শালিখায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা
ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাটতি যাব। ঠোঙ আইনে দে দড়া আইনে দে, বালিধারা খান কই? ঠিলের গলায় কানাচ নাগা বেলা গেল ওই। কন্ঠশিল্পী অনিল হাজারিকার জনপ্রিয় এ আঞ্চলিক গানের কথার বাস্তবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে গাছিদের মাঝে। সেই সাথে শীতের আগমনী বার্তার সাথে বেড়েছে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা শালিখার গ্রামাঞ্চলের খেজুর গাছের কদর।
এক সময় দিগন্তজুড়ে মাঠ কিংবা সড়কের দু'পাশে সারি সারি দেখা যেত অসংখ্য খেজুর গাছ। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই গ্রামবাংলার খেজুর গাছের ঐতিহ্য। সচারচার এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না লম্বা ঝিরিঝিরি পাতার খেজুর গাছ।
বৈচিত্র্যপূর্ণ ছয় ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। তেমনি এক ঋতু হেমন্ত। এই ঋতুতেই দেখা মিলে শীতের। এই শীতের সময়ই পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু পানীয় খেজুর গাছের রস। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে বসে এই সুস্বাদু খেজুর গাছের রস খাওয়ার যেন মজাই আলাদা। তাই শীত মৌসুমের আগমনী বার্তার সাথে সাথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন শালিখা উপজেলার গাছিরা।
এখনো তেমন একটা শীতের দেখা না মিললেও এরই মধ্যে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। খেজুর গাছ সংকটের কারণে প্রতি বছরের মতো এ বছরও চাহিদা অনুযায়ী রস পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করেছে অনেক গাছি।
কয়েক বছর আগেও এলাকার প্রতিটি বাড়িতে, ক্ষেতের আইলের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। খেজুর গাছ সচারাচর উপযোগী আবহাওয়ায় জন্ম হয়। এমনকি অনেক স্থানে একাধিক গাছ জন্ম নেয়ায় সৃষ্টি হয় দেশি খেজুর গাছের বাগান। এসব গাছ বাড়ির আঙ্গিনা, জমির আইল ও পতিত ভূমিতে জন্ম নেয় বেশি।
খেজুর গাছ সারা বছর অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকলেও শীত মৌসুমে তার কদর বেড়ে যায় অনেকাংশে। কারণ প্রতি বছরে ৪ মাস খেজুর গাছ থেকে গুড় ও মিষ্টি রস সংগ্রহ করা হয়। এ রস অত্যন্ত সুস্বাধু ও মানবদেহের উপকারিতার কারণে মানুষের কাছে অতি জনপ্রিয় হয়ে থাকে।
এক সময় শীতকালে শহর থেকে মানুষ ছুটে আসতো গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীণ পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা, ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন তারা। যার সাদ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। খেজুর গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস,গুড়,পিঠা,পুলি ও পায়েশ খাওয়ার পালা। এছাড়া খেজুর পাতা দিয়ে আর্কষণীয় ও মজবুত পাটি তৈরি হয়। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন,কালের বির্বতনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশবান্ধব খেজুর গাছ এখন উপজেলা জুড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শরুশুনা গ্রামের গাছি জামাল হোসেন ও আহাদ আলী বিশ্বাসের সাথে কথা বললে তারা বলেন,শীত মৌসুমের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। এই রস থেকে পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।
তারা আরো জানান, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে হয়তো বা এক সময় আমাদের এলাকা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাবে। তাই এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে বড় করা। যদি আমরা এই ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের জন্য ধরে রাখতে চাই তাহলে এই কাজে আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান-উপজেলায় প্রায় ২৬ হাজার খেজুর গাছ আছে, আমরা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তর থেকে শালিখা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই ধার দিয়ে খেজুর গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। খেজুর গাছ ফসলের কোন প্রকারের ক্ষতি করে না। এই গাছের জন্য বাড়তি কোন খরচ করতে হয় না। যা সকলের রস ও গুড়ের চাহিদা মিটাবে।
এমএসএম / এমএসএম
জুড়ী মডেল একাডেমিতে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
তারাগঞ্জে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
নেত্রকোনায় নিয়োগ ও বিএড সনদ সবই ভুয়া-তার পরও ২২ বছর ধরে শিক্ষককতা করছেন নুরুজ্জামান
বাউফলে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিএনপির কোরআন খতম ও দোয়া
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে এবি পার্টির প্রার্থী ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান মুহসেনীর গভীর শোক
চাঁদপুরে বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল
মোহনগঞ্জে নিয়োগ ও বিএড সনদ সবই ভুয়া, ২২ বছর ধরে শিক্ষককতা করছেন নুরুজ্জামান
নাটোরের সিংড়ায় কচুরিপানার কবলে ৫ হাজার হেক্টর জমি
সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় শিবচরের কৃষকরা
মানিকগঞ্জে রিতার বাড়ি ভাংচুর মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার
ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নতুন পেশেন্ট বেড প্রদান করলো পৌরসভা
চাঁদপুরে সংবাদ প্রকাশের পরও মাদকের ভয়াবহতা কমেনি