৬০ কিলোমিটার বেরুলা খালের দুই তৃতীয়াংশ দখলে: কুমিল্লার তিন উপজেলা আবারও ডোবার শঙ্কা

কুমিল্লার দক্ষিণ অংশের প্রাণ বলা হয় বেরুলা খালকে, যা একসময় ধান ও মাছে সমৃদ্ধ করে রেখেছিল মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলাকে। কিন্তু অপরিকল্পিত নির্মাণ, দখল আর দূষণে খালটি প্রায় মরে গেছে। খালের দুই তৃতীয়াংশই এখন দখলদারদের কবলে, যার ফলে কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন এবং হারিয়ে গেছে দেশি মাছের উৎস। গত বছর বর্ষার পর কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ প্রায় দুই মাস ধরে জলাবদ্ধ ছিলেন। চলতি বর্ষায়ও আবারও ওই তিন উপজেলা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী খালটির পুনঃসংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন সময় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আবেদন পেলে তারা পুনঃখননের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোহরগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর ফতেপুর এলাকা থেকে খালটি উৎপন্ন হয়েছে। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের গা ঘেঁষে খালটি ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নোয়াখালীর চৌমুহনী পর্যন্ত বিস্তৃত। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক সম্প্রসারণ করায় খালটি সংকুচিত হয়ে পড়ে, আর এই সুযোগটি কাজে লাগায় দখলকারীরা। তারা পুরো খাল দখল করে নেয়। বিগত দেড় দশকে বেরুলাসহ এ অঞ্চলের প্রায় সবকটি খাল দখল করে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পুকুর, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। একসময় বেরুলা খাল দিয়ে যাতায়াতসহ বর্ষার পানি নিষ্কাশন এবং শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদের জন্য সেচ কাজে এর পানি ব্যবহার হতো। কিন্তু খালগুলো দখল হয়ে পড়ায় বন্যার পানি সরতে পারছে না, ফলে কয়েক লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেরুলা খাল জন্মদিনের কেকে রূপ নিয়েছে, যেখানে যে যেভাবে পারছে দখল করে নিয়েছে। ফতেপুর এলাকায় খালের ওপর বাঁশের বাজার বসানো হয়েছে। ভাটিয়াভিটা ও নোয়াগাঁও এলাকায় খালের ওপর বাড়িঘর ও দোকান স্থাপন করা হয়েছে। একই অবস্থা কালিয়া চৌঁ ও উত্তরদা এলাকায়, সেখানে খালের ওপর কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্থানে দাঁড়ালে আগে এখানে খাল ছিল কিনা, তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। এদিকে, খিলা, নাথেরপেটুয়া ও বিপুলাসার বাজারের পাশের খালের ওপরও দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। কৃষ্ণপুরের সমাজকর্মী সাফায়েত মজুমদার বলেন, "বেরুলা খাল তিন উপজেলার মানুষের ধানের জমিতে সেচের প্রধান উৎস ছিল। এছাড়া এখানে প্রায় সারা বছর দেশি মাছ পাওয়া যেত এবং নৌকা যোগে মালামাল বহন করা হতো। আজ সব স্মৃতি হয়ে গেছে। খালটি পুনঃখনন জরুরি।"
খিলা এলাকার রাজনৈতিককর্মী গোলাম মাওলা বলেন, "চোখের সামনে বেরুলা খালের যৌবন দেখেছি। সেই খাল এখন নেই বললেই চলে। খাল দখল হয়ে যাওয়ায় এই এলাকার ফসলের জমি মরুভূমিতে রূপ নিচ্ছে এবং বর্ষাকালে মানুষ জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকছে।" নাথেরপেটুয়া এলাকার ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "খালটি এমনভাবে দখল হয়েছে যে কোথাও কোথাও তার অস্তিত্বও নেই।" কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, "কৃষি প্রধান দেশে প্রবহমান নদী ও খালের বিকল্প নেই। এতে সেচ ও পানি নিষ্কাশন সহজ হয়। বেরুলা খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় তিন উপজেলার কৃষকদের ফসল উৎপাদনে বেগ পেতে হচ্ছে। খালটি খননের বিষয়ে আমরা বিভিন্ন ফোরামে কথা বলছি।"
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, "সেচের প্রয়োজনে ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী-খাল খনন ও পুনঃসংস্কার করে থাকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা জনসাধারণের লিখিত আবেদন পেলে আমরা বেরুলা খাল পুনঃখননের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারি।"
এমএসএম / এমএসএম

চসিকের সিইওকে সরাতে মেয়রের ডিও লেটার

নড়াইলে গণঅধিকার পরিষদের নির্বাচন প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. আবুল হাসনাতের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগ

মুলাদীতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

কামালপাড়া যুব সংঘের আহ্বায়ক কমিটি গঠন

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর জরুরি’: কানাডা বিএনপি নেতা হুমায়ুন পাটোয়ারী

পটুয়াখালীতে কোস্ট গার্ড ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ৩৫ লক্ষাধিক টাকার মাদক ও জাল নোট জব্দ

কেরানীগঞ্জে চাষের মাগুরকে খাওয়ানো হচ্ছে মরা মুরগি, তীব্র গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

যথা সময়ে নির্বাচন, সহিংসতা প্রতিরোধে জনগণকেও ভূমিকা রাখতে হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

নুরাল পাগলা’র দরবারে পুলিশের ওপর হামলা, ৩৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় ডেকোরেশন কর্মীর লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রারে রৌমারীতে সেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত
