ফের সচল হবে সীমান্ত বাণিজ্যে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থল বন্দর অচল হয়ে পরে আছে। সেদেশে যুদ্ধ সেটি তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়। তবে বন্দরের অন্ধকার কেটে যাবে, খুব দ্রæত আলো ফিরবে। কারন দু’দেশে পণ্যে চাহিদা থাকায় ফের পুরোধুমে সীমান্ত বাণিজ্যে পূণরায় সচল হবে। সরকার সে বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
১১ ডিসেম্বর (শনিবার) বেলা ১২টায় সদর ইউনিয়নের কেরুনতলীস্থল টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান। এসময় তিনি স্থলবন্দরের সাথে শ্রম আইন অধিকারের বিষয়ে শ্রমিকদের সাথে বৈঠকে বসেন।
বৈঠকে উপস্থিল ছিলেন অতিরিক্ত সচিব শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালরে মোঃ সবুর হোসেন, যুগ্ম সচিব মাসুকুর রহমান, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন, বন্দরের মহাব্যবস্থপক জসিম উদ্দিন, ম্যানেজার মোঃ আনোয়ার হোসেন, আমদানি কারক এনামুল হাসান ও শ্রমিক নেতা আলী আজগর মাঝি প্রমুখ।
শ্রমিকদের উদ্দেশে সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘এখানে অনেক সমস্যা রয়েছে। তার মধ্য পরিবহন খাত অন্যতম। এখন পথে পথে চাঁদাবাজি, স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজি হচ্ছে, সেগুলো বন্ধের সময়। তাই সবাইকে একসাথে কথা বলতে হবে। কেননা সরকার পতনের আগে এক সরকার ছিল। এখন নতুন এক বাংলাদেশের, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। আমরা চাই সকল বৈষম্য দূর হোক। এটার কারনে আমি এখানে এসেছি।’
এই স্থলবন্দরে যাতে শ্রম আইন লঙ্ঘন না হয় সেদিকে সবাই সর্তক থাকতে হবে উল্লেখ করে সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকরা যাতে তাদের নায্য অধিকার পায় সেটি নিশ্চত করতে হবে। বিশেষ করে এখানে (স্থলবন্দরে) কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় হতাহতের শিকার হন শ্রমিকরা। আমরা তাদের (শ্রমিকদের) সহতায় করতে চাই। সেক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। সেগুলো ফলো করতে হবে। তবে বন্দরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রথম অগ্রাধিকার দিতে হবে। এদের সবার একটা ডাটাবেজও করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘সীমান্ত বাণিজ্যে বন্ধ রাখা উচিত না। প্রথম দরকার ওপারের শান্তি, সেটি হলে সীমান্ত বাণিজ্যে আগের রুপে ফিরবে। মিয়ানমার আমাদের পাশেবর্তী, বিকল্প বাণিজ্যের ধার উম্মেচন হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।’
শ্রমিক নেতা আলী আজগর মাঝি বলেন, ‘স্থলবন্দরে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। বিশেষ করে স্বাস্থ্যাসেবাসহ দূঘর্টনার শিকার শ্রমিকরা সহতায় না পাওয়া বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। পাশাপাশি শ্রম অধিকার আইন লঙ্ঘন না হয় সেদিকে সবাইকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।’
টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক এনামুল হাসান বলেন, ‘রাখাইন সংঘাতে মংডু টাউনশিপে আরাকান আর্মির দখলের পর টেকনাফ বন্দরে পণ্যেবাহি ট্রলার আসা বন্ধ রয়েছে। মূলত সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌরুটে তাদের প্রতিবন্ধকতার কারনে মিয়ানমার থেকে ট্রলার আসতে পারছে না। যার কারনে ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত দ্রæত এটি সমাধান করা।’
স্থল বন্দরের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে মাসখানেক ধরে পণ্যেবাহি ট্রলার আসা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল বন্দর পরিদর্শন করেছে। এসময় শ্রম অধিকারসহ শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছে। খুব দ্রæত সীমান্ত বাণিজ্যে আগের মতো সচল হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’
এদিকে মিয়ারমারের সংঘাতে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মি দখলের পর থেকে গত ৮ ডিসেম্বরের পর থেকে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোন ধরনের পণ্যেবাহি ট্রলার আসেনি। ফলে স্থলবন্দর অচল হয়ে পরে আছে।
এমএসএম / এমএসএম