ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

পদের দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়েছে রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা


গুরুদাসপুর প্রতিনিধি photo গুরুদাসপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০-১০-২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর; এই সময়ের মধ্যে ৮ দফায় পরিবর্তন হয়েছে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। অধ্যক্ষ বদলেছে ৭ বার। কলেজে সভাপতি-অধ্যক্ষ এই দুই পদের দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। এ কারণে গত ৫ বছরে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস কোর্সের ফলাফলে নেমে এসেছে বিপর্যয়।

গুরুদাসপুর পৌর সদরের নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজে চলছে পদের এমন ভয়াবহ দ্বন্দ্ব। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সভাপতি বদল করা হয়েছে ১৫ বার এবং অধ্যক্ষ পরিবর্তন করা হয়েছে অন্তত ১২ বার। সবশেষ ১৬ দিনের ব্যবধানে দুই ব্যক্তিকে সরিয়ে নতুন করে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য করা হয়েছে। সভাপতি-অধ্যক্ষ পদের ঘন ঘন অদল-বদলের ফলে শিক্ষকরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তার প্রভাব পড়ছে শিক্ষাব্যবস্থায়।

কলেজের ফলাফলের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে এইচএসসির ফলাফলে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ-৪ পয়েন্টের নিচে পেয়েছেন। অকৃতকার্য হয়েছেন ৮৪ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোটে ১৮ শিক্ষার্থী। এই সময়ের মধ্যে শুধু ২০২১ সালেই সর্বোচ্চ ১৭২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ডিগ্রি পাস কোর্সের ফলাফলেও এমন ভঙ্গুর পরিস্থিতি।

যে কারণে এমন বিপর্যয়

কলেজটিতে ২০১৫-২৪ সাল পর্যন্ত পদের দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০১৫ সালে মায়া রানী চক্তবর্তীকে ভারপ্রাপ্ত করে দুই বছর পর তাকে সরিয়ে রুহুল করিম আব্বাসী হন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তার সময়েই শূণ্যপদে অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয় মাহাতাব উদ্দিনকে। শাহনেওয়াজ আলীকে পরিবর্তনের পর সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতা আবু হানিফ, আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম, ইউএনও, বিএনপি নেতা আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু এবং সবশেষ ওমর আলীকে কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এই সময়ে দফায় দফায় রুহুল করিম আব্বাসী এবং মাহাতাব উদ্দিন অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান। একপর্যায়ে রুহুল করিম আব্বাসীকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপাধ্যক্ষ আবুল কালামকে। গত মাসে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার ছেলে ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জুকে এডহক কমিটির সভাপতি করে স্বপদে ফিরে আসেন মাহাতাব উদ্দিন। ১৫ দিনের মাথায় আবারো পরিবর্তন করে ওমর আলী নামের এক ব্যক্তিকে সভাপতি করে অধ্যক্ষর দায়িত্বে আসেন আবুল কালাম।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পদের এমন দ্বন্দ্বে শিক্ষকরা নানামুখী অবস্থান নেওয়ায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। ফলাফল খারাপ হওয়ায় কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যাও।

পদের দ্বন্দ্ব যেখান থেকে শুরু

এই কলেজে পদের দ্বন্দ্বের ইতিহাস দীর্ঘ সময়ের। ১৯৯৪ সালে নিজের জমির ওপর কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন নাটোর-৪ আসনের বিএনপির প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য এম মোজাম্মেল হক। সেসময় তিনি সভাপতি হয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেন ইব্রাহিম হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে। এরপর দুই সভাপতি বদলে ২০০১ সালে বিএনপির সময় আবারো সভাপতি হন মোজাম্মেল হক। সেসময় নানা অনিয়মের কারণে অধ্যক্ষ ইব্রাহিম হোসেনকে কলেজ থেকে বিতারিত করা হয়। শুরু হয় পদের দ্বন্দ্ব।

কলেজসূত্রে জানাযায়, ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসানো হয় সায়মা চৌধুরী, একরামুল হক, আবুল কালাম আজাদকে। ২০০৫ সালের তত্ববধায়কের শাসনামলে অধ্যক্ষ হিসেবে আবারো ফিরে আসেন ইব্রাহিম হোসেন। তিনি আব্দুস সাত্তার নামের এক ব্যক্তিকে পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন করেন। কয়েক দিনের ব্যবধানে আব্দুস সাত্তার পদত্যাগ করেন। এরপর আবুল কাশেম নামের এক ব্যক্তিকে সভাপতি নির্বাচন করে টানা ৯ বছর চালানো হয়। ২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে সাবেক মেয়র শাহনেওয়াজ আলীকে সভাপতি করেন অধ্যক্ষ ইব্রাহিম হোসেন। উদ্দেশ্য ছিল নিয়োগ বাণিজ্য ও অধ্যক্ষ পদে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নেওয়া।

কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, ছাত্রী-শিক্ষকের প্রেমের পর বিয়ে, নিয়োগ বাণিজ্য, আর্থিক অনিয়ম, সভাপতি, অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে কলেজটি মুখ থুবরে পড়েছে। কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শিক্ষার্থীদের ফলাফলে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ভাতায় স্বাক্ষর করা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে।

অধ্যক্ষ দাবি করা মাহাতাব উদ্দিন সকালের সময়কে জানান, তাকে দায়িত্ব থেকে সরাতে নানা ধরণের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বর্তমানে তিনিই অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করা আবুল কালাম সকালের সময়কে বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাহতাব উদ্দিনের নিয়োগ বাতিল করে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দিয়েছে। অথচ ওই ব্যক্তি নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে মঙ্গলবার কলেজে ঢুকে কাগজপত্র নিয়ে চলে গেছেন।

কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ওমর আলী সকালের সময়কে বলেন, কলেজে বর্তমানে কোনো বৈধ অধ্যক্ষ নেই। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপাধ্যক্ষ আবুল কালাম।

এমএসএম / জামান

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সেকাল-একাল বই এর মোড়ক উন্মোচন

বড়লেখায় ইজ্জত বাঁচাতে চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে কলেজছাত্রী আহত, চালক আটক

মানবিক সাহায্যের আবেদন-‘বাঁচতে চায় শিশু ফরহাদ আলী’

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাজশাহীতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

কমলগঞ্জে দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য প্রকল্প পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ

মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়াসহ মারধরের অভিযোগ

বাঘা থানার অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত ও নিয়মিত মামলার ৬ আসামি গ্রেফতার

নবীনগরে কাঁঠালের ছড়াছড়ি: বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক ও ভোক্তা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে অবরোধ

সন্দ্বীপ থানার অভিযানে ১২ মামলার আসামী গাঁজা ব্যবসায়ী আটক

নোয়াখালীতে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ যুবদল সভাপতি গ্রেফতার

কাউনিয়ার মেহরাব নৌপ্রধান স্বর্ণপদক পাওয়ায় এলাকায় অভিনন্দনের ঝড়