ঢাকা বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

দুই দলের দ্বন্দ্বে পন্ড হলো ১৩২ বছরের ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচন


সেলিম চৌধুরী , চট্টগ্রাম ব্যুরো  photo সেলিম চৌধুরী , চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত: ৫-২-২০২৫ দুপুর ২:৪৫

 আওয়ামীলীগ -বিএনপি দুই দলের দ্বন্দ্ব,  জয় পরাজয়ের শঙ্কা ও পরস্পর বিরোধী অবস্থানের কারণে স্থগিত হলো  চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ধারাবাহিক ঐতিহ্যর বার্ষিক নির্বাচন । 
হামলা -মামলার আশঙ্কায় নির্বাচনের ৬ দিন আগে পদত্যাগ করেছেন আইনজীবী সমিতির  গঠিত নির্বাচন কমিশন। এতে গঠন তান্ত্রিক সংকটে পরে পন্ড হয়ে গেল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির  আসন্ন   ১০ ফেব্রুয়ারীর  নির্বাচন। পদত্যাগের এমন নজিরবিহীন ঘটনার পর কবে নির্বাচন হয় তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। 
সূত্র মতে , জেলা আইনজীবী সমিতি গঠন হওয়ার পর থেকে   প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী মাসে ১০ তারিখ চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়,  এবারও তারই ধারাবাহিকতায় ২০ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। 
  আওয়ামীপন্থী আইনজীবীগনের দাবি তাদের বিজয় নিশ্চিত জেনে  বিএনপি পন্থী আইনজীবীগন ফ্যাসিষ্ট এর দোসর ও আইনজীবি আলিফ হত্যার সাথে জড়িত আখ্যা দিয়ে  তাদের কে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার  কূটকৌশলে নির্বাচন কমিশন কে চাপ সৃষ্টি করে। আর বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি আওয়ামী পন্থী আইনজীবীগন তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে নানা সুতায়  বাহানা খুঁজে নির্বাচনে সেনা মোতায়নের দাবি উঠায়  যেটা সমিতির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। এমনিতেই  যারা ফ্যাসিষ্ট তাদের নির্বাচন করা সূযোগ নেই। 
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায় এদের দুই দলের মুখোমুখি অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই এবং নানা অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করেছে।  

সূত্রজানায়  ৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়ে পদত্যাগের বিষয়টি জানান নির্বাচনী কর্মকর্তারা। চিঠিতে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সোলায়মান, নির্বাচনী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দত্ত, তারিক আহমদ, সাম্যশ্রী বড়ুয়া এবং মো. নুরুদ্দিন আরিফ চোধুরীর স্বাক্ষর রয়েছে।পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ জানুয়ারি সমিতির গঠনতন্ত্রের বিধানমতে সমিতির নির্বাচনে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের মনোনীত করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী কর্মকর্তারা প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত এবং ব্যালট পেপার ছাপানোসহ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূলে না থাকা সত্ত্বেও আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এবং উৎসাহ নিয়ে আমাদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিলাম।

পদত্যাগপত্রে আরও বলা হয়, (মঙ্গলবার) আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগের প্রস্তাব করে একটি দরখাস্ত দেয়। অপরদিকে ঐক্য পরিষদ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মনোনয়ন বাতিলের জন্য আবেদন করেন। দুটি আবেদনই সমিতির গঠনতন্ত্র বর্হিভূত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন চায় না সমিতির কোন সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হেনস্তার শিকার হোন। উভয়পক্ষের পারস্পরিক অবস্থান নির্বাচনের প্রতিকূলে হওয়ায় এবং নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে হেনস্তা, ভয়ভীতি ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এমতাবস্থায়, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন করার কোনো সুযোগ বা পরিবেশ না থাকায় নির্বাচন কমিশন সর্বসম্মতভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে অপরাগতা প্রকাশ করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

চট্টগ্রাম আদালতের কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে ৩২টি নির্বাচন হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবগুলো নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে হয়েছে। শুধুমাত্র এবারই দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচন পণ্ড হয়েছে। চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীদের মধ্যে এমন দ্বন্দ্ব-বিভেদ ১৩২ বছরের ইতিহাসে নেই।

আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম  বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি-দাওয়ার মুখে পদত্যাগ করেছেন সবাই। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আমাদের সমিতির নির্বাচন হচ্ছে না। যার জন্য এ নির্বাচন পণ্ড হয়ে গেছে। এখন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ১১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সভা ডাকা হবে। সেখানে অ্যাডহক কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নতুন করে নির্বাচন করতে হলে ৬০ দিন বা ২ মাস আগে সম্ভব নয়।’

Fপদত্যাগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘আমি চিঠিতে পদত্যাগের কারণ উল্লেখ করেছি। চিঠিটা সংগ্রহ করে পড়ে নিন, পদত্যাগের কারণ জানতে পারবেন।’

বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী হওয়া আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে হুমকি গিয়েছে। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছে, এসবের জেরে মনোয়ন বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়। আমাদের প্রার্থীদের কোনো যোগসূত্র নেই। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে নির্বাচন হচ্ছে না।

অন্যদিকে ‘রশিদ-জাবেদ-মাহতাব পরিষদ’ থেকে সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল রশিদ নিজেদের স্বতন্ত্র প্যানেল দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবগুলো নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে হয়েছে। এবারই বহিরাগতরা মিছিল-মিটিং করেছে। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের ঘটনা সমিতির এবারই প্রথম। নির্বাচনের পেছনে আমাদের শ্রম সময় অর্থ সবই বৃথা। দলীয় দ্বন্দ্বের জেরে এখন নির্বাচন হচ্ছে না।’

এবারের নির্বাচনে ২১টি পদে ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ছিল মোট ৫ হাজার ৪০৪ আইনজীবীর।

এদিকে গত ২৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

এমএসএম / এমএসএম

গোদাগাড়ীতে বাঁশঝারের নিচ থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

দাশুড়িয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুলে মেধাবী সংবর্ধনা ও ফ্যামিলি স্পোর্টস ডে উদযাপন

বকশীগঞ্জে ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিকদের সমস্যা একইঃ পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহাম্মেদ মারুফ

জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের সহায়তায় মেডিকেল ভর্তি নিশ্চিত আশিক হাসানের

ডামুড্যায় ৫৩ তম শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

কর্ণফুলীতে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ ব্যাংকারের বিরুদ্ধে

দাউদকান্দিতে ৮ ফেব্রুয়ারী বিএনপির জনসভা উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

কুড়িগ্রামে সবকটি পেট্রোল পাম্প বন্ধ

থানার গোলঘরে মারামারি, ৬ আসামির জামিন দিলো আদালত

নোয়াখালীতে গুলি-ইয়াবাসহ গ্রেফতার মাদক কারবারি

"শেখ হাসিনাতেই আস্থা" লিফলেট বিতরন' ৬ জনের নামে মামলা

সাতকানিয়া উপজেলা, পৌরসভা ও উত্তর সাতকানিয়া বিএনপি'র আনন্দ মিছিল