এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের চুক্তি বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলন: বক্কর
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেছেন, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিকট ২৫ বছরের জন্য লীজ দেয়ার সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের সকল ক্লাব ও ক্রীড়ামোদী জনগণ হতবাক হয়েছে। এই স্টেডিয়ামের সাথে চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের সম্পর্ক।ষ্টেডিয়াম বরাদ্দের ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ ক্ষোভে ফুসে ওঠেছে। চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে আলোচনা না করে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়া চট্টগ্রামবাসী কোনদিন মেনে নেবে না। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেন। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের চুক্তি বাতিল না করলে চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি খেলাধুলার সাথে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের নিয়ে সিজেকেএসের যে এডহক কমিটি করা হয়েছে তা বাতিল করা হোক।
তিনি মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নগরীর কাজীর দেউরী এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে এসব কথা বলেন।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য বাফুফেকে লিজ দেয়া ও সিজেকেএসের এডহক কমিটি বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এতে চট্টগ্রামের বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া সংগঠক, সাবেক খেলোয়াড়, ক্রীড়া কর্মকর্তা, কোচ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
এসময় আবুল হাশেম বক্কর বলেন, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলাধুলা বন্ধ হলে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন খেলা সমূহের খেলোয়াড়, কোচ, কোচিং স্টাফ সহ প্রায় সাত হাজারের অধিক পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাফুফেকে মাঠটি বরাদ্দ দিলে ফুটবল ছাড়া অন্যান্য ৩০টি খেলার স্থানীয় টুর্নামেন্ট এবং এইসব ইভেন্টের অনুশীলন কর্মকান্ডও বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যদিকে যুব সমাজ মাদকাসক্ত সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হওয়ার আশংকা রয়েছে। আমরা বলতে চাই, চট্টগ্রামের বৃহত্তর স্বার্থে এ মাঠটি শুধুমাত্র চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের জন্যই ব্যবহৃত হবে।
সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি বলেন, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামটি বহুমাত্রিক ক্রীড়া কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ মাঠ থেকেই জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলার সহ অন্যান্য খেলোয়াড় সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চট্টগ্রামের ক্রীড়াংগনের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি খেলাকে প্রাধান্য দিয়ে বাফুফেকে ২৫ বছরের জন্য স্টেডিয়ামটি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ক্রীড়া সংগঠক হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদেরকে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবার জন্য বাধ্য করবেন না। পুরো চট্টগ্রামবাসী আমাদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। চট্টগ্রামের মেয়রও আমাদের আন্দোলনের সাথে আছেন। মেয়রের মাধ্যমে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে স্মরকলিপি দিয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যার সমাধান চাই।
সৈয়দ আবুল বশর বলেন, মাঠ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের প্রতি আরেকটি বৈষম্য। এই বরাদ্দ দেওয়া হলে নতুন প্রজন্ম খেলাধুলা থেকে সরে যাবে। আমাদেরকে বিরাগভাজন করবেন না। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে আসিনি। আমাদের ঘর সুরক্ষা করার জন্য এসেছি। চট্টগ্রামে যেভাবে সিআরবি রক্ষা হয়েছে সেভাবে স্টেডিয়ামকে রক্ষা করবো।
সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম বলেন, আমাদের প্রাণের স্পন্দন এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য একটি কুচক্রী মহল অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ চট্টগ্রামে অনেক খালি জায়গা আছে। সেখানে আরেকটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরি করতে পারে। তবে আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাফুফে থেকে একটি পত্র দিয়েছে। স্টেডিয়ামের স্থাপনা পরিদর্শনের জন্য তারা একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। তবে এই বরাদ্দ অবশ্যই বাতিল করতে হবে।
ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান, ক্রীড়া সংগঠক মশিউল আলম স্বপন, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, এম এইচ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি এড. শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, সাবেক ফুটবলার হাফিজুর রহমান, ফ্রেন্ডস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আবুল বশর, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন মো. আলমগীর, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, বাকলিয়া একাদশের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, শতদল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, নওজোয়ান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, নবীন মেলার সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার শহীদুর রহমান, হকি কোচ মহসিন চৌধুরী, পেশাজীবি নেতা ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন, ইঞ্জি. জানে আলম সেলিম, ক্রীড়া সংগঠক ইদ্রিস আলী, এমদাদুল হক বাদশা, মেয়রের সিজেকেএস প্রতিনিধি আবদুল আহাদ রিপন, সিজেকেএস কাউন্সিলর আবু শামা বিপ্লব, জাতীয় ক্রিকেটার ইয়াসিন আলী রাব্বি, সাবেক ক্রিকেটার মাসুম উদ্দৌলাহ, মোহামেডান ব্লুজের কাউন্সিলর সৈয়দ জিয়াউদ্দিন সোহেল, সাবেক জাতীয় সাঁতারু মাহবুবুর রহমান সাগর, নারী নেত্রী ছকিনা বেগম, শামসুন্নাহার প্রেমা, কামরুন্নাহার, রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, ক্রিড়া সংগঠক শাহেদ আকবর, মো. মিল্টন, এন মো. রিমন, জহির উদ্দিন বাবর প্রমূখ।
এমএসএম / এমএসএম