ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মোহনগঞ্জ হাসপাতালে সেবা বঞ্চিত হাওরপাড়ের দুই লাখ মানুষ


মোহনগঞ্জ (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি photo মোহনগঞ্জ (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৪-৯-২০২৫ বিকাল ৫:৩৯

হাওরপাড়ের নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের ১০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এতে করে হাওরপাড়ের বসবাসরত প্রায় দুই লাখ মানুষজন সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 

নেই চিকিৎসক, নেই ল্যাব টেকনিশিয়ান ও নেই সনোলজিষ্ট। এতে করে হাসপাতালে আসা রোগীদের রোগনির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ছুটতে হচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি ডায়াগনোষ্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারে। সেখানেও চিকিৎসা না পেয়ে যেতে হচ্ছে জেলা সদরে। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা প্রত্যাশী ও দরিদ্র রোগীরা। অন্যদিকে মোহনগঞ্জ উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার জনবল কাঠামোও নেই। হাসপাতালে ১৭ জন কর্মরত ডাক্তারের রয়েছেন ৫জন ডাক্তার। এর মধ্যে ১১ বছর ধরে একজন এবং ২ বছর ধরে অপর চিকিৎসক হাসপাতালে আসছেন না।

 অন্যদিকে এক্স-রে (রেডিওগ্রাফার) টেকনিশিয়ানের পদ অনেক দিন ধরেই শূন্য। হাসপাতালে এক্স-রে হয় না। ল্যাবের টেকনোলজিস্টের পদ শূন্য। রোগীরা চাহিদা মত ওষধ পাচ্ছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দুই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য মোহনগঞ্জের ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ওষধ থাকলেও প্রয়োজন মতো ওষধ না দেওয়ায় স্টোর রুমে ওষধ নষ্ট হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে রোগীদের ওষধ না দিয়ে বাহিরে বিক্রি করে দেয়া হয়। ওই হাসপাতালটি ২০২৩ সালে একশ শয্যায় উন্নীত করা হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা প্রতিদিন বহির্বিভাগে সাড়ে তিন শতাধিক রোগী দেখছেন, ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। কিন্তু এক্স-রেসহ কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হলেই রোগীদের স্থানীয় বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে। অনেক দিন অব্যবহৃত থেকে পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের ১৯টি পদের মধ্যে ১৪টি পদই শূন্য। শূন্য পদগুলোর মধ্যে আছে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন)। সূত্রমতে, সম্প্রতি মোহনগঞ্জ হাসপাতালে কর্মরত ডাঃ সঞ্জীব দত্ত চলতি বছরের ২৩ ফেব্রæয়ারি মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ধর্মপাশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ডাঃ মোঃ মারুফ-উল-আলম তালুকদার একই বছরের ১৬ ফেব্রæয়ারি মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খালিয়াজুরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বদলী হন। 

২০১৪ সালের ১অক্টোবর  চিকিৎসক শারমিন সাত্তার এবং ২০২৩ সালের ৩জুন চিকিৎসক কাউসার জাহান ঐশী অননুমোদিত ভাবে অনুপস্থিত আছেন। একইভাবে ২০১৪ সালের জুন মাসে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে চিকিৎসক আব্দুল হালিম যোগদান করেন। তিনি যেদিন যোগদান করেন তিনিও ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেষণে চলে যান। এছাড়াও মেডিকেল অফিসার পদে চিকিৎসক মোশারফ হোসেন যোগদান করেন। তিনিও ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে চলে যান। এভাবেই ২০২৪ সালে চিকিৎসক বাকি বিল্লাহ জুলাই ফাউন্ডেশনে চলে গেলেও কাগজে-কলমে তারা মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থাকায় পদ শূন্য দেখানো হচ্ছে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স সচল আছে। অন্যটির ড্রাইভার না থাকায় অচল হয়ে আছে, আরেকটি মেরামতের অযোগ্য। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অনেক দিন থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এক্স-রে পরিচালনার জন্য টেকনিশিয়ান পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। সচল না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে এক্স-রে যন্ত্র। এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও নেই কোন সনোলজিষ্ট। তার দরুণ এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম এখানে হয় না। 

একই অবস্থা ল্যাবের। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ১টি পদ প্রায় অনেকদিন ধরে শূন্য। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটিও (ওটি) সচল নেই। চিকিৎসক না থাকায় এই হাসপাতালে কোনো অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পদটিও এক বছর ধরে খালি। ভারপ্রাপ্ত আরএমও হিসেবে চিকিৎসক জান্নাতুল নেছা চাঁদনি দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে কনসালটেন্ট, চিকিৎসক, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৬৫ টি পদ শূন্য রয়েছে। নামপ্রকাশে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান,  রোগীদের স্যালাইন ও প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষধ দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে প্রেসারের ও অন্যান্য ওষধ দেয়া হয়েছে তা স্টোর রুমেই মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না। 

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে যে চিত্র দেখা গেছে, পৌর শহরের দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর সোহেল মিয়া (৪০) পায়ের আঘাতজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন। হাসপাতালে কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই।

 চিকিৎসক এক্স-রে করাতে বলেছেন। হাসপাতালে এক্স-রে করতে না পারায় তিনি ময়মনসিংহ চলে যান। রোগীদের অভিযোগ, হাসতালের ওধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাচ্ছে না তারা। টয়লেটের অবস্থা খুবই খারাপ। দুর্গন্ধে অতিষ্ট রোগীরা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অভিযোগ করেন সব ধরনের ওষধ বাহির থেকে কিনে নিতে হয়। তারা জ্বর ও স্যালাইন ছাড়া কোন ওষধ হাসপাতাল থেকে দেয়া হয় না। মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা. মো: মোমেনুল ইসলাম জনবল সংকট নেই স্বীকার করে বলেন, চিকিৎসাসেবা আমরাই দিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন শূন্য পদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

 

এমএসএম / এমএসএম

মধুখালীতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিদেশি পিস্তল ও ম্যাগাজিন উদ্ধার

রাণীশংকৈলে ইয়াবা ও গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

লালমনিরহাটে মাদক ব্যবসায়ীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মোহনগঞ্জ হাসপাতালে সেবা বঞ্চিত হাওরপাড়ের দুই লাখ মানুষ

রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবে আল আরাফাহ গ্রুপের অনুদান প্রদান

বগুড়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ৭ জন গ্রেফতার

হাটহাজারীতে জশনে জুলুস পবিত্র ঈদ-এ- মিলাদুন্নবী পালিত

রাজশাহীতে ৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছাতকে ধর্ষন মামলার আসামী রুহুল গ্রেফতার

চিতলমারীতে বিএনপি’র স্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন

প্রবাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাটহাজারীর এক ব্যক্তির মৃত্যু

রৌমারীতে অসাধু সার ডিলারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল