ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সামি


এম কে পুলক আহমেদ, বেরোবি photo এম কে পুলক আহমেদ, বেরোবি
প্রকাশিত: ১৫-৮-২০২৫ দুপুর ১২:৫০

অভাব, অনটন, কটূক্তি ও লাঞ্ছনার মতো সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়েছেন সামিয়েল সামি। ২০২৪-২৫ সেশনে লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়ে তার চোখে এখনও স্বপ্নের ঝিলিক। তবে তার স্বপ্ন পূরণের পথ কখনোই মসৃণ ছিল না।

২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর অর্থাভাবে তার পড়াশোনা থেমে যায়। কারিগরি কলেজে ভর্তি হওয়ার পরও অভাব-অনটনের কারণে আর এগোতে পারেননি। দীর্ঘ সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে দিন পার করেছেন। বাবার ইটভাটায় কাজ করেও সংসারের অভাব দূর হয়নি।

২০১৮ সালে, যখন তার বয়স অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি, তখন এক ছোট ভাইয়ের পরামর্শে তিনি আবার অষ্টম শ্রেণি থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। শুরু হয় নতুন সংগ্রাম, যেখানে সহপাঠীদের কটূক্তি, শিক্ষকদের তির্যক দৃষ্টি এবং সমাজের তির্যক মন্তব্য ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। এভাবে তিনি ২০২০ সালে আবার এসএসসি এবং ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করেন। বয়স বেশি হওয়ায় প্রায় ২৮ বছর বয়সে তাকে বিয়ে করতে হয় এবং এখন তার একটি সন্তানও রয়েছে। তবে বাবা-মায়ের সাথে তার যোগাযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি তিনি নিয়েছেন শ্বশুরবাড়িতে বসে। দিনভর কাজ, সন্তান দেখাশোনা আর অবসরে বই ছিল তার নিত্যদিনের রুটিন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ চালানো তার পক্ষে অসম্ভব ছিল। মেসের খরচ কীভাবে চালাবেন, সেই দুশ্চিন্তায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। ঠিক তখনই তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বেরোবি শাখা ছাত্রদলের নেতা ও লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জহির রায়হান। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামির মেসের থাকা-খাওয়ার ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন এবং তাকে টিউশন ম্যানেজ করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জহির রায়হান বলেন, "মেধাবী কোনো শিক্ষার্থী যেন অর্থাভাবে পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য না হয়—এটাই আমার চেষ্টা। সামির স্বপ্ন পূরণে আমি সবসময় পাশে থাকব।"

সামি এ বিষয়ে বলেন, "জহির ভাই আমার মেসের থাকা-খাওয়ার খরচ সব দিবেন বলে জানিয়েছেন এবং আমাকে টিউশনও দিবেন। এটা আমার জন্য অনেক ভালো লাগার একটি বিষয়। এই রকম ছাত্রনেতাই আমরা চেয়েছি।"

সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই জহিরের এই উদ্যোগকে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করেন, সামির এই গল্প কেবল একজনের জীবনের জয়গাথা নয়, এটি সমাজের জন্যও একটি বার্তা, যেখানে স্বপ্ন ও দৃঢ়তা থাকলে প্রতিকূলতাও হার মানে।

এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক নিয়াজ মাখদুম বলেন, "সামির মতো শিক্ষার্থীর দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পেরিয়ে উচ্চশিক্ষার অভিযাত্রা শুরু করা নিঃসন্দেহে অন্যদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তার এই যাত্রায় যারা পাশে থেকেছেন, স্বপ্নপূরণের সারথি হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন—বিশেষ করে আমাদের নিজেদের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই যারা এ মহৎ উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন—তাদের অবদান সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কারণ দিন শেষে আমাদের প্রকৃত লক্ষ্যই হলো এমন মানবিক, সহানুভূতিশীল ও সত্যিকারের মানুষ গড়ে তোলা, যারা কেবল নিজেদের জন্য নয়, সমাজের জন্যও আলো ছড়াবে।"

এমএসএম / এমএসএম

জবি ছাত্রদল নেতা খুনে ক্ষোভ, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস স্থগিত ও দুই দিনের শোক ঘোষণা

অগ্নি দুর্ঘটনা: শিক্ষক-কর্মচারীদের সতর্ক থাকতে বলল মাউশি

বর্ষা মাহিরের প্রেমের বলি জবি ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ

জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ছাত্রী আটক

'ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড' শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপহার সামগ্রী দিল জবি শিবির

মতামতবিহীন মতবিনিময় সভায় পবিপ্রবিতে ইউজিসি চেয়ারম্যান: সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাধা

‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’ স্লোগানে শিক্ষকদের পতাকা মিছিল

শাবিপ্রবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গোবিপ্রবি উপাচার্যের প্রবন্ধ উপস্থাপন

২০ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: অর্জন, সংকট ও নতুন স্বপ্নে একুশে পদার্পণ

রাকসুর ভিপি-এজিএস শিবিরের, জিএস আধিপত্য বিরোধী ঐক্যের

ভুলত্রুটি ছাড়াই ফল প্রস্তুত হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষকদের সম্মানী

২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল

এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ