রেলওয়ের স্টোর মুন্সি মাহমুদার বাসায় গ্যাসের অবৈধ সংযোগ
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী স্টোরে কর্মরত স্টোর মুন্সির দায়িত্বে থাকা মাহমুদা হাসান স্নিগ্ধা নামে তৃতীয় শ্রেণির এক নারী কর্মচারীর নামে সেগুনবাগান এলাকায় বরাদ্দকৃত বাসা ১৭৬/বি-এর আঙিনায় তার মালিকানাধীন অবৈধ প্রায় ১০টি সেমিপাকা বাসায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে তা বির্বিঘ্নে ব্যবহার করার একটি অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে উঠলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সেটি তাদের নজরে আসেনি।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই বাসাটির সীমানায় তৈরিকৃত সেমিপাকা প্রায় ১০টি বাসার প্রতিটি বাসায় রেলের মূল গ্যাস সংযোগ থেকে অবৈধ উপায়ে গ্যাসের সংযোগ দিয়ে রান্না করছেন সেখানে থাকা ভাড়াটিয়ারা। ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৭ হাজার ৫০০ টাকার দুই রুমের প্রতিটি বাসায় আছে লাইনের পানি, গ্যাস ও পিডিবির বিদ্যুৎ সংযোগ।
ঘটনাস্থলে থাকা নারী কর্মচারীর স্বামী জানান, তারা মাসিক একটি চুক্তিভিত্তিক অর্থের বিনিময়ে রেলওয়েকে ম্যানেজ করেই এই গ্যাস ব্যবহার করেন। যাদের তিনি এই অর্থ প্রদান করেন, তার প্রমাণও তার কাছে আছে। ম্যানেজ করা লোকদের নাম জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত বাসায় ব্যবহৃত দুটি চুলার জন্য গ্যাস বিল ১০৮০ ও এক চুলার জন্য ৯৯০ টাকা মাসিক বেতন থেকে কাটা হয়। তবে রেল কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে মাহমুদা হাসান সিগ্ধার মতো এসব রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
তার এ অনিয়ম ও দখলের বিষয়ে জানতে পাহাড়তলী আইডব্লিউ অফিস থেকে বরাদ্দকৃত বাসার তথ্য নিশ্চিত করে মাহমুদা হাসান স্নিগ্ধার কর্মস্থল এসএসএই (ইলেক) অফিসে গেলে সেখানে তাকে না পেয়ে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে ডিএনটুর প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের দপ্তর থেকেও কোনো উত্তর মেলেনি। এ বিষয়ে রেলের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরীর কাছে গেলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অফিস টাইমে অতিরিক্ত প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে তার দপ্তরে উপস্থিত না পেয়ে মুঠোফোনে কল দিলে তাকেও পাওয়া যায়নি।
সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী (এইই) শেখ ফরিদের কাছে গেলে তিনি জানান, রেলের স্টাফ কোয়ার্টারের আঙিনায় পিডিবির বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক এবং অবৈধ। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ জমা হলে রেলের ভূসম্পত্তি বিভাগ অবৈধ বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং অতিরিক্ত তৈরিকৃত বাসা উচ্ছেদ করার অভিযানে যায়। এ বিষয়ে রেলের পারিবারিক পেনশন বিভাগে কর্মরত হিসাবরক্ষক এহসান আলী ওই নারী কর্মচারীর আপন ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, গ্যাস সংযোগের বিষয়টি অবৈধ। রেলে এসব ঘটনা চলে আসছে বহুদিন থেকে। এরপর তিনি নিউজটি প্রকাশ না করার জন্য নিজেকে একটি রাজনৈতিক দল সমর্থিত কর্মী দাবি করে।
রেলের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল ইসলামের কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এমএসএম / জামান