ইন্দুরকানীতে ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদারের পরিবারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, জমি দখল ও দুর্নীতির অভিযোগ
পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের রেখা খালি গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে জমি দখল, হামলা, দুর্নীতি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং রাজনৈতিক সুবিধাদি ও খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি এই পরিবারের বিভিন্ন কাজের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোঠার সুবিধা নিয়ে তার দুই ছেলে মনিলাল হাওলাদার ও উত্থান হাওলাদার যথাক্রমে স্বাস্থ্য সহকারী ও পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, স্বল্প শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক লেনদেন ও প্রভাব খাটিয়ে তারা এই চাকুরি পেয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অমর মিস্ত্রী ও মৃতুঞ্জয় মিস্ত্রীর জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।ধীরেন্দ্রনাথের ছেলে মনিলাল হাওলাদার, তার স্ত্রী তিথি মিস্ত্রী এবং ভাইপো সৌরভ হাওলাদার মিলে দেশীয় অস্ত্রসহ অমর মিস্ত্রী ও তার পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত হন মৃতুঞ্জয় মিস্ত্রী, শেফালী রানী, অসীম মিস্ত্রী, দীপালী মিস্ত্রী ও শিপ্রা মিস্ত্রী।
অভিযোগ রয়েছে, মনিলালের ভাই উত্থান হাওলাদার এই হামলার নির্দেশ ফোনে দেন।উত্থান হাওলাদার বর্তমানে ভোলা জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পুলিশ সুপারের নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে, ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিজের পরিবারের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে আড়াল করেন।
এছাড়া, মনিলাল হাওলাদারের ভাইপো সৌরভ হাওলাদার স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, সে উত্থান হাওলাদারের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সুবিধাবাদী আচরণের অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, তিনি অতীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে স্বার্থসিদ্ধি করেছেন। এমনকি, শীর্ষ জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করেছেন।
হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উভয় পক্ষকে মীমাংসার পরামর্শ দেন। তবে মনিলাল হাওলাদার তা উপেক্ষা করে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসীর দাবি, ধীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তাদের মতে, এই পরিবারের অপকর্মের কারণে এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এমএসএম / এমএসএম