ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

কুতুবদিয়ায় মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে নতুন মোড়


নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া photo নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া
প্রকাশিত: ৩০-১০-২০২৪ দুপুর ১১:৪৭

সাম্প্রতিক সময়ে অশান্ত হয়ে উঠেছে কুতুবদিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে দ্বীপে। মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে যৌথবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ১/১১ সময়ে যৌথবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কথা তুলে এনেছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে আলী আকবর ডেইল শান্তি বাজারে রান্নাঘরে ঘটে যাওয়া মা-মেয়ে রুনা ও জারিয়া হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।

জানা গেছে, জোড়া খুনের ঘটনায় স্বামীকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে স্বামীসহ তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। প্রাথমিক জবানবন্দি নেয়া হয়েছে থানায়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার না করায় আদালতে স্বামীসহ দুই আসামির রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামি নুরু ঘটনার আগে এবং পরের বিষয় বললেও মাঝখানে মসজিদে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো বিষয় সঠিকভাবে বলেননি। বারবার এড়িয়ে গেছেন। এ কারণে তার প্রতি সন্দেহের তীক্ষ্ণ তীর। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নুরু সওদাগরের পরকীয়ার কারণে রুনার সংসারে অশান্তি চলছিল। 

গ্রেফতার অন্য দুই আসামি হলেন- আবদুল হাদি সিকদারপাড়ার আমির উদ্দিনের ছেলে মোশাররফ হোসাইন (২৮) এবং পূর্ব তাবালেচরের আব্বাসউদ্দীনের ছেলে সাকিব হাসান রানা (১৫)। উল্লেখ্য, রানা মোশাররফ হোসেনের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন কম দামে কিনে ফেঁসে গেছেন। মোশাররফ হোসেনের কাছ থেকে রুনার ব্যবহৃত মোবাইলসহ তিনটি সেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নুরুল আবছার নুরু বিকাশ, গ্যাস সিলিন্ডার, রড-সিমেন্ট, ডিজেলসহ নানামুখী ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। ব্যবসায়িক সুবাদে নানাজনের সাথে তার পরিচয়। সেখানে প্রবাসী অনেকের স্ত্রীও রয়েছেন। বিকাশে টাকা কিংবা গ্যাস সিলিন্ডার নিতে এমন একজন প্রবাসীর স্ত্রী নুরুর দোকানে আসা-যাওয়া করতেন। মাঝেমধ্যে নুরুর বাড়িতেও যেতেন। নুরু তাকে বোনের মতো কিংবা ভালো গ্রাহক হিসেবে  জানতেন। মাঝেমধ্যে টাকা দিতে নুরু ওই মহিলার বাড়িও যেতেন। বিষয়গুলো স্ত্রী রুনা পছন্দ করতেন না।

ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিবারের সবাই মিলে (নুরু, রুনা, মুনতাসীর ও জারিয়া) খাবার খান। স্বামী নুরুকে পেঁপে কেটে দেন রুনা। ছেলে মুনতাসীর খাবার খেয়ে জ্বীন নুরাইন হেফজখানায় চলে গেলে পরে শান্তি বাজার মসজিদে নামাজ পড়তে যান নুরু। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যেই অনাকাঙ্ক্ষিত কথার জেরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে গেছে। রান্নাঘরে পেছন থেকে বটি দিয়ে রুনার ডান গর্দানে আঘাত করেন নুরু। এ সময় রুনা ডানে ফিরতে চাইলে ডান বাহুতে আরো একটি কোপ দেয়া হয়। এতে মেঝেতে ঢলে পড়েন রুনা। ঘটনাস্থলে ছোট শিশু জারিয়া উপস্থিত হলে তাকেও মাথার পেছনে কোপ মারেন পাষণ্ড পিতা। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে দুটি খুনের ঘটনা ঘটে যায়। অথচ আশপাশের কেউ টেরই পায়নি। ঘটনার পর রক্তেভেজা পরিধানের কাপড়চোপড় ধোয়ার পরে শুকাতে দিয়ে মসজিদে চলে যান নুরু। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা-টিও সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে রেখে যান। আলমারির ড্রয়ারগুলো খুলে এলোমেলো করে দেন। গামছায় লেগেছিল রক্ত। এসব আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। 

স্থানীয়রা বলছেন, নুরু সওদাগর শান্তি বাজার জামে মসজিদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি জুমায় তিনি হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে সবার পরে আসেন। কিন্তু ঘটনার দিন তিনি আগে বের হয়ে যান। এছাড়া তার বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই মজবুত। বাইরের কেউ নুরুর বাড়িতে ঢুকে তার পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কাপড়-চোপড় ধুয়ে শুকাতে দিয়ে টাকা ও স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যাওয়া অসম্ভব। 

ঘটানার দিন নামাজ শেষে শান্তি বাজারের একটি সেলুনের দোকানে বসেন নুরু সওদাগর। এলাকার চৌকিদার ও স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। সেলুনের দোকানে বসে বারবার চেহারাটা দেখে নেন। অন্যদিন নিজের মোবাইল ফোন সাথে নিলেও ঘটনার দিন তিনি কোনো মোবাইল নেননি। দোকানের চাবিও সাথে রাখেননি। দুপুর ২টার দিকে পরিচিত একটি শিশুকে বাড়িতে পাঠান চাবির জন্য। এগুলো মূলত তার অভিনয় ছিল, যাতে কেউ সন্দেহ না করে তিনি হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। শিশুটি বাড়িতে রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখে বলতে গেলে নুরু দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করান।

খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিআইডির একটি টিম আলামত সংগ্রহ করে। পরদিন মা-মেয়ের ময়নাতদন্ত শেষে মাগরিবের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মানুষের ঢল নামে। পুলিশ প্রটোকলে জানাজায় অংশ নেন নুরু। 

তবে পুলিশ বলছে, প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না আসল খুনি কে? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট, সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপনসহ আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত।

T.A.S / জামান

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত