ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

চসিকের ভুল সিদ্ধান্তে বহিরাগতদের হাতে নৌঘাট, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা


চট্টগ্রাম অফিস photo চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ২১-১০-২০২৪ দুপুর ৪:৪৭

বংশপরম্পরায় জন্মগত পেশাদার পাটনিজীবী (সাম্পান মাঝি) সমিতিগুলোকে চসিকের সদরঘাট, অভয়মিত্রঘাট ও বাংলাবাজার নৌঘাট তিনটি না দিয়ে বহিরাগতদের খাস আদায়ের দায়িত্ব দেয়ার প্রতিবাদে কর্ণফুলী নদীর ১০ ঘাটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে 'কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন’-এর অন্তর্ভুক্ত একাধিক সংগঠন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর এসব ঘাটে সাম্পান চলাচল বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করছেন ১২ শতাধিক সাম্পান মাঝি। এতে নতুন ব্রিজ ঘাট, তোতারবাপের হাট, বিডব্লিউ ঘাট, দক্ষিণপাড় পুরাতন ব্রিজ ঘাট, সদরঘাট, অভয়মিত্র ঘাট, কর্ণফুলী ঘাট, বাংলাবাজার ঘাট ও সল্টগোলা ঘাটে (পাটনিজীবী নাই) ইঞ্জিনচালিত সাম্পান চলাচল বন্ধ দেখা যায়। তবে জরুরি রোগী সেবা ও খাদ্যদ্রব্যের পারাপারে মানবিকতা দেখাচ্ছেন মাঝিরা। নদীর অন্যান্য ঘাটে যাত্রী পারাপার চলছে।

কর্ণফুলীর নৌঘাট থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন ও ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সভাপতি এসএম পেয়ার আলী ও চরপাথরঘাটা ব্রিজ ঘাট সাম্পান সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল হোসেন।

নৌঘাটে উপস্থিত সাম্পান মাঝিরা জানান, ২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালার তোয়াক্কা না করে একের পর এক অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এতে দেয়ালে মাঝিমাল্লাদের পিঠ ঠেকে যাওয়ায় বাধ্য হয়েছে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে।

চরপাথরঘাটা ব্রিজ ঘাট সাম্পান চালক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পেশাগত সাম্পান মাঝি (পাটনিজীবী) থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে পাটনিজীবী নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ইজারা দিচ্ছে। ঘাটহারা মাঝিরা চসিকে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। তাই বৈঠা বর্জন চলছে।

অপরদিকে, ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পেশাদার জন্মগত পাটনিজীবী সমিতিকে নৌঘাটগুলো ইজারা দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নির্দেশনাটিও মানছেন না বলে মাঝিদের দাবি।

ইছানগর বাংলাবাজার সাম্পান মাঝি সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ লোকমান দয়াল বলেন, 'চসিকের বুঝা উচিত ঘাট হারালে শত শতা মাঝিরা তাঁদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করবে। অনেকের বাপ দাদা তিন পুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য না করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি চসিকের প্রশাসকের প্রতি।'

এছাড়াও, অভয়মিত্র ঘাটের অনেক মাঝিদের অভিযোগ চসিকের ১৯টি ঘাট নিয়ে যখন যেমন ইচ্ছা খেলা খেলছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। সকল অনিয়মের হেডকোয়ার্টার এই রাজস্ব কর্মকর্তা। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মাঝিরা।

চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক সমিতি ও 
বাংলা বাজার সদরঘাটের মাঝিরা জানান, প্রতি বছর ১৯ ঘাট থেকে রাজস্ব আদায় হতো প্রায় ৬ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু চৌদ্দশত একত্রিশ বাংলায় এসে আইনি জটিলতায় এবার ঘাটগুলো ইজারা দিতে পারেনি চসিক। সে সুযোগে খাস কালেকশনের নামে চমিকের একাধিক অসাধু কর্মকর্তারা নিজের আখের গোছাচ্ছেন। 

দৈনিক আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সাদা কাগজে চসিক সিল দিয়ে টাকা পরিশোধের সার্টিফিকেট দেওয়া হলেও সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই। রাজস্বের টাকা লুটপাট করতেই চসিকের গুটিকয়েক কর্মকর্তা এমন অপকৌশল বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এ বিষয়ে অভয়মিত্র ঘাটের সহযোগি হিসেবে নিয়োজিত ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাসের সাজ্জাদ বলেন, 
'আমরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সিটি কর্পোরেশন থেকে ঘাট নিয়েছি। কোন অবৈধ ভাবে নিইনি। আজ থেকে খাস কালেকশন করার কথা দৈনিক সাড়ে তিন হাজার করে। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি অবস্থান ধর্মঘট। সাম্পান চলছে না। এতে সাধারণ মানুষজন কষ্ট পাচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত এটির সমাধান হোক। ইতিমধ্যে সাম্পান সমিতির মাঝিদের প্রস্তাব দিয়েছি বসার। তবে কোন আশঙ্কা নেই ভাড়া বাড়ার।'

এ বিষয়ে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস.এম পেয়ার আলী বলেন, ‘বৈঠা যার ঘাট তার’ এই দাবী না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করবো। প্রতিটি ঘাটের সকল সাম্পান মাঝিদের নিয়ে গঠিত সমিতির অনুকূলে ঘাট ইজারা দিতে হবে। বহিরাগতদের ঘাট দিয়ে খাস কালেকশন চলবে না।'

নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরাম উল্লাহ বলেন, 'বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন স্যারদের জানিয়েছি। এটি যেহেতু চসিকের রাজস্ব শাখার বিষয়। তবে নৌ পুলিশ মাঠে রয়েছে।'

চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানি বলেন, 'ঘাটগুলোর বিষয়ে আপনারা প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন। এসব উনি ডিল করেন। আমার বরাবরে আসে না এসব বিষয়।'

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মানতে হবে। কিছু করার নেই। খাস কালেকশনে ঘাট চলছে। যেহেতু আদালতের নির্দেশে স্থগিত ইজারা। রিট শুনানির জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’

প্রসঙ্গত, গতকাল ২০ অক্টোবর চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অভয়মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য চসিক এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দূর্বাদল চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

এমনকি এ কাজে লোকবল, যাত্রী পারাপারে নৌকা, সাম্পান সরবরাহ-সহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য ২১ অক্টোবর থেকে আবু নাসের সাজ্জাদ ও আব্দুল কাদের ফিরোজ নামে দু'ব্যক্তিকে নিয়োজিত করেন। যারা ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড বিএনপি নেতা। এতেই ক্ষেপে গিয়ে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন।

T.A.S / জামান

পিরোজপুরে স্বল্প বরাদ্দের প্রতিবাদ ও লুটপাটকারীদের বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লায় জাতীয় মেধা মূল্যায়ন ও হিফজ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতার করেছে মাদারীপুর র‍্যাব- ৮

We Make Mistakes এর Competition-13 এর সর্বোচ্চ পুরস্কার পেলো মাগুরা পুলিশ লাইনস্ হাই স্কুল

মনপুরার মেঘনায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নদীতে নেমেছে শত শত জেলে

রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার মাহফুজুর রহমান মিলনের মাদকবিরোধী র‍্যালি ও মানববন্ধন

রায়পুরে নিম্নমানের তুলা ও ঝুট দিয়ে তৈরি নকল স্যানিটারি প্যাড

শ্রীমঙ্গল থেকে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার, ভিকটিমের খালাসহ গ্রেফতার ২

ভবদহে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ নদী ১৪০ কোটি টাকার পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন

ফেসবুকে মানহানিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

কৃষিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনে চমক সৃষ্টি করেছেন চৌগাছার কৃষকেরা

নেত্রকোনায় খায়েরবাংলা ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন- চ্যাম্পিয়ন দিগজান একাদশ

জমি বিরোধের জেরে টুঙ্গিপাড়ায় দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট