মাঘের শুরুতেই শীতে বিপর্যস্ত বারহাট্টার জনজীবন
মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বারহাট্টার জনজীবন। বিশেষ করে গত তিনদিন ধরে হঠাৎ করে শীতের চোট টের পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, গত কয়েক দিন ধরে সারাদেশের ন্যায় উপজেলা জুড়ে বেড়েছে শীতের দাপট। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কখনো কখনো সূর্যের দেখা মিললেও চারদিকে থাকছে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন। আর সন্ধ্যা হওয়ার আগেই অনুভূত হচ্ছে হাড়কাঁপানো শীত। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুরাও শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। শীত ও কনকনে ঠাণ্ডায় খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন হতদরিদ্র মানুষজন। এছাড়াও ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় সবধরনের যানবাহ হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে।
কাজের সন্ধানে বের হওয়া গোপালপুর ও আসমা বজারে চায়ের দোকানে বসে থাকা কয়েকজন দিনমজুরের সাথে কথা বললে তারা সকালের সময়েকে বলেন, কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে সকাল ৭ টায় বের হয়েছি। সকাল থেকে বসে আছি কেউ আসেনি কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য। আমরা দিন আনি দিন খাই। কাজ না পেলে না খেয়ে থাকতে হবে। আমরা একদিন কাজ না করলে পেটে ভাত যায় না। এছাড়াও সংসারের খরচাপাতি ও সমিতির কিস্তি নিয়ে বিপাকে আছি।
ইজিবাইকচালক করিম বলেন, ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে মানুষ বাসা থেকে কম বের হচ্ছে। যার ফলে আয় কমে গেছে। সংসার পরিচালনা করতে কষ্ট হচ্ছে। তারপরও পেটের দায়ে শীতকে উপেক্ষা করে বের হতে হচ্ছে। ভ্যানচালক হাসিম মিয়া বলেন, যতই শীত আর কুয়াশা আসুক, পেটের তাগিদে আমাদেরকে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হতেই হয়। ঠান্ডায় মানুষ বের হচ্ছেন না, তাই কোন ক্ষ্যাপ মিলছে না। ময়মনসিংহ থেকে আসা ট্রাক চালক আবু মনসুর বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে রাতে নেত্রকোনা থেকে বারহাট্টা আসতে ২০ মিনিট সময় বেশি লাগছে। সড়কে এতো ঘনকুয়াশা একেবারে ধীরগতিতে যেতে হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শীতের শুরু থেকেই বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী পক্ষ থেকে উপজেলার ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের মধ্যে ৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আবারো বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।
বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সকালের সময়কে বলেন, শীতজনিত রোগবালাই বিশেষ করে নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক মানুষ। শীতে শিশুরা কোল্ড ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান জানান, উপজেলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম