ঈদ এলেই বাড়ে শুভেচ্ছার ‘সন্ত্রাস’, নষ্ট হয় পরিবেশ ও নগরের সৌন্দর্য

ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আজহার আগমনে যেমন মুসলমানদের মাঝে আনন্দের ঢল নামে, তেমনি রাজনীতিকদের মধ্যে শুরু হয় একপ্রকার ‘শুভেচ্ছা জানানোর প্রতিযোগিতা’। শহরের প্রতিটি মোড়, দেয়াল, গলি, ওভারব্রিজ, এমনকি গাছের গায়েও দেখা যায় ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুনে ঠাঁসা নেতাদের ছবি সম্বলিত ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে প্রায় একই চিত্র। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় এই প্রচারাভিযান, যা শেষ হয় ঈদের পরেও কখনো কখনো কয়েক সপ্তাহ ধরে। এতে করে শুধু বাড়ছে ভিজ্যুয়াল দূষণই নয়, নষ্ট হচ্ছে নগরের সৌন্দর্য, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পদ।
নগরের সকল স্থাপনার দেয়ালগুলো যেন 'শুভেচ্ছার মাঠ'! বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ দলের সিনিয়র নেতাদের ছবি বড় করে দিয়ে নিজেদের ছোট ছবিসহ ব্যানার ঝুলাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এক জায়গায় একই নেতার শুভেচ্ছা বার্তা ৫-৬টি ফেস্টুনে প্রদর্শিত হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে অপচয়, অন্যদিকে নাগরিকদের বিরক্তিও তুঙ্গে।
সাভারের এক বাসিন্দা জিয়াউল হোসেন বলেন,
“আমার বাসার দেয়ালে আমরা নিজেরা রঙ করেছি, কিন্তু ঈদের আগেরদিন দেখি সেখানে এক নেতার শুভেচ্ছা পোস্টার লাগানো হয়েছে। কেউ জিজ্ঞাসাও করেনি এখানে বা এই দেয়ালে পোস্টার লাগানো যাবে কি না? এতে করে আমার দেয়ালে করা নতুন রঙ উঠে গেছে। আমাদের যেন ঈদের আনন্দটাই মাটি করে দিয়েছে।”
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এই ধরনের ব্যানার-পোস্টার পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ অধিকাংশ পোস্টারে ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিক, ফ্লেক্স ও সোলভেন্ট ভিত্তিক কেমিক্যাল, যা বৃষ্টির পানিতে রাস্তার ড্রেনে গিয়ে জমে জলাবদ্ধতার কারণও হতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সদস্য জাকির হাসান বলেন, “নেতাদের শুভেচ্ছা জানানোর অধিকার রয়েছে, কিন্তু তা পরিবেশ নষ্ট করে নয়, নাগরিকদের বিরক্ত করে নয়। যদি এমন হয়ে থাকে তবে তা এক ধরনের অবৈধ দখল বা দূষণের পর্যায়ে পড়ে। প্রশাসনের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া পাবলিক স্থানে পোস্টার বা ব্যানার লাগানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে এই আইন কার্যত প্রয়োগ হয় না বললেই চলে। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রশাসন অনেক সময় নির্বিকার থাকে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা নিয়মিত অভিযান চালাই। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যানার সরানো মানেই নেতাদের রোষানলে পড়া। তাই অনেক সময় আমাদের পক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না।”
বর্তমান ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, এসএমএস, ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানো যেমন আধুনিক, তেমনই পরিবেশবান্ধব। নাগরিকরা চান, নেতারা যদি সত্যিই জনগণের ভালো চান, তাহলে তারা যেন এমন কৌশল গ্রহণ করেন যাতে জনদুর্ভোগ না বাড়ে।
উত্তরার এক শিক্ষার্থী জারা আজমাইন বলেন, “নেতারা যদি সত্যি ঈদের শুভেচ্ছা দিতে চান, তাহলে সেটা ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় দিলে কারও সমস্যা হয় না। দেয়াল লিখন, দেয়ালে পোস্টার লাগানো, ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার মানেই হলো জনগণের প্রতি তাদের অবহেলা।”
ঈদ আনন্দের বার্তা বয়ে আনে, কিন্তু সেই বার্তা যদি হয় দৃশ্যদূষণ, পরিবেশ দূষণ এবং নাগরিক অধিকার হরণের মাধ্যম, তবে তা শুধু বর্জনীয়ই নয়, আইনত দণ্ডনীয়ও হওয়া উচিত। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উচিত নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া।
এমএসএম / এমএসএম

৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ জন্ম হবে না: শওকত হোসেন সরকার

পাটগ্রামে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন

টাঙ্গাইলে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, হাইজিন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম কালভীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

বাউফলে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে বাজারের ইজারা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ পুলিশসহ আহত ৬, গ্রেপ্তার ৩

নওগাঁয় মামলা তদন্তে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

টিএইচই র্যাঙ্কিংয়ে আবারও শীর্ষে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

আনোয়ারায় মোবাইল কোর্ট অভিযান,তিন মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

ঠাকুরগাঁওয়ে টাইফয়েড টিকা দান ক্যাম্পেইন ও সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন

রাজশাহী সড়ক-জনপথে কর্মচারীদের জনসংযোগ
