ঢাকা মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫

ভয়াবহ লোডশেডিং, বেশিরভাগ বিদ্যুৎ ব্যয় হচ্ছে ব্যাটারি চার্জে, দুর্বিষহ জনজীবন

আশুলিয়ায় যাত্রীর চেয়ে অটোরিকশা বেশি


সফি সুমন, আশুলিয়া photo সফি সুমন, আশুলিয়া
প্রকাশিত: ৫-৯-২০২৫ বিকাল ৫:৫১

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় প্রতিদিন লাখো মানুষ কর্মস্থলে যাতায়াত করেন। কিন্তু এ যাতায়াত আজ পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের প্রতীকে। আশুলিয়ার প্রধান সড়কগুলোতে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা, ইজিবাইক ও অবৈধ থ্রি-হুইলারের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরে আশুলিয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৫-২০ হাজারের মতো ব্যাটারি চালিত রিকশা রাস্তায় নেমেছে। এদের কোনোটার নাই রেজিস্ট্রেশন, নাই কোনো বৈধ লাইসেন্স, নাই কোনো রাস্তায় চলাচলের ছাড়পত্র। ফলে এগুলোর উপর কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বা তদারকিও নেই।

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এমনিতেই যানজট ও জনবসতিপূর্ণ। তার মধ্যে “মরার উপর খাঁড়ার ঘা” হিসেবে সব সড়ক, মহাসড়ক ও উপসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা। এসব যানবাহন নামক ‘বিষফোঁড়া’ বিশৃঙ্খলভাবে রাস্তা দখল করে চলায় প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানীসহ মারাত্মক সব দুর্ঘটনা। ঝুঁকি বাড়াচ্ছে জীবনমান ও আগামী ভবিষ্যতের। যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, শিল্প কারখানার পণ্যবাহী লড়ি এবং ব্যক্তিগত গাড়িগুলোও অটোরিকশার অনিয়ন্ত্রিত গতি ও প্রতিযোগিতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। এসব অটোরিকশা মহাসড়ক ও উপসড়কে যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী তোলে, রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। বিশেষ করে বাইপাইল, রপ্তানি, শ্রীপুর, বলিভদ্র, জিরানি, বাড়ইপাড়া, জামগড়া, নিশ্চিন্তপুর, ফতেপুর, জিরাবো, চারাবাগ, খাগান, বিশমাইল, আশুলিয়া বাজার, নবীনগর ও পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীকে।

অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত বিদ্যুতের অপচয় ও লোডশেডিংসহ বৈদ্যুতিক নানা সংকট যেন আশুলিয়াবাসীর নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। অটো রিকশার চার্জিংয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। এসকল যানবাহনের জন্য আশুলিয়ার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় স্থায়ী; অস্থায়ী চার্জিং স্টেশন বা গ্যারেজ গড়ে উঠেছে। ফলে স্থানীয়রা বলছেন, আশুলিয়া শিল্প এলাকা হওয়ায় আগে থেকেই অত্র এলাকায় বিদ্যুৎ সংকট তীব্রতর, এর উপর অতিরিক্ত ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জিং এর কারণে এখন ব্যাপক লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে। এতে কারখানার উৎপাদনে যেমন ব্যাহত হচ্ছে, সাধারণ মানুষও আছেন চরম দুর্ভোগে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ আক্তারুজ্জামান লস্কর বলেন, “অটো রিকশা যদি অবৈধ হতো, তাহলে আমরা তো বিদ্যুৎ সংযোগই দিতাম না। আশুলিয়ায় কোথায় কতগুলো অটোরিকশা চার্জিং স্টেশন বা গ্যারেজ আছে তার সঠিক হিসাব আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা সরাসরি উপর থেকে নির্ধারিত দামে বৈধ বিদ্যুৎ লাইন দিয়েই এসব চার্জিং স্টেশন পরিচালনার অনুমতি দিচ্ছি। সে ক্ষেত্রে অটোরিকশা কীভাবে অবৈধ হতে পারে? তবে মহাসড়কে এসব রিকশার চলাচলের বিষয়টি আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না, সেটা দেখার দায়িত্ব অন্য সংস্থার।”

আশুলিয়া ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা এখন আশুলিয়ার সড়কে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালকরা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞ। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে এবং সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি, তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন নীতিগত সিদ্ধান্ত। সরকারিভাবে নিবন্ধন ও রুট নির্ধারণ হলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে, দুর্ঘটনাও কমবে। আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে হয়রানি করা নয়, বরং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা।”

জিরাবো এলাকার অটো রিকশা চালক জহির উদ্দিন বলেন, “আমাদেরও বাঁচতে হবে। গার্মেন্টস বা অন্য কোনোখানে কাজ পাই না, তাই অটো চালিয়ে সংসার চালাই। যাত্রীদের ভোগান্তি আমরাও বুঝি, কিন্তু এটা আমাদের জীবিকার একমাত্র পথ। সরকার যদি বিকল্প কাজ বা লাইসেন্স দিয়ে বৈধতার ব্যবস্থা করতো, তাহলে হয়তো সমস্যা কিছুটা কমতো।”

শহর পরিকল্পনাবিদ ও আইনজীবীদের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা এর আইনগত অবস্থান কিছুটা জটিল ও অনির্দিষ্ট। বর্তমানে পরিপূর্ণ কোনো আইন বা কার্যকর বিধিত কাঠামো এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি বা প্রযোজ্য কোনো স্বীকৃত আইন নেই। বরং হাইকোর্ট একাধিকবার ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সেহেতু অটোরিকশা যে অবৈধ যানবাহনের তালিকার একটি, তা অনস্বীকার্য। অটোরিকশার কারণে একদিকে যেমন সড়ক নিরাপত্তা হুমকির মুখে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতে চাপ বেড়ে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। তারা মনে করেন, কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়া বোধহয় খুব শীগ্রই এই সংকট থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে না।

আশুলিয়ায় ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার একদিকে যেমন ট্রাফিক ও সড়ক ব্যবস্থাকে অচল করে দিচ্ছে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উপরও তৈরি করছে অস্বাভাবিক চাপ। বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদার কারণে সাধারণ গ্রাহকরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবিলম্বে অটোরিকশা ও চার্জিং ব্যবস্থাকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় না আনলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

এমএসএম / এমএসএম

মনোনয়ন বঞ্চিত আসলাম চৌধুরীর  সমর্থকদের মহাসড়ক-রেল অবরোধ

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এস এম রেজাউল ইসলাম রেজু

শার্শা আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন-তৃপ্তি

মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিব

বিএনপির মাদারীপুর এক ও তিন আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা

গাইবান্ধার পাঁচ টি আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত

কুমিল্লায় বিএনপি'র ৯ টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীতা ঘোষণা

চাঁদপুর জেলার বিএনপির সম্ভাব্য পাঁচ প্রার্থী

শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম

প্রথম বারের মতো ভোলা -৪ চরফ্যাশন মনপুরা আসেন মনোনয়ন পেলেন নূরুল ইসলাম নয়ন

মেহেরপুর বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাসুদ অরুণ-আমজাদ হোসন

মৌলভীবাজার-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মিঠু

টাঙ্গাইল- ৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী রবিউল আওয়াল লাভলু মনোনীত হয়েছেন