ঘোড়াঘাটে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী শিক্ষিকা রেহেনা আক্তার কর্তৃক সাবেক স্বামীকে হয়রানির অভিযোগ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার জালালপুর এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী রেহেনা আক্তার কর্তৃক মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্প্রতি জাতীয় ও টাঙ্গাইল জেলার কয়েকটি স্থানীয় পত্রপত্রিকায় একতরফাভাবে সংবাদ প্রকাশ করা সহ বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে জাহাঙ্গীর আলম ঘোড়াঘাট প্রেস ক্লাব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকা এবং তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত সত্য সংবাদ তুলে ধরার জন্য অনুরোধ জানান।
জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, বৈবাহিক জীবনে আমি আমার চাকুরীর সুবাদে আমার সাবেক কর্মস্থল ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় অবস্থানকালে গোপনে কক্সবাজার, সাজেক, কুয়াকাটা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে একাধিক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে ভ্রমণ করেন রেহেনা। এছাড়া ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ছুটি নেওয়া, গর্ভপাত ও ব্রেস্ট সার্জারির তথ্য গোপন করারও অভিযোগ করেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম আরও দাবি করেন, আমি তার মোবাইল ফোনের জিমেইল আইডি থেকে বিভিন্ন এলাকার ভ্রমণের কিছু ছবির স্ক্রিনশট দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে আত্মহত্যার হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া রেহেনা আক্তার তার প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়েই জাহাঙ্গীরকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং পরে প্রথম স্বামীর নামে একাধিক মামলা চালিয়ে যান। বিষয়টি জানার পর ২৫ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে জাহাঙ্গীর তাকে তালাক দেন। এরপর থেকেই রেহেনা আক্তার সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও অনলাইন মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে একতরফাভাবে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আসছেন বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম একজন তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিজীবী। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত। অপরদিকে, তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী রেহেনা আক্তার টাঙ্গাইল জেলার খাসকাতুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর রেজিস্ট্রি কাবিনমূলে তাদের বিয়ে হয়।
জাহাঙ্গীরের অভিযোগ ও আদালতের মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রেহেনা আক্তার পূর্বের স্বামীকে তালাক না দিয়েই জাহাঙ্গীরের সাথে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হয়ে পূর্বের স্বামীর সাথে মামলা চালিয়ে ভরণপোষণ আদায় করার পর জাহাঙ্গীরের সাথে বিবাহ আইনগতভাবে পাকাপোক্ত করার জন্য সুকৌশলে জাহাঙ্গীরের নিকট থেকে আবারও রেজিস্ট্রি কাবিন করে নেয়।
এছাড়া, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগের খোঁজ খবর ও অব্যাহতি পত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, মূলত জাহাঙ্গীরকে পেশাগতভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে বারবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ওসমানপুর বাজারে চায়ের দোকানদার কিনা মিয়ার মেয়ে সুমিকে নিয়ে গত ২২ তারিখে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় জাহাঙ্গীরকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয় যে, সুমি জাহাঙ্গীরের প্রতারণার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টির সত্যতা জানতে ওই মেয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সুমির বাবা কিনা মিয়া সাংবাদিকদের জানান, পত্রিকায় যেটা প্রকাশ করা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা আমার মৃত মেয়েকে নিয়ে এমন মিথ্যাচার ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার পরিবারকে হেয় করার কাজ করছে, প্রয়োজনে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা বা মানহানির মামলা করবো।
অপরদিকে, একই সংবাদে জাহাঙ্গীরকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য দাবি করা হয়েছে, সেটিও অসত্য। জাহাঙ্গীর কখনও আওয়ামী ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন। এছাড়া সদস্যপদের যে ফটোকপি দেখানো হয়েছে তা ঘষামাজা করে এডিট করা হয়েছে। এছাড়া প্রকাশিত সংবাদে সরকারি ঘর দখলের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের একটি অনুসন্ধানী দল তৎকালীন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরকে আমি স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। সে কখনও ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। এটা মিথ্যা তথ্য।
অপরদিকে, উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা সদস্য ও ৪নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, তার জানা মতে সে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে কখনও জড়িত ছিল না।
এ বিষয়গুলো সহকারী শিক্ষক রেহেনা আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর যদি তার বিবাহের কথা গোপন রাখতে পারেন তাহলে আমি গোপন রাখলে সমস্যা কোথায়। তাছাড়া জাহাঙ্গীর ৪টি বিয়ে করেছে তার কাবিননামা আমার কাছে আছে। আমার বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর বিভিন্ন জায়গায় গোপনে ভ্রমণ সহ যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়।
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “রেহেনা আক্তার তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের একটি অভিযোগ করেছিলেন। আমি উভয়কে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। সংসার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ছোটখাটো বিষয়গুলোতে কিছু ছাড় দিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু তিনি এতে সম্মত না হয়ে আলাদা থাকতে চাইলে আমি তাকে তার নিজ জেলা টাঙ্গাইলে বদলির পরামর্শ দিয়েছি, যাতে তিনি নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন।”
এছাড়া জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর দখলের অভিযোগটি সত্য নয়।
উল্লেখ্য, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে স্থানীয় একাধিক সাংবাদিকের অনুসন্ধান, রেহেনা আক্তারের বক্তব্য, জাহাঙ্গীরের উপস্থাপিত প্রমাণ, যেমন- তালাকনামা, কাবিননামা, আদালতের নথি, সরকারি দপ্তরের অব্যাহতির কপি ও ভ্রমণের ছবি যাচাই করে দেখা গেছে, অনেক অভিযোগেরই ভিত্তি নেই এবং এগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতীয়মান।
এমএসএম / এমএসএম

আশুলিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ ৫ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক

সিংড়ায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দোকান দখলের অভিযোগ

নাগেশ্বরী অগ্রহণী ব্যাংকে গ্রাহক হয়রানী চরমে

ঝিনাইদহে রোপা আমনে মাজরা পোকার আক্রমণ

কুমিল্লায় ডিএক্স নিউ এনার্জি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের যাত্রা শুরু

সাভারে ক্লুলেস রিমন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

পঞ্চগড়ে সাংবাদিককে সন্ত্রাসী বললেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট

কাশিয়ানীতে বাস চাপায় প্রাণ গেল ভ্যান চালকের

মায়ানমার থেকে পণ্যের বিনিময়ে মাদক পাচারকালকে ৩ জন আটক

পূর্বধলায় জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

গোদাগাড়ীতে ৩০০ গ্রাম হেরোইনসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

ভূরুঙ্গামারীতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ডাক্তার মোঃ ইউনুস আলী
