কেশবপুরের আকাশে দেখা মিলছে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ঘুড়ি
যশোরের কেশবপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামবাংলাার চিরায়ত ঘুড়ি নিয়ে মেতে ওঠার দৃশ্য চোখে পড়ে। আর ঘুড়ি ওড়ানোর মজা নিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। মেঘহীন প্রতিটি বিকেলেই উপজেলার গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও বিনোদন হিসেবে সব বয়সেরই মানুষ ঘুড়ি উড়িয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাঙালির ঐতিহ্য ঘুড়ি ওড়ানোর এ উৎসব নিত্যদিনই অনন্য এক বিনোদনের খোরাক।
বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির দাপটে ঘুড়ি উড়ানোর চল নেই বললেই চলে। ব্যস্ততার জাঁতাকলে পিষ্ট নাগরিক জীবনে বাড়ির ছাদেও ঘুড়ি উড়ানোর প্রবণতা কমেছে। কিন্তু বছরের এই সময়ে প্রতিদিন বিকেলে ঘুড়ি ওড়ানোর রঙিন উৎসবে মেতে ওঠে কিশোর-তরুণরা। প্রতিটি ঘুড়ির সঙ্গে যেন উড়ে বেড়ায় তাদের উচ্ছ্বল মনও।
কথা হয় উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাব্বির হোসেন, হোসেন, স্কুলছাত্র রজিবুল, রাকবিুলের সাথে। তারা জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, কী করব। বাড়িতে বসে বসে আর পারা যাচ্ছে না। সমায়টা পার করতে হবে আর কী। আর ঘুড়ি ওড়ানোর মজাটাই আলাদা। আমরা নানা রঙের কাগজ দিয়ে ঘুড়ি বানিয়ে প্রতি বছরই এ সময়টায় ওড়াই। যখন নানা রঙের ঘুড়ি আকাশে একসাথে ওড়ে তখন এটা দেখার মজাই আলাদা।
ঘুড়ি ওড়ানোর দৃশ্য তুলে ধরে উপজেলার বেলোকাটি গ্রামের কৃষক মশিয়ার রহমান জানান, এখন ধান কাটা শেষ। সবাই বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছে, কাজও নেই তেমন। প্রতিদিন বিকেলে নানা বয়সের মানুষ নানা রঙের ঘুড়ি ওড়ায়। আর ঘুড়ি ওড়ানোর মজাই আলাদা। আমরা সবাই মিলে ঘুড়ি উড়াই। তিনি আরো জানান, ঘুড়ি ওড়ানো বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য। বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যবহারের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এ উৎসব। তবে নির্মল আনন্দের বার্তা নিয়ে এখনো গ্রামবাংলায় টিকে রয়েছে ঘুড়ি ওড়ানো। গ্রামবাংলার এই ঘুড়ি উৎসব টিকে থাকুক সব সময়।
বিদ্যানন্দকাটি গ্রামের বাপ্পা ঘোষ জানান, আগে বাড়িতে নিজেরাই ঘুড়ি বানাতাম। এখন দোকানে দোকানে রং–বেরংয়ের বিভিন্ন পাখি, মানুষাকৃতির ঘুড়ি পাওয়া যাচ্ছে। তবে সবকিছুর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয় সরকারিভাবে, ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা হয় না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি সরকারিভাবে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা আয়োজনের দাবি জানান।
এমএসএম / জামান