কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
নানা অনিয়মের অভিযোগে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সহকর্মিরা। চট্টগ্রামের কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দেওয়া হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সানজিদা মোখতার তানজিনের বিরুদ্ধে শিক্ষক ফান্ডের টাকা লুটপাট, সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে শিশু নিকেতন নামে আরেকটি কিন্ডানগার্টেন পরিচালনা করা ও মাসোহারা নেওয়া, কলেজের ফান্ড থেকে নানা খাত তৈরি করে অর্থ উত্তোলন। এছাড়া অধ্যক্ষের অদক্ষতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ননএমপিওভুক্ত শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া বিস্ময়কর। এমনকি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নিয়োগই অবৈধ দাবি করে সাধারণ শিক্ষক ও প্রভাষকরা লিখিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযো দিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দুদক শিক্ষকদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩ সালে নিয়োগ নিবন্ধন পাশ রয়েছে এমন শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হবে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। আবেদনকারীর সবাই নিবন্ধন পাশ হলেও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সানজিদা মোখতার তানজিন ও লুৎফুন্নেসা সিকদার নিবন্ধন পাশ না করেই আবেদন করেন।
দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগ বলা হয়- কলেজ শাখা চালু করার পূর্বে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে তাতে শর্ত ছিল শিক্ষক নিবন্ধন আবশ্যক। অন্যান্য আবেদনকারীরা যথারীতি শিক্ষক নিবন্ধন পাশের সনদ জমা দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এ দু’জন আবেদনকারী প্রভাবশালী ব্যক্তির সুপারিশে শুধুমাত্র খন্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। নিবন্ধন ছাড়া শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আপত্তি উঠলে তৎকালিন অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন বলেছিলেন-‘তারা শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য চাকুরি নিয়েছেন। পরবর্তীতে অন্য কলেজে চলে যাবেন।’ এখন অন্য কলেজে চলে যাওয়া দূরের কথা নানা কৌশলে কলেজটি বর্তমানে কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বনে গেছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অদক্ষ হওয়ার কারণে তিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২০২১ সালের ১৮ মার্চ। আর তিনি এমপিওভুক্ত হন ২০২২ সালের মে মাসে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কলেজের ফান্ড নয় ছয় করছেন। এ কারণে ২০১৯ সালে ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ উমর ফারুক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশে বলা হয়- ‘কলেজ শাখা প্রতিষ্ঠার পর তার একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার লক্ষে আপনাকে বিশেষ বিবেচনায় দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আপনি শিক্ষার্থীদের কোচিং করার নামে প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টাকা তুলে তা পরিচালনা কমিটির অগোচরে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষক কল্যাণ তহবিল এবং কো-অপারেটিভ এর নামেও টাকা সংগ্রহ করে নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিয়েছেন যা আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ। একজন শিক্ষক হিসাবে কেবল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করাই আপনার দায়িত্ব। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেকে সস্পৃক্ত করে এবং পরিচালনা কমিটিকে এড়িয়ে গিয়ে ভাগ-বন্টন করে নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করায় কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবেনা তা আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেয়া গেল।’
দুদক দেওয়া অভিযোগে বলা হয়- তিনি বিধি লঙ্ঘন করে শিশু নিকেতন নামে একটি কিন্ডারগার্টেন পরিচালনা করে তিনি ও তাঁর অনুগত শিক্ষক ও কর্মচারী মাসিক মাসোহারাও নিচ্ছেন। স্কুল শাখার এমপিওভুক্ত শিক্ষক মৌলানা মোহাম্মদ মুছাকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার দায়িত্ব দেওয়া বিধি বহির্ভূত। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অন্য প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক আহমেদ উল্লাহ বিগত ১ জানুয়ারি ২০০৫ থেকে ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সাল পর্যন্ত কুতুবদিয়া মডেল হাই স্কুলে আহমেদ উল্লাহ নামে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন তাঁর ইনডেক্স নম্বর ছিল ১০২৮১১৪। স্ত্রীর মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে স্কুল সভাপতির আবেদনের প্রেক্ষিতে নৈতিক স্খলনের দায়ে বাতিল হয়ে যায় তাঁর নিয়োগ। এতে এমপিও চলমান না থাকায় ইনডেক্স নম্বরও বিলুপ্তি হয়। পরে নানা অনিয়মের মাধ্যমে নতুন ইনডেক্স নম্বর নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তাদের দিয়ে বিভিন্ন উপ-কমিটি এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার কমিটি গঠন, বিনা ভোটে গভর্ণিং বডিতে যুক্ত করা, তার অনুগত ছাত্র অভিভাবক গভর্ণিং বডিতে রাখেন। যাতে সভায় সবাই তার পক্ষে কথা বলেন এবং সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, সরকারি অর্থ আত্মসাতসহ অনিয়মের অভিযোগ অফিসে জমা দিয়েছে। এটি যাচাই-বাছাই করে তদন্ত শুরু করব।
শিক্ষক আহমদউল্লাহ বলেন, আমার আগের ইনডেক্স নম্বরটি বাতিল হয়ে গেছে। কাজেম আলী স্কুল ও কলেজে আমার নিয়োগ বৈধ হওয়ায় আমাকে আবার ইনডেক্স নম্বর দিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সানজিদা মোখতার তানজিনের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব।
T.A.S / T.A.S
চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে জেলেবন্ধন
পাবনায় ট্রাকচাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩
কোনাবাড়ীতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
কবিরহাটে অবসরপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকদের বিদায় ও নবাগত শিক্ষকদের বরণ অনুষ্ঠান
হৃদরোগ প্রতিরোধে উত্তরাঞ্চলে বড় ভূমিকা রাখবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন- স্বাস্থ্য সচিব
টঙ্গীতে বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবসের অনুষ্ঠানে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ:
ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই ৩১ দফার মূল লক্ষ্য - কুমিল্লায় হাজী ইয়াছিন
বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ খুঁটি স্থানান্তরে প্রতিপক্ষের বাঁধায় ভুক্তভোগীর অভিযোগ
ভালুকায় ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে উৎসবমুখর পরিবেশ
৩১ দফা বাস্তবায়নে জনমত গঠনের লক্ষ্যে কর্ণফুলীর বড়উঠানে মতবিনিময় সভা
ঈশ্বরগঞ্জে সিএনজি ও পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ আহত ২
কুষ্টিয়ায় থানা পুলিশের অভিযানে ১৭ জন আসামি গ্রেফতার