ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চাকরি করছেন অবৈধ নয় জন শিক্ষক


মনিরুজ্জামান মনি photo মনিরুজ্জামান মনি
প্রকাশিত: ১-১-২০২৫ দুপুর ৪:৩১

মিরপুর হযরত শাহ আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক সহ, নয় জন শিক্ষকের নিয়োগে  অনিয়ম ধরা পড়েছে তদন্তে। রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী থানা এলাকার হযরত শাহ্ আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নিয়ে এই তদন্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর।

তদন্ত প্রতিবেদন গত ৩ নভেম্বর,শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন  পরিদর্শন ও নিরীক্ষা  অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার পরিচালক কাজী মোহাম্মদ আবু কাইয়ুম স্বাক্ষরিত,স্মারক নম্বর- ৩৭.১৯.০০০০.০০৬.১৬.০১৭.২৪.২৫/১(৬) সিনিয়র সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, মহাপরিচালক-( অতিরিক্ত দায়িত্ব )মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ,চেয়ারম্যান- মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, সহ কয়েকটি দপ্তরে পাঠিয়েছেন  ।

অভিযুক্ত নয়জন শিক্ষকরা হলেন-
প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার (ইনডেক্স ৪৮৮২৭৩)
সহকারী শিক্ষক মাহফুজা আক্তার(ইনডেক্স ৩৫৯৮৬)
সহকারী শিক্ষক ডলি সাহা (ইনডেক্স ২৭৭৮৯০) 
সহকারী শিক্ষক-বাংলা শাহনাজ আক্তার (ইনডেক্স ২৮৪৮৯৫) সহকারী শিক্ষক-ভূগোল জেসমিন আহমেদ (ইনডেক্স ১০৬৭৭৮২)
সহকারী শিক্ষক-ইংরেজি লক্ষ্মী রানী দেবনাথ (ইনডেক্স ১০৭২৪৪৩)
সহকারী শিক্ষক- বাংলা কহিনুর নেছা (ইনডেক্স ১১০১৪৮৫) সহকারী শিক্ষক-বিজ্ঞান 
হোসনে আরা হ্যাপী (ইনডেক্স ১১৪৩৬৮৬)
সহকারী শিক্ষক- ব্যবসায় শিক্ষা ,
ইকবাল আলী (ইনডেক্স ৫৬৮০৩৩৪৯)


প্রধান শিক্ষক-নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিনি ২৭ -৪-২০০২ ইং তারিখে যোগদান করেন । ২১-২- ২০০২ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ১৬-৩- ২০০২ তারিখের নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় । তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে, তার ভিতর উল্লেখযোগ্য ২৪-১০-১৯৯৫ নীতিমালা লঙ্ঘন করে মনগড়া ও শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার শর্তারোপ করে বিজ্ঞপ্তি প্রদান, সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে তিন (৩)বছরের অভিজ্ঞতা সহ শিক্ষকতা পেশায় নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যালয়ে ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা না থাকা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন না করায় তার  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিধি সম্মত হয়নি । তার নিয়োগ বিধি সম্মত না হওয়ায় , তিনি আর বেতন ভাতা পাবেন না ।

তৎকর্তৃক ১-৬ -২০০২ তারিখ হতে ৩১-০৩-২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত গৃহীত ৪২০৩৩৫১ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য মর্মে উল্লেখ করা হয় । সহকারী শিক্ষক মাহফুজা আক্তার এবং সহকারী শিক্ষক ডলি সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ পর্যালোচনা করে জানা যায়, তারা যথাক্রমে ৩-৪-১৯৯৩ ইং ও ১-৪-১৯৯৩ ইং তারিখে যোগদান করেন । 
৮-৩-১৯৯৩ ইং তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ১৯-৩-১৯৯৩ ইং তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হলেও নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শীট প্রদর্শন করেননি । নিয়োগ কমিটির রেজুলেশনে  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিনিধি হিসেবে জনাব কে এম খবির উদ্দিন -সিনিয়র শিক্ষক এবং মাওলানা সিরাজুল ইসলাম- সহকারী শিক্ষক মিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বাক্ষর থাকলেও তাদের কোন সিল নাই, বিধায  তাদের নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি । কাজেই তারা আর সরকারি বেতন ভাতা পাবেন না এবং তাদের গৃহিত সকল অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য মর্মে  উল্লেখ করা হয়েছে ।

সহকারী শিক্ষক-বাংলা শাহনাজ আক্তারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও তার নিয়োগ রেকর্ড যাচাই করে দেখা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা-১ জন শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সহ বিএ পাস । তার নিয়োগ কালে ১-১-১৯৮২ ইং তারিখে জারিকৃত নীতিমালা বহাল ছিল, ঐ নীতিমালা অনুযায়ী ,অভিজ্ঞতার শর্ত নেই । নীতিমালা বহির্ভূতভাবে অভিজ্ঞতার শর্ত দেওয়ায় অনেকে আবেদন করতে পারেননি । নীতিমালা বহির্ভূতভাবে পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় তার নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি ‌। কাজেই তিনি সরকারি বেতন ভাতা  পাবেন না এবং তার সমুদয়  গৃহীত অর্থ সরকারের কোষাগারে ফেরতযোগ্য মর্মে উল্লেখ করা হয় ।

সহকারী শিক্ষক-ভূগোল (সমাজবিজ্ঞান) জেসমিন আহমেদ এর বিরুদ্ধে আনীত  অভিযোগ, ৩-৫-২০১১ ইং তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় । নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যোগ্যতার শর্ত দেওয়া হয় যে, ভূগোল বিষয়ে অনার্স সহ মাস্টার্স ডিগ্রি, ১৪-৫-২০১১ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় । ১৯/৬/২০১১ ইংরেজি তারিখে তিনি যোগদান করেন ।  তার নিয়োগ কালে ৪/২/২০১০ তারিখের জনবল কাঠামোতে ভূগোল বিষয়ের কোন শিক্ষকের পদ নেই, তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এবং তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন । জনবল কাঠামো বহির্ভূতভাবে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায়, তার নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি । কাজেই তিনি সরকারি বেতন ভাতা পাবেন না, তার গৃহীত সমুদয় টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত যোগ্য উল্লেখ করা হয় ।
সহকারী শিক্ষক- ইংরেজি লক্ষী রানী দেবনাথ  এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়  ৩-৫-২০১১ ইং তারিখে , পরীক্ষা হয় ১৪/৫/২০১১ ইং তারিখে এবং যোগদান করেন ৩১-৫-২০১১ তারিখে । ৪-২-২০১০ জনবল কাঠামো বিধি বহির্ভূত ভাবে  পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায়, তার নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি, কাজেই তিনি সরকারি বেতন ভাতা পাবেন না এবং তার সকল অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য বলে উল্লেখ করেন ।

সহকারী শিক্ষক- বাংলা কহিনুর নেছা, সহকারী শিক্ষক- বিজ্ঞান হোসনে আরা হ্যাপী, সহকারী শিক্ষক- ব্যবসায় শিক্ষা ইকবাল আলী দের  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ৯-১২-২০১২ ইং তারিখে, নিয়োগ পরীক্ষা হয় ২৮-১২-২০১২ ইং তারিখে, ৪-২-২০১০ তারিখের জনবল কাঠামো বহির্ভূতভাবে  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় ,তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বিধি সম্মত হয়নি । তাই তাদের গৃহীত সমুদয় অর্থ ফেরত যোগ্য মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে ।

নিয়োগে  অনিয়মের কারণে ৯ জন  শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ও বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া অর্থ  সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া সহ  দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই তদন্ত করেন অধিদপ্তরের তৎকালীন শিক্ষা পরিদর্শক স্বরূপ কুমার কাহালী, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক রাকিবুল হাসান এবং অডিট অফিসার চন্দন কুমার দেব ।

একাধিক এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগে নার্গিস আক্তার এনজিওতে চাকরি করতেন । মানিকগঞ্জে করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি, মোহাম্মদপুর, কাউন্দিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় তার নামে বেনামে করেছেন একাধিক দামি ফ্লাট ও প্লট । মার্কেটের  বেশীর দোকান অবৈধ উপায়ে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার শিক্ষকতা করার আগে একটি এনজিও তে চাকরি করতেন ।

সরেজমিন হযরত শাহ আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তারের রুমে গিয়ে দেখা যায়, ৮-৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বসে কি যেন বৈঠক করছেন ।সাংবাদিক পরিচয়ে  পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন, উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন । তিনি এটাও দাবি করেন বিগত আওয়ামী লীগের সময় তার বিরুদ্ধে  নাকি জামায়াত ইসলামের তকমা লাগিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল । অবশ্য কাগজটা চাইলে দেখাতে পারেননি । তার আচরণটা এমনই ছিল "চোরের মায়ের বড় গলা" ।

অতীতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে, এ বিষয় জানতে চাইলে বলেন সাংবাদিকরা করলে আমি কি করবো । অন্যান্য শিক্ষকদের পরিচয় জানতে চাইলে কোন শিক্ষকই পরিচয় দিতে রাজি হননি । আরেকজন সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা) ইকবাল আলীর নিকট ফোনে জানতে চাইলে-তিনি নিজেকে অনেক বড় কিছু বলে দাবি করেন এবং সাংবাদিকের সঙ্গে শাসিয়ে কথা বলেন ।

পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে ঢাকা জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মজিদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি এখন ডিসি স্যারের রুমে মিটিং এ আছি,পরে বিষয়টা দেখবো ।এ বিষয়ে জানতে হযরত শাহ আলী উচ্চ বিদ্যালয় এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল ৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা  (উপসচিব) মোঃ জুলকার নায়ন এর মুঠোফোনে একাধিকবার  ফোন দিলেও রিসিভ না করাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ।

এমএসএম / এমএসএম

এসেনসিয়াল ড্রাগসের এমডির আত্মীয়দের বদলি বাণিজ্য

ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭ এর নির্বাচিত নতুন কমিটির অভিষেক দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত

উদ্যোমী নারীদের সম্মাননা জানাল ‘উইমেন’স ফাউন্ডেশন’

উত্তরা সেক্টর-১২ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রোজাদার পথচারীদের পাশে ইফতার নিয়ে হাজির আজমল হুদা মিঠু

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ৮ জন নারী উদ্যোক্তা পেলেন সাহসিকা সম্মাননা

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ছাত্র দলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বিআরটি’র ফ্যাসিস্ট আওয়ামীর দোসর এডি আলী আহসান বহাল তবিয়তে

ধর্ষণও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

ছুরিকাঘাতে রাজধানীতে যুবক নিহত

আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই আওয়ামী লীগ নেত্রী তাহমিনার

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উন্নয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন