আটঘরিয়ায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় দু’দলের দুই মামলা

পাবনার আটঘরিয়ায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে দু’দলের দুই মামলা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে একটি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, উভয় পক্ষ পৃথক এজাহার দিয়েছে। তারপর মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।
তার মধ্যে বিএনপির দায়ের করা মামলার বাদি হলেন-আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্ববায়ক আছিম উদ্দিন। মামলায় জামায়াতের নামীয় ১২৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৭। এই মামলায় উপজেলার বিএনপির অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে।
অপরদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদি আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ নকিবুল্লাহ। মামলায় বিএনপির নামীয় ৩৬ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১২০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৮। এই মামলায় উপজেলা জামায়াতের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুজ্জামান বলেন, মামলা দু’টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলা দুটির আসামিদের নাম জানাতে অপারগতা জানান ওসি।
পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় জামায়াতের এমন অভিযোগের জবাবে ওসি বলেন, আমরা চাকরি করতে এসেছি। এখন কোনো দলই ক্ষমতায় নেই। আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবো। আমাদেও যে কাজ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সে কাজ করবো।
ঘটনার বিষয়ে ইউএনও যা বললেনঃ
সেদিনের ঘটনার বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম বলেন,“সেদিন মনোনয়ন ফরম তুলতে বাধা দেয়ার বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষ প্রথমে জানায়। আমি থানার ওসিকে ফোন দিলে তিনিও সেখানে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এছাড়া জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রথমে মৌখিকভাবে আমাকে জানায়। পরে তারা লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। সেদিনই বিকেলে দুই পক্ষকে ডেকেছি। কিন্তু তার আগেই হঠাৎ করে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে গেল।”
ইউএনও মিনহাজুল আরো বলেন,“ঘটনার পর কলেজের কমিটির সদস্যরা আমরা বসেছিলাম কি করা যায় এটা নিয়ে। এখনও আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। বিধি ও নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আমরা কার্যক্রম চালাচ্ছি।”
বিএনপি জামায়াতের অফিস ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছিলেন কি না এবং সেখানে কি অবস্থায় দেখেছিলেন জানতে চাইলে তিনি সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।
দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে পরদিন শুক্রবার (১৬ মে) জুমআর নামাজ হয়নি কেন জানতে চাইলে ইউএনও মিনহাজুল ইসলাম বলেন,“ঘটনাটি আমি জেনেছি নামাজের আগ মুহুর্তে। জুমআর নামাজের পর বিষয়টি বসে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। আর ওই সময় তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে পাওয়াও যাচ্ছিল না। পরে সেটি সমাধান হয়ে গেছে।”
সেদিন কি ঘটেছিল? জুমআর নামাজ কেন হয়নি?
সেদিন কি ঘটেছিল? জুমআর নামাজ কেন হয়নি?
ঘটনার পরদিন শুক্রবার (১৬ মে) দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে জুমআর নামাজ কেন হয়নি জানতে চাইলে সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে মসদিজের ঈমাম মাওলানা মোঃ বেলাল হোসাইন বলেন,“ঘটনার দিন রাত আটটা। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাস্থলে ডেকেছিলেন কথা বলার জন্য। কিন্তু সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে এশার নামাজের সময় হয়ে যাওয়ায় আমি ইউএনও স্যারকে বলে চলে আসতে উদ্যত হই। এমন সময় বিএনপি নেতা আছিম উদ্দিনের ছেলে মিল্টন আমাকে ডেকে মুখের উপর একটা ঘুষি মেওে দেয়। এ সময় ওসি সাহেব তাদের ধমক দেন যে একজন ঈমাম সাহেবের গায়ে হাত তোলো কেন? সবাই ঘটনাটা দেখেছেন। অথচ আমি কোনো মিছিল মিটিং এ যাইনি। সার্বক্ষণিক মসজিদে ছিলাম।”
মাওলানা বেলাল আরো বলেন,“তারপর রাতে এশার নাম পড়ে বাসায় যাই। ভোরে ফজরের নামাজ মসজিদে আমি একাই পড়ি। কেউ আসেনি। কারণ রাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়েছিল। সকালে আমার বেয়াইয়ের ছেলে জানায় অবস্থা ভাল না। আপনি দ্রুত এখান থেকে চলে যান। তখন আমি মসজিদের সভাপতি ও সেক্রেটারীকে জানাই। তারা খোঁজ নিয়ে আমাকে বলেন আসলেই পরিবেশ বেগতিক। চাবি কারো কাছে দিয়ে চলে যাও। আমরা তোমার নিরাপত্তা দিতে পারবো না। তখন সেক্রেটারীর কথামতো মসজিদের চাবি উজ্জল নামের একজনের কাছে চাবি দিয়ে দ্রুত চলে যাই। পরে মসজিদে তালা দেয়া, নামাজ না হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। মূলত আমার নিজের নিরাপত্তার জন্য মসজিদের সভাপতি ও সেক্রেটারীর পরামর্শে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছিল।”
সেদিন কি ঘটেছিল? জুমআর নামাজ কেন হয়নি?
উল্লেখ্য, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ডিগ্রী (অনার্স) কলেজের অভিভাবক সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম তোলা নিয়ে গত ১৫ মে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই দলের দলীয় কার্যালয় এবং ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনা উভয়পক্ষেও বেশ কয়েকজন আহত হন। জামায়াতের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভায়। এ নিয়ে পরদিন পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে দুই দল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি।
এর মধ্যে গত ১৭ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রকাশ্যে হুশিয়ার দিয়ে বলেন,‘পাবনার আটঘরিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবেন না এবং কোনো ঈমাম নামাজ পড়াতে পারবেন না।’ তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই বক্তব্যে হাবিব আরো বলেছিলেন,‘গত শুক্রবার (১৬ মে) আটঘরিয়ার দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে জামায়াতের কারণে মানুষ জুমাআর নামাজ পড়তে পারেনি। তালা দিয়ে পালিয়েছে তারা। কতটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। জামায়াত মিথ্যা কথা বলে। এদের পেছনে নামাজ হয় না।’
দু’দলের বৈরিতার কারনে জনবহুল হিসেবে অত্যন্ত শান্ত দেবোত্তর বাজারটি বর্তমানে একরকম জনশুন্য হয়ে পড়েছে। শুধু পুলিশের আনাগোনা চলছে বাজারসহ এলাকার আশেপাশে।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়ায় সরকারি রাস্তা দখল, ঘরবন্দি শিরিনা খাতুন

সান্তাহারে ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রাইভেট কারসহ দুইজন গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে গরুর গাড়ি মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে সভা

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে গাছের চারা বিতরণ

দুই সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত

পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে চটের ব্যাগ ব্যবহার করুন- কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোনাগাজীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গরু চোরসহ গ্রেফতার-০৪, চোরাই গরু উদ্ধার

সীমান্তে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এভাবেই নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ

টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি, শিক্ষার্থী নেই তবুও চলছে এমপিওভুক্ত কলেজ
