উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লতিরাজ কচু চাষ

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) লতিকচু-১ (লতিরাজ) পুষ্টিসমৃদ্ধ কান্দাল জাতের চাষ ধীরে ধীরে সারাদেশে সম্প্রসারিত হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে হাজার হাজার কৃষকের ভাগ্য। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, লতিরাজ কচু চাষের জন্য উর্বর মাটি হওয়ায় রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জেলায় ধীরে ধীরে এ জাতের কচুর চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। একই সঙ্গে লতিরাজ কচু সারাদেশে জনপ্রিয় উঠছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন এই প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা মৌসুমের শুরুতে কৃষকদের মানসম্পন্ন লতিরাজ কচুর বীজ সরবরাহ করেছি এবং চাষের সময় প্রযোজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছি। কারণ এটি অত্যন্ত লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের কৃষকরা লতিরাজ কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার সঞ্জয়পুর গ্রামের আব্দুল বাছেদ কন্দল জাতের লতিরাজ কচু চাষ করছেন। মামা আকবর আলীর উৎসাহে ২০১০ সালে লটি কচু আবাদ শুরু করেন তিনি। গত ১৪ বছর ধরে তিনি লতিরাজ কচুকে দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং এখন গর্ব বোধ করছেন যে, তিনি অন্য ১০ জনের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে অনেক কৃষক কন্দাল জাতের লতিরাজ কচু চাষ শুরু করেছেন। লতিরাজ কচু চাষি বাছেদ বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি ২০১০ সালে ১ বিঘা জমিতে লতিরাজ কচু চাষ করেন। কৃষি বিভাগ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে কচু চাষে আরো উৎসাহ পান। কচু লাগানোর তিন মাস পর থেকে লতিকচু ওঠানো শুরু হয়। এক সপ্তাহ পরপর মাঠ থেকে প্রচুর লতা তোলা হয়।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে বছরে লতিরাজ কচু চাষ করতে বিভিন্ন ধরনের সার ও রক্ষণাবেক্ষণে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। ওই কচু থেকে আয় হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। এছাড়া বছর শেষে কচু গাছের গোড়া (মূল) বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এখন পাইকারি বাজারে লতিরাজ কচু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আগামী বছর লতিরাজ কচুর আবাদ আরো এক বিঘা বাড়িয়ে দেব। এ জাতের কচুক্ষেতে সব সময় পানি জমিয়ে রাখার কারণে খরচটা তুলনামূলক বেশি। তার কন্দাল জাতের লতিকচু আবাদ দেখে আশপাশের গ্রামের অনেকেই এ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আধা বিঘা জমিতে এই কচু চাষ করে খুবই খুশি একই গ্রামের ইব্রাহিম আলী এবং উপজেলার রোস্তমপুর গ্রামের আব্দুস সালাম (সালামত) সোয়া এক বিঘা জমিতে ৪ বছর ধরে এ কচু চাষ করেন। কারণ তাকে আর দারিদ্র্যের মধ্যে থাকতে হয় না।
পাবনা শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, উন্নতমানের সবজি হওয়ায় ঢাকায় লতিরাজ কাঁচা সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাজীপুর, সাভার, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, শ্যামবাজার, জয়দেবপুর মোড়সহ সিলেট ও চট্টগ্রামে পাঠানো হয় এই সবজি।
বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লতিরাজ কচু চাষে সফলতায় অনেক কৃষককে উদ্বুদ্ধ করেছে। শুধু নিচু জমিতে নয়, বসতবাড়ির আশপাশের আর্দ্র জমিতেও লতিকচু চাষ করে পুষ্টির চাহিদা সহজেই পূরণ করা যায় এবং স্বাবলম্বী হওয়া যায় অল্প সময়ে।
কৃষি সম্প্রসারণ বগুড়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) সরকার শফি উদ্দিন এই প্রতিনিধিকে বলেন, এ বছর বগুড়া অঞ্চলের ৪ জেলায় ৮৩৫ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচুর আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে জয়পুরহাটে ৪০৯ হেক্টর, পাবনায় ১৩১ হেক্টর, বগুড়ায় ১২৫ হেক্টর এবং সিরাজগঞ্জে ১৭০ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচু চাষ করেছেন চাষিরা। এ সবজি চাষে ব্যাপক লাভ হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন এ কচু চাষের দিকে। কৃষিপ্রধান এই ৪ জেলায় ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লতিরাজ কচু চাষ। পতিত ও অনাবাদি জমিতে কচু চাষ করে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে।
আঞ্চলিক কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কৃষকদের অধিক উৎপাদনে উৎসাহিত করতে বগুড়া অঞ্চলের ৪টি জেলায় অন্তত ২০টি লতিরাজ ফসল উৎপাদন প্রদর্শনী প্লট তৈরি করা হয়েছে। লতিরাজ কচু খেতে সুস্বাদু, চাষে অধিক লাভজনক এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় সারাদেশে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাই উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশেই লতিরাজ কচুর চাষ শুরু হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে লতিরাজ কচুর চাষ হচ্ছে। এই জাতের কচু দ্রুত বাড়ে এবং কম সেচ, সার ও কীটনাশক লাগে। পাতা ও কাণ্ডসহ পুরো গাছই ভোজ্য হওয়ায় এটি আরো লাভজনক। লতিরাজ কচু দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা।
এমএসএম / জামান

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
