গুরুদাসপুরে সর্বহারার চিঠি, টাকা না দিলে ‘ছেলেকে জবাই করে মাথা পাঠিয়ে দেব’
সাদা কাগজের উপরিভাগে লাল রংয়ের আস্তর। এমন চিঠিতে সর্বহারা পরিচয়ে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ লাখ করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়ছে। অর্থ জোগাতে সময় দেয়া হয়েছে ৫ দিন। অন্যথায় ছেলেকে জবাই করে মাথা পাঠিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয় ওই চিঠিতে।
গুরুদাসপুর পৌর শহরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের সামনের বাসিন্দা শিক্ষক উত্তম কুমার কুণ্ডু, প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার ও ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ারের বাড়ির সামনে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ওই চিঠি পাওয়া যায়। চিঠিতে প্রাপক হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। প্রেরক হিসেবে সর্বহারা দাবি করা হয়েছে। হুমকি ভরা চিঠি পাওয়ার পর স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। যে মহল্লায় সর্বহারার চিঠি পাওয়া গেছে, সেখানে হিন্দু-মুসলিমদের বসতি রয়েছে। রয়েছেন সরকারি-বেসরকারি একাধিক চাকরিজীবিও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বুধবার দুপুরে এক শিক্ষক বলেন, তিনিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক তার বাড়ির আশপাশে বাস করেন। নিজের বাড়ির মূল ফটকের সামনের পথে একটি চিঠি পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। চিঠিটি উদ্ধারের পর শিউরে ওঠেন। সেখানে টাকা চেয়ে হুমকির বার্তা দেয়া হয়েছে।
সর্বহারা দাবি করে পাঠানো চিঠিতে লেখা রয়েছে- ‘সর্বহারা- আশা করি মহান আল্লাহর দোয়ায় ভালোই আছেন। দোতলা বাড়ি ছেলে বউ সব মিলিয়ে ভালো আছেন। আমরা ভালো নাই। বছরের বেশিরভাগ সময় জেলে থাকি আর যেটুকু সময় বাইরে থাকি গরিব-দুখীদের সাহায্য করি। আপনাকে ৫ দিন সময় দেয়া হলো। এই পাঁচ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে রাখবেন। তাছাড়া আপনার ছেলেকে জবাই করে মাথা পাঠিয়ে দেব আপনার বাড়িতে। পুলিশ কিংবা যে কোনো বাহিনী আমাদের ধরতে পারবে না। আপনার ছেলে গলাকাটা লাশ হয়ে যাবে। টাকা কোথায় কিভাবে দেবেন আমরা তা জানিয়ে দিব।’
সর্বহারার এমন হুমকি বার্তা বহন করা চিঠির কথা জানাজানি হওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার অন্তত ৫ জন বলেন, গুরুদাসপুর থানা মোড় থেকে বাজার পর্যন্ত জনবহুল মহল্লা। এখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে বছর দুয়েক আগে অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে একই জায়গার এক বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়া হয় সর্বহারা পরিচয়ে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় আর তেমন কিছু হয়নি। এই মহল্লায় সর্বহারার এটি দ্বিতীয় বার্তা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
সহকারী অধ্যপক উত্তম কুমার কুণ্ডু জানান, দুপুরে তিনি দোতলা বাড়ির নিচে খামের ভেতর একটি চিঠি পান। সেখানে ৫ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিলে সন্তানকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ধরনের ঘটনা তার সাথে প্রথম ঘটেছে।
সূত্র বলছে, রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোর জেলার ছয়টি থানা এলাকায় বিস্তার লাভ করে সর্বহারা। তাড়াশের উত্তরমুখ ও থালগাড়ি এলাকায় এই সংগঠনের ঘাঁটি ছিল। ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সর্বহারা সদস্যরা গুরুদাসপুর থানা লুট করে। সে সময় সর্বহারার গুলিতে নিহত হন পুলিশের এক সদস্য। ওই হামলার ৩৪ বছর পর ২০২২ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চরমপন্থী বা সর্বহারার এক নেতা গ্রেপ্তার হন। তবে ২০০৪ সালে বাংলা ভাইয়ের ‘জাগ্রত মুসলিম জনতা’ নামে একটি সংগঠন সর্বহারা নির্মূলের অভিযান শুরু করে। সে সময় জাগ্রত মুসলিম জনতার কমান্ডার ছিলেন আজিজুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। এরপর থেকে এ অঞ্চলে সর্বহারা সংগঠনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, সর্বহারার টাকা দাবি করে পাঠানো চিঠির বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা তৎপরাত চলছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালাম আক্তার বলেন, সর্বহারা টাকা দাবি করে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এমন ঘটনা আগে এখানে ঘটেনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তাছাড়া যৌথবাহিনীও চিঠিটির ব্যাপারে তদন্ত করছে। তিনি স্থানীয়দের আতংকিত না হওয়ার আহ্বান জানান।
T.A.S / জামান
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে জিয়া পরিবারের অবদান অপরিসীম : এ্যাড. আজিজ মোল্লা
ভোলাহাটে বাগান নষ্ট ও হুমকির ঘটনা: প্রশাসন তদন্তে, উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী
জিয়া পরিবারের কষ্টের তুলনায় আমাদের কষ্ট কিছুই না - আবুল কালাম
যমুনা নদীতে চাঁদাবাজির দায়ে গ্রেপ্তার ১০
নবীনগরে চার গ্রামের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বিএনপির মতবিনিময় সভা
কবিরহাটে ফখরুল ইসলাম: ধানের শীষে বিজয় হলে বন্ধ হবে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি
কোনো অপশক্তি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে নাঃ আইজিপি
নাচোলে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলন
বাঘা-চারঘাট জামায়াতের এমপি প্রার্থী মোটরসাইকেল রেলি অনুষ্ঠিত
দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন
কাপাসিয়ায় সালাহউদ্দিন আইউবী‘র দাঁড়িপাল্লার সমর্থনে বিশাল মিছিল
গজারিয়ায় অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ