ফাইল আটকে আছে বছরের পর বছর
পটিয়া ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

চট্টগ্রামের পটিয়া ভূমি অফিসে জায়গাজমির জটিলতায় পড়লে ভূমির পরিমাপে সার্ভেয়ার রিপোর্ট এবং নামজারি খতিয়ান সৃষ্টির জন্য আবেদন করলে ভূমির মালিকের ফাইল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখে জনগণকে গণহয়রানির অভিযোগ উঠেছে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। অনেকের ভূমির নামজারির আবেদন এবং সার্ভেয়ার রিপোর্টের জন্য আবেদন করলে কোনো কারণ ছাড়াই বছরের পর বছর ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মোটা অংকের চুক্তি করে কাজ করতে হচ্ছে।
ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী অথবা তাদের নিয়োগকৃত দালালদের মাধ্যমে টাকার চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করা হয় না। গত ৬ সেপ্টম্বর অতিরিক্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ইয়াসমিন পারভীর তিবরিজির কার্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল পটিয়া ভূমি অফিসে এলে ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা লোকজন পটিয়া ভূমি অফিসের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন। বিক্ষুদ্ধ জনতা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে সরকারি খাস ভূমিও ব্যক্তিমালিকানায় নামজারি করে দেয়। এক্ষেত্রে কয়েক লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয়ে থাকে।
তারা আরো জানান, দালাল ছাড়া সরাসরি তদরির করে নামজারি খতিয়ান মেলে না। কেউ সরাসরি তদবির করলে তাকে বিভিন্ন ছল-চাতুরির মাধ্যমে ঘুরিয়ে হয়রানি করে থাকে। অনেক সময় নথি গায়েবের ঘটনাও ঘটেছে। অবৈধ পন্থায় কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে দুটি নামজারি প্রমাণ করে এ এসিল্যান্ড অফিসে কী ঘটছে। যেমন- পিএস সরকারি খাসভুক্ত ও আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা পটিয়া পৌর সদরের গোবিন্দারখীল এলাকার ৪৯ শতক ভূমি স্থানীয় খোরশেদ মজিদসহ ১২ জনের নামে ব্যক্তিমালিকানায় নামজারি খতিয়ান দেয়ার অভিযোগ রয়েছে, যার বিএস নামজারি খতিয়ান নং-৪৫৬৪। এ জমির বর্তমান মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ১৯৭০ সালের দলিল দিয়ে পটিয়া পৌর সদরের সুচক্রদন্ডী মৌজায় ৬৪ শতক ভূমি স্থানীয় মাধুরী সর্দ্দারসহ ৩ জনের নামে নামজারি খতিয়ান দেয়া হয়, যার বিএস নামজারি খতিয়ান নং-৩৪২৬। এ ভূমির জন্য ১৯৭০ সালের দলিল উপস্থাপন করা হলেও খতিয়ানে উক্ত ভূমি ভিপি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের দলিল দিয়ে এই এসিল্যান্ড অফিসে নামজারি খতিয়ান সৃজন করা নিষিদ্ধ রয়েছে। কারণ ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আগুন লেগে ৭০ সালের ভূমি নিবন্ধন বালাম বই পুড়ে যায়। এতে নিবন্ধন সূচি না থাকায় ১৯৭০ সালের দলিলের বৈধতা নেই। উল্লিখিত অবৈধ দুটি বিএস নামজারি খতিয়ান সৃজন কার্যক্রম করেছেন অফিস সহকারী মোশারফ হোসেন তুহিন। আর এগুলো অনুমোদন দিয়েছেন সাবেক এসিল্যান্ড রাকিবুল ইসলাম। দুটি নামজারিতে ২০ লক্ষাধিক টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। অফিস সহকারী মোশারফ হোসেন তুহিন ২০২২ সালে পটিয়া এসিল্যান্ড অফিসে যোগদান করেন। তখন এসিল্যান্ড রাকিবুল ইসলামকে হাতে নিয়ে অনেকগুলো বিতর্কিত বি.এস নামজারি খতিয়ান সৃজন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ফাহমিদা আফরোজ এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করলে তাকেও তিনি আয়ত্তে নিয়ে ঘুষ বাণিজ্য চালান।
পটিয়া এসিল্যান্ড অফিসে অফিস সহকারী তুহিন ও সুদীপ্ত দাশসহ ৩-৪ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেটটি এভাবে অনিয়ম ও অবৈধ পন্থায় নামজারি খতিয়ানে ব্যবস্থা করে লোকজন থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সিন্ডিকেটটি বর্তমান এসিল্যান্ড প্লাবন কুমার বিশ্বাসকে আকঁড়ে ধরেছে। কাজের হিসাব মিলাতে না পেরে তিনি কিছুদিন নামজারি কার্যক্রম বন্ধ রাখে। তবে বর্তমানে তিনি নামজারি কার্যক্রম শুরু করেছেন। উল্লেখিত বির্তকিত ২টি নামজারি খতিয়ানের বিষয়ে অফিস সহকারী মোশারফ হোসেন তুহিন থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নামজারির প্রস্তাব দিয়ে থাকেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা। জমির টাইটেল তদন্ত করেন কানুনগো। এছাড়া উক্ত ২টি নামজারি অনুমোদনের জন্য আমি শুধু এসিল্যান্ড থেকে স্বাক্ষর নিয়েছি। কোনো লেনদেন করিনি।
এ বিষয়ে পটিয়া সদর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. শাহজাহান থেকে জানতে চাইলে তিনি তুহিন দায়ী করেন। ভূমি অফিসের প্রসঙ্গে পটিয়া সদরের ৩নং ওয়ার্ডের গুয়াদন্ডী এলাকার ফরিদ উদ্দীন বলেন, পটিয়া ভূমি অফিসে নামজারি খতিয়ান দেয়া নাকি বন্ধ, বর্তমান যে এসিল্যান্ড উনি নাকি জায়গা জমির বিষয় বুঝে না, যেটাতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চুক্তি হয় সেটা ছাড়া কোন ফাইলই ধরছে না বলে বিষয়টি ভূমি অফিসের অফিস স্টাফরা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে এসিল্যান্ড অফিসের অফিস সহকারী মোশারফ হোসেন তুহিন, নতুন এসিল্যান্ড স্যার পটিয়ায় যোগদান করার পর প্রায় গত তিন মাসে তিন হাজার অভিযোগ নিস্পত্তি করা হয়েছে। যা বিগত সময়ের কোন এসিল্যান্ড স্যার করার সাহস করেনি। নামজারি হচ্ছে না বিষয়টি সঠিক না, যে সব কাগজের জটিলত এবং আইনগত বাঁধা রয়েছে সেগুলো অপ রাখা হয়েছে। যদি কোন অভিযোগকারী অভিযোগ খারিজ হওয়ার বিষয়ে বা আইনী কোন পরামর্শ নিয়ে কথা বলতে চান, স্যার সরাসরি তাদের সাথে কথা বলে যথাযথ কারণসহ বুঝিয়ে দিচ্ছে যেটা বিগত সময়ের পটিয়া ভূমি অফিসে হয়নি। পটিয়া ভূমি অফিসে এস্যিাল্ড স্যার আসার পর শতভাগ স্বচ্চতা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে ভূমি অফিস কেন্দ্রিক কিছু দালাল এতে নারাজ হয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারে লিপ্ত।
পটিয়া ভূমি অফিসে হয়রানির বিষয়ে এসিল্যান্ড প্লাবন কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি যতটুকু সম্ভব আইনসম্মতভাবে অফিসের কাজ করার চেষ্টা করতেছি, আইন এবং কাগজ পত্রের বাইরে গিয়ে কখনো কোন কাজ করা সম্ভব না। হয়তো আইন এবং কাগজ পত্রের বাইরে যারা আমাকে দিয়ে কাজ করাতে চেয়েছিল পারেনি তারা আমার অফিস স্টাফদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমি যতটুকু পারি যাতে কোন মানুষ হয়রানির শিকার না হয় সেটা মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি।
এমএসএম / জামান

সেতু নির্মাণে আশার আলো দেখছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ

মোহনগঞ্জে নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে ধ্বংস

পূর্বধলায় বাসচাপায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু, কয়েক ঘণ্টা পর হৃদরোগে চালকের মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌরসভার আয়োজনে মশক নিধন ও পরিষ্কার পরিছন্নতা অভিযান

রাণীশংকৈলে সোনার পুতুল প্রতারণার শিকার হয়ে গ্রেফতার-৫

ত্রিশালের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন আকন্দ গ্রেপ্তার

নড়াইলে ডাকাতিকালে গৃহকর্তাকে কুপিয়ে হত্যা, রায়ে পাঁচ ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

রাণীশংকৈলে বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ

কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের দাবিতে মানবিক কুমিল্লা'র মানববন্ধন

শ্রেষ্ঠ পদক পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

শ্রীপুরে উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীদের হামলা, সার্ভেয়ার আহত

মোহনগঞ্জে দুই চিকিৎসকের অবৈধ বসবাস করায় সিভিল সার্জনের তদন্ত নির্দেশ
