগ্রাম অফিস photo চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ৩-৯-২০২৪ দুপুর ১:৪২

অভাব-অনটনের সংসারে কিছুটা স্বস্তি চেয়েছিলেন চট্টগ্রামের পটিয়া ও বাঁশখালীর তিন ব্যক্তি। অনেক কষ্টে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা জোগাড় করে পাড়ি জমিয়েছিলেন সেন্ট্রাল এশিয়ার দেশ কিরগিস্তান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর শিকার হন ভয়াবহ নির্যাতন-নিপীড়নের। ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হতো না। যে কাজে তাদের চাকরি দেওয়ার কথা ছিল,তাও দেওয়া হয়নি। সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি তাদের। ৪৫ দিনের মাথায় কোন রকমে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরে ভুগছেন ট্রমায়।

কিরগিস্তানে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া তিনজন হলেন- পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়া ৫ নং ওযার্ডের মো.আনিসুর রহমান (২৩), আকতার হোসেন (৪৮) ও বাঁশখালীর মো. নূর হোসেন।

অভিযোগ উঠেছে, পটিয়ার পশ্চিম কোলাগাঁঁও ছাপড়া গ্রামের আমির আলী সারেং এর ছেলে মোহাম্মদ মনছুর আলম নামের সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য এলাকায় বিদেশে ভালোমানের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একই এলাকার আনিসুর রহমান ও আকতার হোসেন এবং তাদের নিকটাত্মীয় নূর হোসেনের পরিবারকে প্রলোব্দ করেন। চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেইট এলাকার ওয়েল আফ ওভারসীস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনপ্রতি ভিসা ও আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ তিনজন মিলে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। এবছরের ২২ এপ্রিল তারা কিরগিস্থানে পৌছে। এরপর বিদেশের দালাল আব্দুস সামাদ ও  মনছুর আলমের ঘনিষ্টজন মাহির তাদের জিন্মায় নেন।

নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে আনিসুর রহমান বলেন, মোহাম্মদ মনছুর আলমের এজেন্সির কিরগিস্তানের দালালরা আমরা যেদিন সে দেশে পৌছি সেদিন আমাদের সঙ্গে থাকা ১৮শ ডলার কেড়ে নিয়ে ফেলে। পরে ক্যাম্বেগিয়া নামক জায়গায় নিয়ে গিয়ে এক দালালের কক্ষে আমাদের আটকে রাখে। সেখানে আমাদের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতারণার শিকার হয়ে আসা দুই শতাধিক লোক কান্নাকাটি করতে দেখি। তাদের অবস্থা দেখে আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি।  

আনিসুর রহমান বলেন, আমাকে ৬০০ ডলার বেতনে ওয়েল্ডার হিসেবে চাকারি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু
কিরগিস্তানে পৌছার পর বেশ কয়েকদিন আমাকে কোন কাজ না দিয়ে বসিয়ে রাখে। চাকরির কথা বলায় মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। কথায় কথায় মারধর করে তারা। পরে দূর্গম এলাকায় বড় বড় আকারের পাথর ও ইট বহনে আমাকে জোরপূর্বক কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়।  এ কাজগুলো করতে গিয়ে প্রায় সময় অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। দিন শেষে যা পারিশ্রমিক দেওয়া হতো দিয়ে ঠিকমতো খারারও জুটতো না।

কিরগিস্তানে নির্যাতনের শিকার আকতার হোসেন বলেন, আমাদের উপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা এবং যে চাকরির ভিসা গিয়ে গেলাম তা না দেওয়ার বিষয়টি আদম বেপারি মোহাম্মদ মনছুর আলমকে ফোনে জানাই। এসময় তিনি আমাদের তিনজনকে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। 

আকতার হোসেন বলেন, কিরগিস্তানে আমারা ৪৫ দিন ছিলাম। প্রতিটি দিন কেটেছে অমানবিক নির্যাতনে। দালালদের মারধরে আমরা প্রায় সময় অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। তাদের বাধ্যকরা কাজগুলো করতে হতো। খাবার না পেয়ে প্রায় সময় পানি খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার আরেক ব্যক্তি নূর হোসেন বলেন, আমরা কিরগিস্তানের যে এলাকায় ছিলাম সেখানে পাকিস্থানের নাগরিকদের সাথে ওই এলাকার লোকজনের বড় ধরণের সংঘর্ষ হয়। এরপর তারা মারার জন্য আমাদেরকেও দৌঁড়াতে থাকে। প্রাণ ভয়ে আমরা তিনজন একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেই। এরপর বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বলেন, আমরা কিরগিস্থানে ৪৫ দিন চরম অমানবিক জীবন কাটিয়েছিলাম।  

আনিসুর রহমানের পিতা লেয়াকত আলী বলেন, ছেলে দেশে ফিরে আসার জন্য কান্না এবং তাদেরকে নির্যাতনের কথা শুণে আমরা অস্থির হয়ে উঠি। যার মাধ্যমে আমরা ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি সেই মনছুরের সাথে যোগাযোগ করি। সামাজিকভাবে তাকে চাপ দিই। পরে আদম বেপারি মনছুরের বিদেশি দালালকে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে আমার ছেলে ও তার সঙ্গে যাওয়া আরো দুইজনকে কোন রকম দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।

দেশে ফেরার পর নির্যাতন:

গত ১০ আগষ্ট বেলা ৩টার দিকে মনছুর আলম কোলাগাঁও এলাকায় তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে কিরগিস্থানে নির্যাতন ও প্রতারণনার শিকার ৩ ব্যক্তির পরিবার তার সাথে দেখা করে। এসময় এলাকার কয়েকজন সমাজপতিও উপস্থিত ছিলেন। এসময় মনছুর আলম ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার বাসায় ফিরে যায়। এরপর রাত ১১ টায় আনিসের পিতার লেয়াকত আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুনরায় আসেন। তবে সঙ্গে কিছু সেনাবাহিনীর সদস্যও ছিলেন।

প্রতারণার শিকার আনিসের পিতা লেয়াকত আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাবেক সেনা বাহিনীর সদস্য মনছুর আলম প্রবেশের দুটি ভিডিও ক্লিপ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, রাত ১১ টায় সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য ও মনছুর আলম লেয়াকত আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন। এরপর একজন সেনা সদস্যের কাছ থেকে মনছুর আলম লাঠি কেডে নিয়ে লেয়াকত আলীকে বেদঢ়ক মারতে থাকেন। গলার গামছা পেছিয়ে ধরে ভেতর থেকে মারতে মারতে সামনের দিকে নিয়ে যান। পরে তার সাথে আসা সেনাবাহিনীর সদস্যরা লেয়াকত আলীর সঙ্গে কথা বলে চলে যান।

লেয়াকত আলীর অভিযোগ, আমাকে মনছুর লাঠি দিয়ে মারধর করার পর সেনা সদস্যদেরকে মনছুরের প্রতরণার বিষয়টি জানালে তারা দুঃখিত বলে স্থান ত্যাগ করেন। মারধরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে আমাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

এব্যাপারে জানতে মনছুর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।

এমএসএম / এমএসএম

স্বাধীনতার পরে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বিএনপির জন্ম: ডা. মাজহার

বকশীগঞ্জে কৃষকের ৬১ শতক জমি ধান নষ্ট করে দিলো প্রভাবশালীরা

রায়গঞ্জে লাখো মানুষের ভরসা দড়িটানা নৌকা : জনপ্রতিনিধিদের কেউ কথা রাখেনি

দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে মেঘ ধরেছে: মো.শাহজাহান

ধামইরহাটে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বিজয়নগরে আসামী গ্রেফতার করায় অতর্কিত হামলায় এএসআই শেখ সাদী আহত

টেকনাফে মাদক সাম্রাজ্য: কাদের নিয়ন্ত্রণে ভয়ংকর চোরাচালান চক্র

হিট প্রজেক্ট প্রাপ্ত যবিপ্রবির জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের দুই শিক্ষককে সংবর্ধনা প্রদান

রাণীনগরের সেই শিক্ষক আনোয়ারকে সাময়িক বরখাস্ত

মাদারীপুরে ১৮০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১৬ জন

টাঙ্গাইলে ৩৩১২ প্রার্থী থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকায় ৫০ জনের পুলিশে চাকরি

উত্তরবঙ্গ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিস উদ্বোধন

নতুন শপথের মাধ্যমে বরগুনায় বিএনপি'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত